- Lohagaranews24 - https://lohagaranews24.com -

হযরত বড় হুজুর (রাহ.) ও ছোট হুজুর (রাহ.) : নাক্শাবান্দী ও মুজাদ্দিদী ত্বরিকতের আলোকবর্তিকা

ড. মুহাম্মদ ওয়ালী উল্লাহ মঈন : আধ্যাতিক জগতের ক্ষণজন্মা জগদ্বিখ্যাত সাধকগণের মধ্যে অলিকুল শিরোমণি হযরত বড় হুজুর (রা.) ও হযরত ছোট হুজুর (রা.) অন্যতম । রূহানী শক্তি দিয়ে সমাজ সংস্কার ও দ্বীনি শিক্ষা বিস্তারের যে পথ তাঁরা দেখিয়ে গেছেন তা অবিস্মরনীয় ও অনুসরণীয়। ইলমে দ্বীনের মশাল প্রজ্বলনে দ্বীনি মাদ্রাসা, মসজিদ, খানেকা প্রতিষ্ঠা করে সমাজের অনগ্রসর ও পিছিয়ে পড়া মানবতাকে ইসলামের পথে ফিরিয়ে এনে বিদআত ও র্শিকমুক্ত ইবাদত ও রাসূল (সা.) এর সুন্নাতের পথ প্রদর্শনে তাঁরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।

আল্লাহর রাসূল (সা.) এর হাতে বায়আত গ্রহণের মাধ্যমে সাহাবায়ে কিরাম (রা.) আধ্যাত্মিক ও সমাজ পরিবর্তনের যে ধারার সূচনা করেছিলেন তা আজও প্রবাহমান। ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.), ৪র্থ খলিফা হযরত আলী (রা.) ও বিশিষ্ট সাহাবী হযরত সালমান ফারসী (রা.) এর সূত্র ধরে আধ্যাত্মিকতার এই সিলসিলা বা ধারাবাহিকতা সারা দুনিয়াকে আলোকিত করেছে। এইভাবে হযরত খাজা বাহা উদ্দীন মুহাম্মদ ইবনে আহমদ আল ফারুকী নাক্শাবান্দী (রাহ.) (মৃত ৭৯১/১৩৮৯) আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের আধ্যাত্মিক পন্থার সন্ধানে কঠোর সাধনা ও একনিষ্ঠ ইবাদতের মাধ্যমে রাব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে ইলহাম প্রাপ্ত হয়ে নাক্শাবান্দিয়া ত¦রিকতের দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নাক্শাবান্দী (রাহ.) এর পবিত্র মাযার মধ্যে এশিয়ার অন্যতম মুসলিম রাষ্ট্র উজবেকিস্তানের সমরকন্দ শহরে অবস্থিত । উক্ত সিলসিলাটি সিলসিলা-ই- খাজিগান নামেও অভিহিত হয়।

মাওলানা আলী আল ওয়াইজ আল-কাশিফী (রাহ.) (মৃতঃ ৯৩৯হিঃ/১৫৩২) কর্তৃক রচিত “রাশাহাতু আয়নিল হায়া” নামক কিতাবে নাক্শাবান্দিয়া সিলসিলার তাসাউফের এই ধারা প্রক্রিয়াটি আধ্যাত্মিক পূর্ণতাপ্রাপ্তি ও আত্মশুদ্ধির উন্নতি লাভের উচ্চতর স্তরসমূহ অতিক্রান্ত হওয়ার বিস্তারিত বর্ণনা তথ্য প্রমাণসহ বর্ণনা করা হয়েছে। মাওলানা আলী আল ওয়াইজ আল কাশিফী খ্যাতিমান নাক্শাবান্দী সূফী ও “নাফাহাতুল উনস্” এর গ্রন্থকার মাওলানা আব্দুর রহমান জামী-(রাহ.)এর দৌহিত্র ছিলেন। তিনি দীর্ঘকাল প্রখ্যাত নাক্শাবান্দী আধ্যাত্মিক সাধক খাজা উবায়দুল্লাহ আহরার (রাহ.) ( মৃতঃ ৮৯৫/১৪৯০) এর সংসর্গে অবস্থান করেছিলেন। খাজা বাহাউদ্দীন (রাহ.) স্যায়্যিদ আমীর কুলাল (রাহ.) এর হাতে বায়য়াত গ্রহণ করেছিলেন এবং তাঁর খিদমতে রত থেকে তালীম, যিক্র, আধ্যাত্ম পথ পরিক্রমা, আধ্যাত্মিক জীবন চর্চার রাতিনীতি ও আদাব-আচরণ পালন করে ধন্য হয়েছিলেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি “ওয়াইসি’’ ছিলেন । তিনি ষষ্ঠ হিজরী শতকের প্রখ্যাত সূফী খাজা আব্দুল খালিক গাজদাবানী (রাহ.) (মৃত ৫৭৫/১১৭১) এর রূহানী ও আধ্যাত্মিক ফায়য অর্জন করেছিলেন।

