নিউজ ডেক্স : নতুন পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে ভোগান্তির অপর নাম পুলিশ ভেরিফিকেশন। বিদ্যমান পুলিশ ভেরিফিকেশন পদ্ধতির কারণে সেবা গ্রহীতাদের হয়রানি ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা ওই ব্যবস্থা বাতিলের সুপারিশ করেছে দুর্নীতি নিয়ে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটির জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৭৪ ভাগের বেশি মানুষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর কাছে সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার হন। টিআইবির খানা (পরিবার) জরিপ অনুযায়ী, পুলিশ যেসব ক্ষেত্রে দুর্নীতি করে সেসব খাতের মধ্যে পাসপোর্টের জন্য ভেরিফিকেশন তৃতীয় সর্বোচ্চ।
টিআইবির রিসার্চ ফেলো মোহাম্মদ নূরে আলম বলেন, পুলিশ ভেরিফিকেশন পাসপোর্টের জন্য যে খানাগুলো সেবা নিয়েছে তাদের মধ্যে ৮৪.৪ শতাংশ অনিয়ম, দুর্নীতির শিকার হয়েছে। তবে এ অভিযোগের সাথে শতভাগ একমত নন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ। সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (সিটি এসবি) মঞ্জুর মোরশেদ আজাদীকে বলেন, পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট নিয়ে গ্রাহকের ভোগান্তি অতীতে ছিল। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু বর্তমানে এ ধরনের অভিযোগের হার জিরো পারসেন্ট। গত বছর জুন মাস থেকে আমরা এ বিষয়ে পরীক্ষামূলকভাবে এসএমএস পদ্ধতি চালু করেছি। এতে গ্রাহকগণ উপকৃত হচ্ছেন। পাশাপাশি দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি থেকেও রক্ষা পাচ্ছেন।
প্রশ্ন উঠছে, কেন এত সময় লাগবে? কেন এত ভোগান্তি? ব্যক্তির নামে তার নিজ থানায় কোনো মামলা মোকদ্দমা আছে কিনা বা তিনি রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য বিপজ্জনক ব্যক্তি কিনা সে তথ্য নিজ নিজ থানাতেই সংরক্ষিত থাকে। ওই থানা ইচ্ছে করলে এক ঘণ্টার মধ্যে তা যাচাই-বাছাই করে একটা সনদ লিখে দিতে পারে। এজন্য জটিল পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে কেন? কেন সেই নোটিশ জেলা পুলিশ সুপারের মাধ্যম হয়ে আসতে হবে থানায়?
চালু করা এসএমএস পদ্ধতি সম্পর্কে সিটি এসবির উপ-কমিশনার মঞ্জুর মোরশেদ বলেন, পাসপোর্ট অফিস থেকে ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেটের জন্য আবেদনপত্রগুলো যখন সিটি এসবিতে আসে, তদন্তের জন্য সেগুলো বিভিন্ন অফিসারকে ভাগ করে দেওয়া হয়। এরপর গ্রাহকের কাছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি এসএমএস চলে যায়, আপনার আবেদনপত্রটি পাসপোর্ট অফিস থেকে সিটি এসবি অফিসে এসেছে। তদন্তকারী অফিসারের নাম ও মোবাইল নম্বর সেখানে উল্লেখ থাকে। এরপর গ্রাহক তার সাথে যোগাযোগ করলে তদন্তকারী অফিসার জানিয়ে দেন, কখন তিনি যাবেন এবং কি কি কাগজ তৈরি রাখতে হবে।
তিনি বলেন, একইভাবে তদন্ত শেষে পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট পাসপোর্ট অফিসে পাঠিয়ে দেওয়ার পর গ্রাহকের কাছে আরেকটি এসএমএস যায়, তার ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট পাসপোর্ট অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে পাসপোর্ট অফিস-সিটি এসবি অফিসে গ্রাহকের আর ছুটাছুটি করতে হয় না। এ দুটি এসএমএস পাঠাতে আমাদের ৯২ পয়সা খরচ হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু গ্রাহকের সময়ক্ষেপণ হচ্ছে না, ভোগান্তি হচ্ছে না এবং পুলিশের প্রতি বিরূপ মনোভাব জন্মাচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করছি যাতে অনলাইনে ঘরে বসে এ ধরনের সেবা পাওয়া যায়। তারপরও যদি কেউ সাহায্য চায় তাকে সহযোগিতা করব। -আজাদী প্রতিবেদন