Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ইউক্রেনের বিদ্যুৎকেন্দ্রে রাশিয়ার হামলা, ৯০ লাখ মানুষ বিদ্যুৎহীন

ইউক্রেনের বিদ্যুৎকেন্দ্রে রাশিয়ার হামলা, ৯০ লাখ মানুষ বিদ্যুৎহীন

রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর খারকিভের একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেক্স : ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর পাল্টা আক্রমণের প্রতিশোধ নিতে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন বেসামরিক অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। বেসামরিক এসব অবকাঠামোর মধ্যে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রও রয়েছে। এতে করে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিশাল এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।

অন্যদিকে রুশ হামলার কারণে বিদ্যুৎহীন মানুষের সংখ্যা ৯০ লাখ। দিন দু’য়েক আগে ইউক্রেনের পাল্টা হামলায় খারকিভ অঞ্চলে নিজের প্রধান ঘাঁটি পরিত্যাগ করতে বাধ্য হয় রাশিয়া। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

টানা সাড়ে ছয় মাস ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। রুশ এই আগ্রাসনে ইউক্রেন শুরুতে কোণঠাসা অবস্থায় থাকলেও দেশটি এখন পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে। এতে করে সফলতার দেখাও পাচ্ছে দেশটি।

ইউক্রেনীয় বাহিনীর তীব্র হামলার মুখে উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনের খারকিভ প্রদেশের ইজিয়ামে নিজেদের প্রধান ঘাঁটি পরিত্যাগ করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের এই অঞ্চলটি চলমান যুদ্ধের প্রধান ফ্রন্ট লাইনগুলোর একটি।

এরই প্রতিশোধ নিতে রোববার খারকিভ অঞ্চলে ব্যাপক হামলা চালায় রুশ সামরিক বাহিনী। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়ার প্রতিশোধমূলক হামলার লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে খারকিভের পানি ব্যবস্থাপনা অবকাঠামো এবং একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে করে সেখানে ব্যাপকভাবে ব্ল্যাকআউট সৃষ্টি হয়।

এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার তীব্র সমালোচনা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের প্রতিশোধ নিতে পূর্ব ইউক্রেনজুড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে ‘লোকদের আলো ও তাপ থেকে বঞ্চিত করাই’ রাশিয়ার লক্ষ্য।

রোববার রাতে টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘কোনো সামরিক স্থাপনায় হামলা করা হয়নি। রুশ সেনাদের লক্ষ্য হলো- মানুষকে আলো ও তাপ থেকে বঞ্চিত করা।’

বিবিসি বলছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রে রুশ সামরিক বাহিনীর হামলা এবং এর জেরে সৃষ্ট ব্ল্যাকআউটের কারণে খারকিভ ও দোনেতস্ক-সহ পূর্বাঞ্চলের প্রায় ৯০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

মূলত চলতি সপ্তাহের শুরুতে পূর্বাঞ্চলে রুশ দখলকৃত ভূখণ্ডে ইউক্রেনের তীব্র পাল্টা হামলায় কিয়েভের সেনারা ৩ হাজার বর্গ কিমি (১১৫৮ বর্গ মাইল) এরও বেশি এলাকা পুনরুদ্ধার করেছে বলে দাবি করার পর রাশিয়ার এই হামলার ঘটনা ঘটল। যদিও ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারের বিষয়ে ইউক্রেনের এই দাবি বিবিসি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।

খারকিভের মেয়র ইহোর তেরেখভ বলেছেন, বেসামরিক অবকাঠামোতে রাশিয়ার হামলার কারণে তার শহরের বেশিরভাগ অংশ বিদ্যুৎ বা পানি-বিহীন অবস্থায় রয়েছে। তিনি এটিকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক সাফল্যের প্রতিশোধ নেওয়ার একটি জঘন্য এবং নিন্দনীয় প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করেছেন।

এর আগে গত শনিবার ইউক্রেনের খারকিভ প্রদেশের ইজিয়ামে রুশ বাহিনীর আকস্মিক পতন হয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভিযান শুরুর পর মার্চ মাসে রাজধানী কিয়েভ থেকে নিজেদের সৈন্যদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিল রাশিয়া। এরপর থেকে শনিবার ইজিয়ামে রুশ বাহিনীর দ্রুত পতনই ছিল মস্কোর সবচেয়ে খারাপ পরাজয়।

চলমান সামরিক অভিযানে ইজিয়ামকে লজিস্টিক বেস হিসাবে ব্যবহার করছিল রাশিয়ান বাহিনী। এখান থেকেই রুশ সেনারা দোনেতস্ক এবং লুহানস্ক নিয়ে গঠিত ডনবাস অঞ্চলে কয়েক মাস ধরে আক্রমণ পরিচালনা করে আসছিল। মূলত এই ঘাঁটি হারানোর পরই রোববার সেখানে প্রতিশোধমূলক হামলা চালায় রাশিয়ার সামরিক বাহিনী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!