- Lohagaranews24 - https://lohagaranews24.com -

পিইসি পরীক্ষা নিয়ে নানা ‘সমালোচনা’ সত্ত্বেও হচ্ছে পৃথক বোর্ড

নিউজ ডেক্স : পঞ্চম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষার (পিইসি) আয়োজন নিয়ে আছে বিতর্ক, আছে অভিভাবকদের ক্ষোভও। এসব সত্ত্বেও পরীক্ষা হচ্ছে, এবার যাবতীয় প্রক্রিয়া একই ছাতার নিচে আনতে পৃথক ‘প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড’ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এতদিন যা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছে।

পরীক্ষার মাধ্যমে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ বাড়ছে, এ বিষয়ে নতুন করে ভাববার পরামর্শও দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদিকে শিক্ষাবিদরা বলছেন, পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের ওপর শুধু মানসিক চাপ তৈরি করছে না, তাদের মধ্যে ভীতির সঞ্চারও ঘটাচ্ছে। সৃজনশীল মেধা বিকাশের পরিবর্তে তাদের অসুস্থ প্রতিযোগিতার মধ্যে নিক্ষেপ করা হচ্ছে। পিইসি পরীক্ষা রাখা উচিত কি-না, তা নিয়ে যেখানে নতুন করে ভাবা দরকার; সেখানে আইনের মাধ্যমে পিইসি পরীক্ষা আয়োজনের জন্য পৃথক বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া জাতীয় শিক্ষানীতির পরিপন্থী।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষার্থীদের জন্য ‘প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড’ স্থাপন হচ্ছে। সাধারণ বোর্ডগুলোর আলোকে ছয়টি ইউনিটে নতুন এ বোর্ড গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বোর্ড পরিচালনায় ‘বোর্ড অব অর্ডিন্যান্স’ বা আইনের খসড়া তৈরি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। এটি মূল্যায়নে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে বোর্ডটির কার্যক্রম শুরু হতে পারে।

jagonews24

সারাদেশে ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর ৩০ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। শিক্ষা বোর্ড ছাড়া এত অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থীর পরীক্ষার আয়োজন এবং ফল প্রকাশের চাপ সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন অধিদফতরের কর্মকর্তারা। পরীক্ষা সামাল দিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের অন্য সব কাজ স্থবির হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় ২০২২-২৩ অথবা ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড গঠন করতে চায় মন্ত্রণালয়। এর আলোকে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের জন্য বোর্ড গঠনের একটি খসড়া আইন তৈরি করা হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ডের খসড়া আইনে দেখা গেছে, সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের আলোকে প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ডের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। নতুন এ শিক্ষা বোর্ডের কার্যক্রম পরিচালনায় প্রধান ছয়টি ইউনিট রাখা হয়েছে। এর মধ্যে চেয়ারম্যান দফতর, সচিব দফতর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাখা, বিদ্যালয় পরিচালনা শাখা, সিস্টেম অ্যানালিস্ট ও মনিটরিং সেল এবং হিসাব শাখা রয়েছে। এসব বিভাগে মোট ১২ কর্মকর্তার পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। বোর্ডের সর্বোপরি ক্ষমতা চেয়ারম্যানকে দেয়া হয়েছে। সচিব প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অধীনে পরীক্ষা আয়োজন, খাতা মূল্যায়ন এবং ফল প্রকাশের দায়িত্ব থাকছে।

জানতে চাইলে ডিপিই’র সাবেক মহাপরিচালক ও খসড়া আইন প্রণয়ন পরামর্শক শ্যামল কান্তি ঘোষ বলেন, সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের আলোকে প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ডের আইন তৈরি করা হয়েছে। এ বোর্ডের মাধ্যমে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন, সমাপনী পরীক্ষার আয়োজন ও ফল প্রকাশ এবং বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনসহ নানা কার্যক্রম পরিচালিত হবে। বর্তমানে এসব কাজ অধিদফতর থেকে করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ইতোমধ্যে নতুন এ বোর্ড পরিচালনায় খসড়া আইন তৈরি হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এটা পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে মূল্যায়ন শেষে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসতে পারে।

pec-02.jpg

ডিপিই সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ থাকলেও পরীক্ষা বাতিল হচ্ছে না। কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষার পাশাপাশি যাবতীয় প্রক্রিয়া এক ছাতার নিচে আনার চেষ্টা চলছে। এরই অংশ হিসেবে পৃথক ‘প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড’ গঠন এবং এটা কীভাবে কার্যকর করা যায় তা নিয়ে কাজ করছেন কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা বাতিলের পরিকল্পনা আপাতত নেই। এ পরীক্ষা আরও যুগোপযোগী করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এজন্য একটি পৃথক শিক্ষা বোর্ড তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। বোর্ড তৈরি হয়ে গেলে এর মাধ্যমে প্রতি বছর সমাপনী পরীক্ষার আয়োজন ও ফল প্রকাশ করা হবে।

জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড গঠনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে সুপারিশ আসার পরই খসড়া আইন তৈরির কাজ শুরু হয়। সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ৩০ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীর পরীক্ষার জন্য কোনো বোর্ড না থাকা শিক্ষার মানের জন্য সুখকর নয়। সেজন্য দ্রুত বিষয়টিতে নজর দেয়া দরকার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি না থাকায় জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না বলেও সংসদীয় কমিটি মত দেয়। কমিটি শিক্ষার মান বাড়াতে মন্ত্রণালয়কে তাদের কাজে গতিশীল হওয়ারও সুপারিশ করে। এর পরপরই অধিদফতর শিক্ষা বোর্ড গঠনে একটি প্রস্তাব পাঠালে নীতিগতভাবে অনুমোদন দেয় মন্ত্রণালয়।

পৃথক শিক্ষা বোর্ড গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেন, প্রতি বছর পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষার আয়োজন করতে হয়। কিন্তু এ সংক্রান্ত কোনো বোর্ড নেই। তাই প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড গঠনে আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে এটি মূল্যায়নে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

pec-02.jpg

তিনি আরও বলেন, চূড়ান্ত অনুমোদনের পর ঢাকার মধ্যে সুবিধা মতো একটি স্থানে শিক্ষা বোর্ডের কার্যক্রম শুরু হবে। বোর্ডের মাধ্যমে প্রতি বছর পঞ্চম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন, পরীক্ষার আয়োজন, ফল প্রকাশসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। শিক্ষা বোর্ড না থাকায় বর্তমানে সবকিছু অধিদফতরের অধীন পরিচালিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, ‘আমরা আইনের খসড়া তৈরির জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে বলেছিলাম, তারা সেটি পাঠিয়েছে। বর্তমানে তা মূল্যায়ন এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য কাজ শেষে দ্রুত ক্যাবিনেটে (মন্ত্রিপরিষদ) পাঠাব। ক্যাবিনেটের অনুমোদনের পর আইন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনসাপেক্ষে আগামী দুই বছরের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য আলাদা বোর্ডের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে।’

এদিকে ‘ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়ে তাদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করা হচ্ছে’— এমন মন্তব্য করে প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড স্থাপনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য শিক্ষাবিদ অধ্যাপক একরামুল হক। তিনি বলেন, ‘ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের এ স্তরে পরীক্ষা নিয়ে তাদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করা হচ্ছে। মূলত এটির মাধ্যমে নোট-গাইড বই বিক্রি এবং শিক্ষার ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরীক্ষাটি পুরোদমে বাণিজ্যিকীকরণ হয়ে গেছে। দ্রুত পঞ্চম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা বাতিল করা প্রয়োজন। সেখানে পরীক্ষা নেয়ার জন্য শিক্ষা বোর্ড স্থাপন অযৌক্তিক বলে মনে করি।’

‘শিক্ষানীতির দোহাই দিয়ে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষার আয়োজন এবং সার্টিফিকেট বিতরণের কথা বলা হচ্ছে। প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার আয়োজন করা হচ্ছে। একসময় পঞ্চম শ্রেণিতে পাস করা ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হতো। শতভাগ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করতে বলা হয়েছিল শিক্ষানীতিতে। এজন্য উপজেলাভিত্তিক অভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা গ্রহণ এবং পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বৃত্তি প্রদান করতে বলা হয়েছিল। কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নেয়াটা শিক্ষানীতির বহির্ভূত’— বলেন এ শিক্ষাবিদ।

‘পরীক্ষা নির্ভর শিক্ষাই জাতির সর্বনাশ ডেকে আনছে’ উল্লেখ করে প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক বলেন, ‘শিক্ষার প্রায়োগিক ক্ষেত্র সংকুচিত করা হয়েছে নির্মমভাবে। শিক্ষার বাণিজ্য এবং বাণিজ্যিক শিক্ষা মানুষের মুক্তি দিতে পারে না। করোনা মহামারি তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। আমরা বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারিনি। পরীক্ষানির্ভর শিক্ষার কারণেই আমাদের থমকে যেতে হয়েছে। চাইলে অনেক পরীক্ষাই স্থায়ীভাবে বাতিল করা সম্ভব।’

