নিউজ ডেক্স : এশিয়া কাপের গত তিন আসরের দুইবারের ফাইনালিস্ট বাংলাদেশ। কিন্তু দুবারই হতাশ হতে হয়েছে নিজেদের মাঠে। প্রথমবার পাকিস্তানের বিপক্ষে একেবারে তীরে এসে তরী ডুবিয়েছে বাংলাদেশ। আর গত আসরে ভারতের কাছে হেরেছিল টাইগাররা। এবার আরো একবার সুযোগ এসেছে এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলার। তবে সে জন্য আর একটি বাধা পার করতে হবে মাশরাফিদের। আর সে বাধাটির নাম পাকিস্তান। এশিয়া কাপের এবারের আসরে সেমিফাইনালের কোন নিয়ম নেই। কিন্তু নিয়ম না থাকলেও বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের ম্যাচটি পরিণত হয়েছে অলিখিত এক সেমিফাইনালে। যেখানে এই ম্যাচটি জিতলে বাংলাদেশ পেয়ে যাবে ফাইনালের টিকিট আর সে ক্ষেত্রে আবার ভারতের সামনে পড়বে বাংলাদেশ। অপরদিকে একই সুযোগ থাকছে পাকিস্তানের জন্যও। তারাও যদি জিতে তাহলে ফাইনাল খেলবে তারা। কাজেই অলিখিত এক সেমি ফাইনালে খেলতে আজ আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে নামবে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান।
এবারের এশিয়া কাপে দু’দলই একই সমান্তরালে দাঁড়িয়ে। দু’দলই শুরু করেছিল জয় দিয়ে। বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল শ্রীলংকাকে হারিয়ে। আর পাকিস্তানের শুরুটা হয়েছিল হংকংকে হারিয়ে। তবে মাঝখানে পাকিস্তান দুবার হেরেছে ভারতের কাছে। আর বাংলাদেশ হেরেছে আফগানিস্তান এবং ভারতের কাছে। তবে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান দু দলই ফাইনালের সম্ভাবনা জিইয়ে রেখেছে আফগানিস্তানকে হারিয়ে। যেখানে দুদলই এই দলটির বিপক্ষে জিতেছে একেবারে শেষ ওভারে গিয়ে। তাই আজ দু দলের সামনেই এগিয়ে যাওয়ার পালা। তবে সে জন্য জিততে হবে দু দলকেই। কিন্তু ক্রিকেটে সে সুযোগ নেই। তাই জিতবে একটি দল। আর সে দল কোনটি সেটা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে আজ বাংলাদেশ সময় মধ্যরাত পর্যন্ত।
তামিম ইকবালকে হারিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন অনেকটা খুড়িয়ে চলার মত। তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের পাশাপাশি আগের রাতে দুবাই উড়ে যাওয়া ইমরুল কায়েস করেছেন দুর্দান্ত ব্যাটিং। তবে দলের টপ অর্ডারের দুর্বলতাটা কাটছেনা মোটেও। শুরুটা মোটেও ভাল হচ্ছেনা। টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় শুরুতেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আজকের ম্যাচে সে পরীক্ষাটা আরো কঠিন হবে। কারণ পাকিস্তান দলে রয়েছে মোহাম্মদ আমির কিংবা হাসান আলির মত বোলাররা। সে সাথে সাদাব খান কিংবা অভিজ্ঞ শোয়েব মালিকের মত ঘূর্ণি বোলারদেরও মোকাবেলা করতে হবে টাইগার ব্যাটসম্যানদের। তাই লিটন-ইমরুল-শান্ত কিংবা মুশফিক-সাকিবদের জন্য কাজটা কঠিন হয়ে যাবে। তবে সেটা কতটা উৎরাতে পারবে সেটা সময় বলে দেবে।
অপরদিকে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে পরপর দুই ম্যাচে হেরে একেবারেই কোনঠাসা পাকিস্তান। ফাইনালে যেতে হলে আজকের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের কোন বিকল্প নেই পাকিস্তানের। তবে বিশ্ব ক্রিকেটে আনপ্রেডিক্টেবল এক দল হিসেবে পরিচিত পাকিস্তানকে নিয়ে আগাম কিছু বলার কোন সুযোগ নেই। কারণ দলটি কখন কি করে বসে তা তারা নিজেরাও জানেনা। আর সে জন্যই বাংলাদেশকে একটু বেশি সতর্ক থাকতে হবে। দলটির শুরুর দিকের ব্যাটসম্যানরা বেশ কার্যকর। আর মাঝখানে অভিজ্ঞ শোয়েব মালিকের নেতৃত্বে বেশ ভাল ব্যাটিং লাইন পাকিস্তানের। তাই বাংলাদেশের বোলারদেরও পরীক্ষাটা একটু কঠিন দিতে হবে। অবশ্য এশিয়া কাপের গত আসরে এই পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল বাংলাদেশ। তাছাড়া দু’দলের সর্বশেষ দ্বিপাক্ষিক মোকাবেলায় পাকিস্তানকে হোয়াইট ওয়াশের স্বাদ দিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে ক্রিকেট মাঠে অতীত সুখ স্মৃতি তেমন কোন কাজে আসেনা। যদি না নির্ধারিত দিনে ভাল খেলতে না পারে। তাই বাংলাদেশকেও আজ নিজেদের সেরাটা খেলতে হবে। অবশ্য বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা মুখিয়ে রয়েছেন নিজেদের সেরাটা দিতে। আগের ম্যাচে মোস্তাফিজের ম্যাজিক ওভারে আফগানদের হারিয়েছিল বাংলাদেশ। আজ পাকিস্তানের বিপক্ষেও তেমনই ম্যাজিক দেখাতে চান মোস্তাফিজ। তবে ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বটা একটু বেশি নিতে হবে। তাও আবার দলের টপ অর্ডারকে। কারণ ভাল একটা শুরু এনে দিতে পারলে দলের ইনিংস বড় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি। আর সে ক্ষেত্রে বোলারার একটা শক্তি নিয়ে খেলতে পারে। আজ তাই ব্যাটে-বলে সমান দাপট দেখাতে চায় বাংলাদেশ। আর না দেখানোর যে কোন সুযোগ নেই। কারণ এই ম্যাচে হারা মানে এশিয়া কাপকে বিদায় জানিয়ে দেশের বিমান ধরা। আর জিততে পারলে অন্তত আরেকটি সুযোগ পাবে বাংলাদেশ নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের। হোকনা সামনে তখন ভারত।