- Lohagaranews24 - https://lohagaranews24.com -

২০৪১ সালের মধ্যে দেশে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ

নিউজ ডেক্স : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। শহরের পাশাপাশি গ্রামের মানুষও যাতে বিদ্যুৎ পায় সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সরকার ভর্তুকিসহ সব ধরনের সহযোগিতা করছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন দেশের মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন অনুযায়ী আমরা রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎসহ সব কিছুর উন্নয়ন করছি যেন বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটে।

বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩১টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিতকরণে দুটি পাওয়ার প্ল্যান্ট, ১১টি গ্রিড সাব-স্টেশন, ছয়টি নতুন সঞ্চালন লাইন উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দুটি পাওয়ার প্ল্যান্ট উদ্বোধন করেন তিনি।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী এর আগে ২৫৭টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন উদ্বোধন করেছেন। এ ৩১ উপজেলা উদ্বোধনের পর মোট ২৮৮টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আসবে। ফলে দেশের ৯৭ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করবে।

এ সময় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তার মন্ত্রণালয়ের কার্যালয় থেকে অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হন। মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ২৭টি জেলার জনপ্রতিনিধিরাও ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী উপকারভোগী নোয়াখালী, গোপালগঞ্জ, পটুয়াখালী, কুমিল্লা ও মানিকগঞ্জ জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং তাদের বক্তব্য শোনেন। এর মধ্যে স্কুল ছাত্রী, কৃষক, শিক্ষক, গৃহিণী ও মসজিদের ইমামও বক্তব্য রাখেন। তারা বিদ্যুতের সুবিধা ও উন্নয়নের কথা বিস্তারিত তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে দেখা যেত বাজেটের আগে গোপালগঞ্জের উন্নয়নের কথা বলা হতো। কিন্তু বাজেটের সময় দেখা যেত সেই টাকা কোথায় জানি চলে গেছে। গোপালগঞ্জে বিদ্যুৎ পেতাম না। জেনারেটর চালিয়ে বাতি জ্বালতে হতো। আমরা সেভাবে কোনো জেলার উন্নয়ন করি না। তার একটি দৃষ্টান্ত আজ দেখা যাবে। বগুড়া জেলায় ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন করা হচ্ছে। এছাড়া ওই জেলার মহাস্থানগড় ও শেরপুরে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

তিনি বলেন, ২০২১ থেকে ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সারাদেশে ইকোনমিক জোন করা হচ্ছে, সেখানে বিদ্যুৎ দেয়া হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবেই এই উদ্যোগ। গ্রামকে শহরে রূপান্তর করা হবে। সব সুযোগ-সুবিধা যাতে সেখানে পাওয়া যায় সেদিকে নজর দেয়া হচ্ছে। পল্লী বিদ্যুতের মাধ্যমে ওইসব এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। শহর আর গ্রামের মধ্যে যেন পার্থক্য না থাকে। গ্রামের মানুষ যেন শহরের সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশে যারা ব্যবসা-বাণিজ্য করতো এবং ইন্ডাস্ট্রি চালাতো এক সময় বিদ্যুতের জন্য তাদের মধ্যে হাহাকার ছিল। তাদেরকে জেনারেটর দিয়ে এসব শিল্প-কলকারখানা পরিচালনা করতে হতো। এভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই একটা দুর্বিষহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। আমাদের প্রচেষ্টা ছিল সার্বিক উন্নয়নে কাজ করব। ৯৬ সালে আমরা যখন সরকার গঠন করি তখন বিদ্যুতের অবস্থা খুব করুন ছিল। আমরাই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে বিদ্যুতের উন্নয়নে কাজ শুরু করেছিলাম। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে এ পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পেরেছি। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। যেখানে গ্যাস আছে সেখানে গ্যাস দিয়ে আর যেখানে কয়লা আছে সেখানে কয়লা দিয়ে উৎপাদন করছি। দিনাজপুরে আমরা কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করি।

বিদ্যুৎ বিভাগে কর্মরতদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করছেন বলেই আজ বিদ্যুৎ বিভাগে উন্নয়ন করা সম্ভব হচ্ছে।