জানতে চাইলে গণশিক্ষা অভিযানের পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা পরীক্ষাকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। এতে কোচিং বাণিজ্য, গাইড বাণিজ্য বাড়ার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ওপর অধিক চাপ তৈরি হচ্ছে। এটি বন্ধ করতে হলে জাতীয় শিক্ষানীতি- ২০১০ এর আলোকে সমন্বিত শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে।

pec-02.jpg

তার মতে, ‘যেখানে পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের চাপ তৈরি করছে, এটি রাখা উচিত কি-না, তা নতুন করে ভাবা দরকার বলে মনে করেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী; সেখানে তড়িঘড়ি করে একটি আইন তৈরি করে প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া জাতীয় শিক্ষানীতির অন্তরায়। এভাবে শিক্ষার মান বাড়ানো সম্ভব নয়।’

কেন্দ্রীয়ভাবে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠানের বিষয়ে অভিভাবকদের অসন্তোষ এবং শিক্ষাবিদদের পরীক্ষা বাতিলের অভিমত প্রসঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, ‘পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী-ইবতেদায়ী পরীক্ষা বাতিলের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বরং সরকারি সিদ্ধান্তে এ পরীক্ষা নিয়মিত আয়োজন করতে অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডের মতো প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। বোর্ডের মাধ্যমে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষার আয়োজন ও ফল প্রকাশসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।’  জাগো নিউজ

বিনামূল্যে বাংলাদেশকে ভ্যাকসিনের লক্ষাধিক ডোজ দেবে চীন

Posted By admin On In দেশ-বিদেশের সংবাদ,ব্রেকিং নিউজ,শীর্ষ সংবাদ | No Comments

আন্তর্জাতিক ডেক্স : করোনাভাইরাস মহামারি বিশ্বমঞ্চে চীনের আধিপত্য বিস্তার ও শত্রুকে কাছে টানার অনন্য এক উপায় হিসেবে হাজির হয়েছে। এশিয়া, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশগুলোকে আশ্বস্ত করে চীন বলেছে, বেইজিংয়ের চারটি ভ্যাকসিন শেষ ধাপের ট্রায়ালে পৌঁছেছে। এর যেকোনও একটি ভ্যাকসিন নিরাপদ এবং কার্যকর প্রমাণিত হলে সবাই সেগুলো পাবে।

এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে এক লাখের বেশি ডোজ ভ্যাকসিন বিনামূল্যে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে চীন। শুক্রবার মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে ভ্যাকসিন নিয়ে বিশ্বমঞ্চে চীনের নেতৃত্বের আসনে যাওয়ার অভিলাষ ও নানামুখী তৎপরতার বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, চিরবৈরী প্রতিবেশি ফিলিপাইন দ্রুত চীনের করোনা ভ্যাকসিন পাবে। ভ্যাকসিন কেনার জন্য চীনের কাছ থেকে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ পাবে লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ। চীনের একটি কোম্পানির কাছ থেকে বাংলাদেশ পাবে এক লাখের বেশি ডোজ।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) নির্বাহী পরিচালক ডা. জন ডি. ক্লেমেন্স নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, বেইজিংভিত্তিক ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সিনোভ্যাক বায়োটেক বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় ৪ হাজার ২০০ স্বাস্থ্যকর্মীর শরীরে তাদের ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চালাবে। চীনা এই কোম্পানি বাংলাদেশকে বিনামূল্যে এক লাখ ১০ হাজারের বেশি ডোজ দিতে রাজি হয়েছে।

বাংলাদেশে সিনোভ্যাকের ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে সহায়তা করছে আইসিডিডিআরবি। বাংলাদেশের প্রায় ১৭ কোটি মানুষের তুলনায় এই ভ্যাকসিনের পরিমাণ খুবই নগণ্য বলে উল্লেখ করেছে নিউইয়র্ক টাইমস।

ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে অংশ নিলেও বাংলাদেশিদের অনেকেরই আশঙ্কা, উচ্চ মূল্যের কারণে করোনার ভ্যাকসিন সবার কাছে নাও পৌঁছাতে পারে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান বলেছেন, প্যাটেন্ট এবং মুনাফার কারণে যদি বিশ্বের একজন মানুষও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হন, তাহলে এটি হবে এই শতাব্দির সবচেয়ে অবিচার।