নাক্শাবান্দিয়া ত্বরিকতের আটটি বিশেষ তাসাওউফী পরিভাষা রয়েছে, যে গুলোকে এই ত্বরিকতের ভিত্তি মনে করা হয় এবং এগুলো খাজা গাজদাবানী (রাহ.) হতে উদ্ধৃত হয়ে আসছে। উক্ত পরিভাষাগুলো নি¤œরূপঃ-
ক। হুশ দারদীম:- অর্থ্যাৎ মনের বিক্ষিপ্ততা প্রতিরোধে শ্বাস-প্রশ্বাস সংযম করা।
খ। নযর বারকাদাম অর্থাৎ দৃষ্টির বিক্ষিপ্ততা প্রতিরোধে নি¤œদিকে দৃষ্টি প্রদান করা (দৃষ্টি
সংযম)।
গ। সাফার দান ওয়াতান অর্থাৎ মুকিম হয়েও মুসাফিরের মত জীবন-যাপন।
ঘ। খালওয়াত্ দার আনজুমান অর্থাৎ সাংসারিক জীবন যাপন করেও নির্লিপ্ততা এবং
নির্জনতা অবলম্বন করা।
ঙ। ইয়াদ কারদ অর্থাৎ সকল অবস্থায় আল্লাহর স্মরণ বা যিকির-এ আত্মনিয়োগ।
চ। বায্ গাশত বা প্রতি মূহুর্তে আল্লাহতে নিমগ্ন থাকার প্রক্রিয়া- প্রত্যাবর্তন সংযম ।
ছ। নিগাহদাশত বা সার্বক্ষণিক অত্মরক্ষা সচেতনতায় অতন্দ্র থাকা- আত্মরক্ষা সংযম ।
জ। ইয়াদ দাশত অর্থাৎ সার্বক্ষণিক আল্লাহতে নিমজ্জিত থাকা।

“রাশাহাতু আয়নিল হায়া” নামক কিতাবে এ সকল পরিভাষার ব্যাখ্যা খাজা আব্দুল খালিক গাজদাবানী (রাহ.) ও খাজা বাহাউদ্দীন নাক্শাবান্দী (রাহ.) এর ভাষ্যানুযায়ী বর্ণনা করা হয়েছে। ভারতীয় উপমহাদেশের বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস শাহ ওয়ালী উল্লাহ দেহলভী (রাহ.) (মৃত ১৭৭৬ হি:) তাঁর ‘‘আল কাওলুল জামীল” গ্রন্থে নাক্শাবান্দী ত্বরীকার যিক্র আয্কার সংক্রান্ত আলোচনায় এগুলোর বিশদ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি ত্বরীকতের পূর্ববর্তী মাশায়েখ হতে উদ্ধৃত যিক্র, মুরাকাবা ও মুরশিদের প্রতি পূর্ণ ভক্তিশ্রদ্ধা প্রতিষ্ঠার পন্থা বিশদভাবে তাঁর কিতাবে বর্ণনা করা করেছেন। হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নাক্শাবান্দী (রাহ.) পূর্বোক্ত বিষয়গুলোর সাথে আরও তিনটি বিষয় যুক্ত করেছেন।
ক। ওয়াকুফে যামানী অর্থাৎ নিজের সময় ও গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা।
খ। ওয়াকুফে ক্বালবী বা হৃদয় নিয়ন্ত্রণ করা।
গ। ওয়াকুফে আদাদী বা যিক্র-আয্কার ইত্যাদি বিজোড় সংখ্যায় সম্পন্ন করা।

হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নাক্শাবান্দী (রাহ.) এর পূর্ববর্তী যুগে কিছুকাল যিক্র-ই খাফী বা নিঃশব্দ যিক্রকে যিক্র-এ জলী বা স্বশব্দ ও সরব যিক্র এর সাথে সংযুক্ত করা হয়েছিলো। কিন্তু হযরত খাজা নাক্শাবান্দী (রাহ.) শুরু হতেই যিক্রে খাফী এর পন্থা অনুসরণ করেন। তিনি সুন্নাতে রাসুল (সা:) এর অনুসরণের প্রতি সবিশেষ গুরুত্বারোপ করেন এবং সাহাবায়ে কিরাম (রা.) এর নীতি, চরিত্র ও জীবন দর্শনের বিপরীত কার্যকলাপকে মারাত্মক ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেন।

আধ্যাত্মিকতার মানদন্ডে নাক্শাবান্দী সিলসিলা মধ্য এশিয়ার সমরকন্দ ও বুখারায় পূর্ণরূপে বিকশিত হওয়ার পর হযরত খাজা বাকি বিল্লাহ (রাহ.) (মৃত ১০১২হিঃ/১৬০৩খ্রি) স¤্রাট আকবরের শাসনামলে ভারতীয় উপমহাদেশে নিয়ে আসেন। তাসাওউফের চারটি প্রসিদ্ধ সিলসিলার অন্য তিনটি (কাদিরিয়া, চিশতিয়া, ও সুহরাওয়ার্দিয়া)- ইতোপূর্বে উপমহাদেশে প্রসার লাভ করে। হযরত খাজা বাকি বিল্লাহ (রাহ.) আধ্যাত্মিক সাধনা ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যেই নাকশাবান্দিয়া সিলসিলার বুনিয়াদ সুদৃঢ়রূপে স্থাপন করেন। তাঁর প্রধান ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ খলিফা হযরত শায়খ আহমদ সিরহিন্দী ফারুকী (রাহ.)-মুজাদ্দিদে আলফে সানি-(মৃত ১০৩৪/১৬২৪) এর অবিরাম প্রচেষ্টা ও নিরলস সাধনার মাধ্যমে উক্ত সিলসিলা মূল শক্তি সংগ্রহ করে।