বেইজিংয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গুরুত্বারোপ করে বলেছে, ভ্যাকসিন সরবরাহের ক্ষেত্রে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করতে চাইবে না চীন। করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনকে কূটনৈতিক অস্ত্র হিসেবে চীন ব্যবহার করছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে বেইজিং।

দক্ষিণ এশিয়ায় বেইজিংয়ের করোনা ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের উদ্দেশ্য নিয়ে সতর্ক ভারত। নেপাল এবং বাংলাদেশকে চীন ভ্যাকসিন দেয়ার প্রস্তাব দেয়ার পর নয়াদিল্লিও মিত্রদের একই ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিছু কিছু দেশে চীনের বিকল্পও থাকতে পারে। 

চীন ভ্যাকসিন উৎপাদনের একেবারে কাছাকাছি পৌঁছে গেছে এখনও সেটি বলার সময় আসেনি। কিন্তু ভ্যাকসিন নিয়ে প্রতিবেশি ও বিভিন্ন অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে ভঙ্গুর প্রায় সম্পর্ক মেরামত এবং বন্ধুদেরকে আরও ঘনিষ্ঠ করে তোলার দিকেই চীন বেশি মনযোগ দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হয়। এর পর ভাইরাসটি বিশ্বের দুই শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দুই কোটি ৮৩ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত ও ৯ লাখের বেশি মানুষ মারা গেছে। মহামারির তাণ্ডব অব্যাহত থাকলেও রাশিয়া ছাড়া কোনও দেশই এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আনতে পারেনি।

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে এখনও নেতৃত্বের আসনে রয়েছে চীন। দেশটির অন্তত চারটি ভ্যাকসিন শেষ ধাপের পরীক্ষায় পৌঁছেছে; যা বিশ্বের যেকোনও দেশের চেয়ে বেশি।

চীনের পরই আছে যুক্তরাষ্ট্র; দেশটির তিনটি ভ্যাকসিন শেষ ধাপের পরীক্ষায় রয়েছে। মার্কিন ওষুধপ্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজার বলছে, অক্টোবরের শুরুতেই তারা করোনা ভ্যাকসিনের জরুরি ব্যবহারের অনুমতির জন্য আবেদন করবে। দেশটির আরেক কোম্পানি মডার্না চলতি বছরের শেষের দিকে ভ্যাকসিন আনার আশাপ্রকাশ করেছে।

এছাড়া গত জুলাইয়ে চীন দেশটির সামরিক বাহিনী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য দুটি ভ্যাকসিনের জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দেশটির তৈরি ভ্যাকসিন বিশ্ব জনস্বাস্থ্যের কল্যাণে উন্মুক্ত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বিদেশফেরত ৩০২ বাংলাদেশি!

Posted By admin On In দেশ-বিদেশের সংবাদ,ব্রেকিং নিউজ,শীর্ষ সংবাদ | No Comments

নিউজ ডেক্স : বিদেশফেরত ৩০২ বাংলাদেশি বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কুয়েত, কাতার, ভিয়েতনাম ও বাহরাইনের কারাগারে বন্দী ছিলেন। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশেষ বিবেচনায় সে দেশের সরকার তাদের সাজা মওকুফ করে মুক্তি দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদেশফেরত এসব বাংলাদেশি অপরাধমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে যা শ্রমবাজারে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

বিদেশফেরত ৩০২ জনকে তুরাগ থানাধীন দিয়াবাড়ীর কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হয়। সেখানে থাকাকালীন তারা বিভিন্ন সময় গ্রুপভিত্তিক সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ তাদের জিডি (সাধারণ ডায়েরি) মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আদালত আবেদন গ্রহণ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে তারা কারাগারে আটক আছেন।

আটক ব্যক্তিদের স্বজনরা বলছেন, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় সে দেশের সরকার তাদের কারাদণ্ড দেয়। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তাদের সাজা মওকুফ করে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। কিন্তু দেশে আসার পর পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। দীর্ঘদিন হয়ে গেল আদালত তাদের জামিন দিচ্ছে না। আমরা তাদের জামিন চাই। তবে রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, তাদের এখন ছেড়ে দিলে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে পারে।

গত ৪ জুলাই ২১৯ জন বিদেশফেরত বাংলাদেশিকে কারাগারে পাঠান আদালত। তাদের মধ্যে ১৪১ জন কুয়েত, ৩৯ জন কাতার এবং ৩৯ জন বাহরাইনফেরত। গত ১ সেপ্টেম্বর বিদেশফেরত আরও ৮৩ বাংলাদেশিকে কারাগারে পাঠান আদালত। তাদের মধ্যে ৮১ জন ভিয়েতনাম এবং দুজন কাতারফেরত। কারাগারে পাঠানোদের বিরুদ্ধে করা জিডি দুটি বর্তমানে তদন্তাধীন। তুরাগ থানা পুলিশ জিডির তদন্ত করছে।

সর্বশেষ গত ৩ সেপ্টেম্বর ২১৯ জন বিদেশফেরত বাংলাদেশির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। এদিন তদন্তকারী কর্মকর্তা তুরাগ থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ সফিউল্লাহ প্রতিবেদন দাখিল না করে আদালতের কাছে ৩০ দিনের সময় চেয়ে আবেদন করেন। আদালত তা মঞ্জুর করে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন দিন ধার্য করেন।

তদন্ত কর্মকর্তার সময় আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘২১৯ জন বিদেশফেরত আসামিকে গত ৪ জুলাই আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। সোপর্দিত ২১৯ জনের মধ্যে কুয়েত হতে ১৪১ জন, কাতার হতে ৩৯ জন এবং বাহরাইন হতে ৩৯ জন প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যক্তি বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে উল্লিখিত দেশসমূহে কারাগারে ছিলেন বলে পত্র পাওয়া যায়। করোনাভাইরাস মহামারির বিষয়টি বিবেচনা করে উপরোক্ত দেশসমূহ বিশেষ বিবেচনায় তাদের সাজা মওকুফ করে মুক্তি প্রদান করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়।’

‘উল্লিখিত আসামিরা বিদেশে থেকে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িত হয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। যা শ্রমবাজারে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। এমতাবস্থায় উল্লিখিত ডায়েরির বিষয়টি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিধায় সর্বাধিক গুরুত্বসহকারে জোর তদন্ত অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সকল সোপর্দিত আসামির নাম-ঠিকানা, পিসি, পিআর, পূর্বেকার কর্মকাণ্ড, পূর্ব ইতিহাস ইত্যাদি যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট থানাসমূহে পৃথক পৃথকভাবে অনুসন্ধান স্লিপ প্রেরণ করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সকল আসামির নাম-ঠিকানা যাচাই সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায় নাই। এছাড়া আদালতের নির্দেশে ১৩ জন হাজতি আসামিকে কেন্দ্রীয় কারাগার ও কাশিমপুর কারাগারের জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের নিকট হতে তদন্তে সহায়ক যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ডায়েরির বিষয়টি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিধায় তা সর্বাধিক গুরুত্বসহকারে অন্যান্য সংস্থাও অনুসন্ধান অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব বিবেচনায় সার্বাক্ষণিক মনিটরিং করছেন। তাই ডায়েরির অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত সমাপ্ত করা সম্ভবপর হয়নি বিধায় সুষ্ঠু তদন্তের সার্থে আরও ৩০ কার্যদিবস বর্ধিত সময় একান্ত প্রয়োজন।’

jagonews24

রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের লক্ষ্যে গোপন সলাপরামর্শ : ৩০২ জনের পৃথক ডায়েরির অভিযোগ থেকে জানা যায়, ‘প্রবাসী এসব বাংলাদেশি বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কুয়েত, কাতার, বাহরাইন ও ভিয়েতনামের কারাগারে বন্দী ছিলেন। করোনাভাইরাস মহামারির বিষয়টি বিবেচনা করে উপরোক্ত দেশসমূহ বিশেষ বিবেচনায় তাদের সাজা মওকুফ করে মুক্তি প্রদান করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়। উল্লিখিত আসামিরা বিদেশে থেকে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িত হয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। যা আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। এছাড়া তাদের সঠিক নাম, ঠিকানা পাওয়া যায়নি। এমতাবস্থায় তাদের কোয়ারেন্টাইনের সময়সীমা পূর্ণ হওয়ার পর তাদের ছেড়ে দেয়া হলে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে ডাকাতি, দস্যুতা, খুন, পারিবারিক সহিংসতা, জঙ্গি নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধে সম্পৃক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