মুজাদ্দিদে আলফে সানি (রাহ.) এর আধ্যাত্মিক সংস্কার বিপ্লবের সুদূর প্রসারী প্রভাবে স¤্রাট আকবরের দ্বীন-ই-ইলাহী, রাজ দরবারের কুসংস্কারসমূহ ও প্রশাসন যন্ত্রেও অনৈসলামিক কর্মকান্ড সমূলে বিনষ্ট হতে থাকে। পরবর্তীতে স¤্রাট জাহাঙ্গীরের শাষনামলে মুজাদ্দিদ (রাহ.) চরম নির্যাতন ভোগ করেও বিচক্ষণতা ও প্রজ্ঞার সাথে রাজ দরবার এবং প্রশাসনের রন্দ্রে রন্দ্রে তাওহীদ ও রিসালাতের দাওয়াত জোরালো ভাবে প্রচার করেন। সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে র্শিক বিদআত দূরীকরণে তার নিরলস প্রচেষ্টা ধর্মভীরু ও ন্যায়পরায়ণ শাসক বাদশাহ আলমগীর (রাহ.) এর শাসনামলে সফলতা লাভ করে। হযরত মুজাদ্দিদ (রাহ.) কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাতে রাসুল (সা:) এর অকাট্যতা, অনুসরণ ও অনুকরণের অপরিহার্যতার প্রতি তৎকালীন মুসলিম সমাজকে জোরালোভাবে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করেছেন। তিনি যথার্থভাবে অনুধাবন করেন যে, সংস্কারের জন্য একটি সর্বব্যাপী ও বহুমূখী আন্দোলন পরিচালনা করা একান্ত প্রয়োজন। ফলে মুজাদ্দিদী ত্বরীকত ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলনে পরিণত হলো- যাতে শরীয়ত ও হাকিকত (ত্বরীকত), নবী (সা:) এর সুন্নাহর অনুসরণ ও চিন্তাগত সংস্কারের সঠিক উপাদান সমন্বিত হলো। এসময় মুজাদ্দিদ (রাহ.) কর্তৃক লিখিত মাক্তুবাত (পত্রাবলী) বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এভাবে সিলসিলা-ই- মুজাদ্দিদিয়ার আধ্যাত্মিক প্রভাবলয় ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরেও বিস্তার লাভ করতে থাকে। উনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে নাক্শাবান্দী-মুজাদ্দিদী সিলসিলার বিখ্যাত মনিষীগণ ভারত ও মধ্য এশিয়ায় প্রত্যক্ষ জিহাদ পরিচালনা করতে থাকেন। মুজাদ্দিদিয়া ত্বরিকতের উজ্জ্বল নক্ষত্র সাইয়েদ আহমদ শহীদ ব্রেলভী (রাহ.) (মৃত:১৮৩১) এর নেতৃত্বে সংঘটিত বালাকোটের জিহাদ এর মধ্যে অন্যতম। হযরত মুজাদ্দিদ (রাহ.) এর আধ্যাত্মিক ও সামাজিক সংস্কার আন্দোলনের প্রভাবে নাক্শাবান্দ ত্বরীকতের সিলসিলাটি মুজাদ্দিদী ত্বরিকত নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে। তিনি আধ্যত্ম চর্চার বিভিন্ন প্রক্রিয়া ও ওয়াযীফা (আশগাল ওয়া আওরাদ) কে ভিন্নরূপে সুবিন্যস্ত করেন। তার মতে প্রতিটি লাতীফার নূর, আলো-আভা ও বর্ণ ভিন্ন ভিন্ন। নাফী ইছবাত কালিমা- লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ-ও যিক্র দ্বারা আঘাত প্রত্যাঘাত (র্দাব) করতে হয়। ইসমুয্-যাত (আল্লাহ্ আল্লাহ্) যিক্র ক¦ালবের স্থির প্রশান্তি ও গভীর মনোযোগ সহকারে প্রতিটি লতিফায় প্রক্ষিপ্ত করা হয়। ইহার যথাযথ পদ্ধতি শুধু বই পুস্তক পাঠ বা মৌখিক আলোচনায় সম্ভব নয় বরং কামিল মুরশিদের প্রত্যক্ষ সান্ন্যিধ্যে অবস্থান করত: হাতে কলমে শিখতে হবে।

নাক্শাবান্দীয়া-মুজাদ্দিদিয়া সিলসিলা একটি পূর্ণাঙ্গ, সুবিন্যস্ত ও সহীহ ( বিশুদ্ধ) ত্বরীকা, যার লক্ষ্য দ্বীনের বিস্তারে সহায়তা ও রূহানী প্রভাব- প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠা করা। এটা দ্বীনের প্রচার ও ইসলামী শরীয়ত তথা মাযহাবের স্থিতি ও দৃঢ়তা বিধানে উল্লেখযোগ্য অবদান অব্যাহত রেখেছে।