‘যেহেতু উক্ত ব্যক্তিগণ বিদেশে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার জন্য সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে আটক ছিলেন এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তাদের দ্বারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেহেতু জনগণের জানমালের নিরাপত্তার রক্ষার্থে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক।’ ‘উল্লিখিত ব্যক্তিরা বাংলাদেশে ফেরত আসার পর তাদের তুরাগ থানাধীন দিয়াবাড়ীর কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হয়। কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকাকালীন বিভিন্ন সময়ে গ্রুপভিত্তিকভাবে সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মসূচি পালন করাসহ বিভিন্ন ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড সংঘটিত করার লক্ষ্যে গোপনে সলাপরামর্শ করত বলে গোপন সূত্রে তথ্য পাওয়া যায়।’

আটক ব্যক্তিদের স্বজনরা যা বলছেন : কাতারফেরত এবং কারাগারে থাকা আমিনুল ইসলামের বাবা আমির হোসেন বলেন, পাঁচ বছর আগে আমার ছেলে কাতারে যায়। যাওয়ার তিন মাস পর গাড়িতে মাদক পাওয়ায় তাকে সে দেশের সরকার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়। করোনার সময় তাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। দেশে আসার পর কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। সেখান থেকে গত ৪ জুলাই কারাগারে পাঠানো হয়। আজও তাকে জামিন দেননি আদালত। সরকারের কাছে দাবি, তাকে যেন জামিন দেয়া হয়।

কারাগারে থাকা দিল মোহাম্মদের ছোট ভাই আব্বাস বলেন, সংসারের অবস্থা ভালো না হওয়ায় ছোট ভাই দিল মোহাম্মদকে কুয়েতে পাঠাই। সেখানে যাওয়ার পর সে দেশের সরকার তাকে ১৬ বছরের কারাদণ্ড দেয়। করোনায় সাজা মওকুফ করে তাকে দেশে পাঠানো হয়। দেশে আসার পর তাকে ফের কারাগারে পাঠানো হয়। আদালত তাকে জামিন দিচ্ছে না। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থেই তো সে বিদেশে গিয়েছিল। আমরা দ্রুত তার মুক্তি চাই।

কবির হোসেনের শ্যালক আল-আমিন বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে আমার দুলাভাই কুয়েত যান। সে দেশের সরকার তাকে সাজা দেন। করোনায় সাজা মওকুফ হয়ে দেশে আসলে তাকে ফের কারাগারে পাঠানো হয়। এখন আদালত তাকে জামিন দিচ্ছে না।

উভয়পক্ষের আইনজীবীরা যা বলছেন : জামিন না দেয়া প্রসঙ্গে আসামিপক্ষের আইনজীবী জয়েন্ত শাহ বলেন, দেশের জন্য তারা বিদেশে গিয়েছিলেন। সে দেশের সরকার তাদের সাজা মওকুফ করে বাংলাদেশে পাঠায়। বাংলাদেশে আসার পর তাদের ফের কারাগারে পাঠানো হয়। সাধারণ ডায়েরির (জিডি) মামলায় দীর্ঘদিন তারা কারাগারে আটক আছেন। আদালতের কাছে জামিন চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু আদালত জামিন দিচ্ছেন না। আমরা আসামিদের জামিন চাচ্ছি।

আইনজীবী ইমরুল হোসেন বলেন, আদালতের কাছে আসামিদের জামিন চাচ্ছি। কিন্তু আদালত জামিন মঞ্জুর করছেন না। জামিন পাওয়া তো তাদের মানবিক অধিকার।

ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) হেমায়েত উদ্দিন খান হিরোন বলেন, ‘বিদেশে থাকাকালে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় সে দেশের সরকার তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তাদের সাজা মওকুফ করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়। দেশে আসার পর তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। কিন্তু কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় তারা রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন কর্মসূচি পালনসহ ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। আচার-আচরণ সন্দেহমূলক হওয়ায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে করা জিডি তদন্তাধীন। তদন্ত প্রতিবেদন আসার পর জানা যাবে তাদের স্বভাব-চরিত্র আসলে কেমন।’

‘প্রতিবেদন না আসায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে তাদের জামিনের বিরোধিতা করছি। এমনও হতে পারে, তারা জামিনে গিয়ে দেশে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়তে পারেন’— বলেন রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী।