ত্বরিকতের উক্ত সিলসিলা ধারাবাহিকভাবে হযরত শাহ আদম বিন্ নূরী (রাহ.), হযরত সাইয়েদ শাহ্ আব্দুল্লাহ আকবরাবাদী (রাহ.), যুগশ্রেষ্ঠ হাদিস বিশারদ হযরত আব্দুর রাহীম মুহাদ্দিসে দেহলভী (রাহ.), হযরত শাহ্ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী (রাহ.), হযরত শাহ্ আব্দুল আজীজ মুহাদ্দিসে দেহলভী (রাহ.), শহীদে বালাকোট হযরত সাইয়েদ আহমদ ব্রেলভী (রাহ.), গাজীয়ে বালাকোট হযরত সূফি নুর মুহাম্মদ নিজামপুরী চাটগামী (রাহ.), রাসূল নোমা হযরত সূফি সাইয়েদ ফতেহ আলী ওয়াইসি (রাহ.), শামসুল ওলামা হযরত সুফী গোলাম সালমানী (রাহ.), হযরত শাহ্ সুফি আব্দুল বারী (রাহ.), হযরত শাহ্ হাফেজ হামেদ হাসান আলভী আজমগড়ী (রাহ.) হয়ে হযরত শাহ্ মাওলানা আব্দুল মজীদ (বড় হুজুর) (রাহ.) ও হযরত শাহ্ মাওলানা আবদুর রশীদ সিদ্দীকি হামিদী (ছোট হুজুর) (রাহ.) এর মাধ্যমে উপযুক্ত খলিফা ও আলেমে দ্বীন তৈরীর মাধ্যমে ইসলামের সুমহান আদর্শ প্রচারে আজও কাজ করে যাচ্ছে।

হযরত বড় হুজুর (রাহ.) ও হযরত ছোট হুজুর (রাহ.) এর মধ্যে আধ্যাত্মিক ও পারিবারিক সৌহার্দ্যপূর্ণ মধুর সম্পর্কের যে নযীর স্থাপিত হয়েছিলো তা পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও প্রবাহমান রাখার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। সুন্নাতে রাসূল (সা.) ও সাহাবায়ে কিরাম (রা.) এর জীবন্ত আদর্শ সমুন্নত রাখা ও চর্চার বিষয়টি তাঁরা সর্বাগ্রে স্থান দিতেন। বর্তমানে গারাঙ্গিয়া দরবারের ব্যানারে ত্বরীকত চর্চার কাজ যাঁরা আঞ্জাম দিচ্ছেন, তাঁদের কুরআন-সুন্নাহ ও নাক্শাবান্দিয়া-মুজাদ্দিদিয়া ত্বরীকতের আসল শিক্ষা এবং তত্ত্ব সম্পর্কে গভীর জ্ঞানার্জন-গবেষণা করা একান্ত প্রয়োজন। ব্যক্তিস্বার্থ ও পার্থিব লোভের কারণে গারাঙ্গিয়ার অলিকুল শিরোমণিগণের অতীত ঐতিহ্য যেন ম্লান না হয় এবং সেই দ্বীনি ঐতিহ্য যথাযথভাবে সমুন্নত রাখার প্রচেষ্টা সদা-সর্বদা অব্যাহত রাখা আমাদের সকলের ঈমানী দ্বায়িত্ব। এই দ্বায়িত্ব অবহেলায় আমাদেরকে অবশ্যই আল্লাহর কাটগড়ায় জবাবদীহি করতে হবে। আল্লাহ আমাদের এই দ্বীনি খেদমত কবুল করুন। আমীন

লেখক : প্রভাষক, চট্টগ্রাম সরকারী মডেল স্কুল এন্ড কলেজ।

তথ্যসূত্র :
১। শাহ ওয়ালী উল্লাহ দেহলভী (রাহ.)-“আল কাওলুল জামীল” ।
২। আল্লামা শাহ্ আবুল হাসান যায়দ ফারুকী মুজাদ্দিদী (রাহ.)-“হযরত মুজাদ্দিদী
আওর উন কে নাকিদীন”।
৩। সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নাদ্ভী (রাহ.)-“তারীখ-ই- দাওয়াত ওয়া আযীমাত”
৪। Dr. A.F.M Abu Bakar Siddique.- “Sheikh Ahmad Sirhindi (Rh.) and His performs”.
৫। ইসলামী বিশ্বকোষ, ইফাবা, ঢাকা।
৬। আহমদুল ইসলাম চৌধুরী, “আয়নায়ে ওয়াইসী”।