এ বিষয়ে তুরাগ থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ সফিউল্লাহ বলেন, বিদেশফেরত বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে করা জিডি তদন্তাধীন। আসামিদের নাম-ঠিকানা যাচাই-বাছাই চলছে। ইতোমধ্যে তাদের নাম-ঠিকানা যাচাইয়ের জন্য পত্র পাঠানো হয়েছে। অনেক থানা থেকে এখনও প্রতিবেদন আসেনি। আসামির সংখ্যা বেশি হওয়ায় তদন্তে সময় লাগছে। জাগো নিউজ

হিসেব গুনে যাই নিরন্তর

Posted By admin On In শীর্ষ সংবাদ,সাহিত্য পাতা | No Comments

_______ফিরোজা সামাদ _______
হায় ভালোবাসা !
তোমার নয়নে নয়ন রেখে অামি
নীরবে অশ্রুজলে ভাসি একা একা,
তুমি অচল নির্বাক বধির কিচ্ছুটি জানোনা,
বা জেনেও বোঝার বোধ লুপ্ত তোমার !!

হায় ভালোবাসা!
সোনালি সকাল গড়িয়ে, রুপালি দুপুর
অাবার ক্লান্ত বিকেলে অস্তরাগ নদী হয়ে –
ফিরে যায় গভীর রাতের মতো সাগরের মোহনায়,
তুমি কী অনুভূতি বিহীন একটি বাক্যমাত্র ?

যাপিত জীবনের ভেঙে যাওয়া স্বপ্নগুলো
টুকরো টুকরো করে নদীর মতো বয়ে নিয়ে যায়
কোন সুদূরে অজানার পথে কেউ জানেনা হায় !!

অতঃপর নিশুতি অাকাশ অাঁধার চোখে
অামার অশ্রুসিক্ত নয়নে চোখ রেখে
চেয়ে চেয়ে জেগে রয় সারা রাতভর,
একসময় পবিত্র অাযানের সুললিত সুরে
ভোরের আলো ফোটে,
পাখির কলতানে মুখরিত হয় ধরণী !!

হায় ভালোবাসা!
তখন অামি কড়ে অাঙুলে জীবন থেকে
ঝরে যাওয়া বসন্তের হিসেব গুনে গুনে
ক্লান্ত শরীরে প্রার্থনায় বসে যাই অবিরত !!

ভালোবাসা!
অাজ হেথায় তোমার অামন্ত্রণ !
যেথায় দুঃসহ জীবন নদীটি বয়ে যায় নিরন্তর
অাপন গতিতে ক্লান্তিহীনতায় ?
যেথায় নদীটির জীবন বেচাকেনার হাট বসে
নিত্য অানন্দে মুখরিত সব শপিংমলে ?
একদিন নাহয় ভুল করে তোমার ভুল পথে
সেই হাটে তুমি এসো !

লোহাগাড়ায় ইয়াবা ও চোলাইমদসহ গ্রেপ্তার ৪

Posted By admin On In ব্রেকিং নিউজ,লোহাগাড়ার সংবাদ,শীর্ষ সংবাদ | No Comments

এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়ায় ১৫ হাজার পিস ইয়াবা ও ২০ লিটার চোলাইমদসহ ৪ পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার চুনতী ও চরম্বা ইউনিয়নে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তারা হলেন, উপজেলার পশ্চিম কলাউজান এলাকার চাচী রাম কান্তি নাথের পুত্র সজীব কান্তি নাথ (৩০), কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার ইসলামাবাদ এলাকার আলী আহাম্মদের পুত্র মো. ইব্রাহিম (২২), কক্সবাজার সদর পৌরসভার ইসলামপুর এলাকার মো. রশিদ আহাম্মদের পুত্র মো. জাহেদ হোসেন (২২) ও ঢাকার ডিএমপি ভাটরা থানার ছোলমাইদ পূর্ব পাড়ার মো. মহির উদ্দিনের পুত্র মো. মনির হোসেন (৩২)।

পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের রাজঘাটা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২০ লিটার চোলাইমদসহ সজীব কান্তি নাথকে গ্রেপ্তার করা হয়। চুনতী ফরেষ্ট রেঞ্জ কার্যালয়ের সামনে চট্টগ্রাম শহরমুখী একটি প্রাইভেটকারে তল্লাশী চালিয়ে অন্যদের কাছ থেকে ১৫ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত ইয়াবার আনুমানিক মূল্য ৪৫ লাখ টাকা। জব্দ করা হয়েছে ইয়াবা পাচারকাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার।

লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকের হোসাইন মাহমুদ জানান, তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।