- Lohagaranews24 - https://lohagaranews24.com -

সাতকানিয়ায় দলীয় প্রার্থীকে বয়কটের ঘোষণা বিএনপির

নিউজ ডেক্স : সাতকানিয়া পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী এডভোকেট এ.জেড.এম মঈনুল হক চৌধুরী খোকনকে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে দলীয় নেতা-কর্মীরা। দলীয় প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণাসহ সকল ধরনের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছে নেতা-কর্মীদের।

আজ রবিবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদ গেইটে পৌরসভা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় এ ঘোষনা দেন।

প্রতিবাদ সভায় চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাতকানিয়া পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র নওয়াব মিয়া বলেন, “দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মতামত না নিয়ে তথাকথিত বিএনপির নামধারী এলডিপি নেতা এডভোকেট এ.জেড.এম মঈনুল হক চৌধুরী খোকনকে পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছে। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিএনপি নেতাদের বাদ দিয়ে এলডিপি নেতাকে মনোনয়ন দিয়েছে। মঈনুল হক চৌধুরী খোকন ২০১৬ সালে কর্ণেল (অবঃ) অলি আহমদ বীর বিক্রমের হাতে ফুল দিয়ে এলডিপিতে যোগদান করেন।”

তিনি আরো বলেন, “সাতকানিয়া পৌর এলাকা হলো বিএনপির শক্ত ঘাঁটি। পৌরসভা নির্বাচনে পরপর দুই বার বিএনপির প্রার্থী বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয় লাভ করেছে। সাতকানিয়া বিএনপির শত্রুদের প্ররোচনায় দলকে ধ্বংস করার জন্য বিএনপির নেতাদের বাদ দিয়ে এলডিপিকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। সাতকানিয়া বিএনপি পৌরসভা নির্বাচনে এ এলডিপি নেতার পক্ষে কাজ করবে না। আমরা তাকে বয়কট করলাম। দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের প্রতিও একই নির্দেশ থাকবে।”

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জসীম উদ্দিন আবদুল্লাহ বলেন, “চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা আহবায়ক কমিটিতে সাতকানিয়া পৌরসভার ৫ জন নেতা রয়েছে। পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী বাছাইয়ের ব্যাপারে কথা বলতে আমরা চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ানের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের কারো সাথে কোন ধরনের কথা না বলে আরো আগে এলডিপি নেতা এডভোকেট মঈনুল হক চৌধুরী খোকনের নাম প্রস্তাব করে কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেন। এলডিপি নেতার নাম প্রত্যাহার করে বিএনপির কাউকে প্রার্থী করার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের কথা শুনেননি। এখন যাকে দলীয় প্রার্থী করা হয়েছে তিনি ১৯৮৮ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করে জামানাত হারিয়েছেন। ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ের সময় অসহায় মানুষের ত্রাণ আত্মসাৎ করেছেন। স্থানীয় রাজনীতিতে তার কোন অবস্থান নাই। এমন একজন এলডিপি নেতাকে দলীয় প্রার্থী করে সাতকানিয়া বিএনপির কবর রচনা করার ব্যবস্থা করেছে। এটা বিএনপির বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এলডিপি মার্কা প্রার্থী এডভোকেট এ.জেড.এম মঈনুল হক চৌধুরী খোকনের পক্ষে কাজ করব না।”

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতা মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দিন, আবু তাহের বিএসসি, উপজেলা বিএনপি নেতা কেএম ফেরদৌস, সেলিম উদ্দিন, সাজেদুল আলম মিন্টু, মোতাহের মামুন, আবুল হোসেন, আবু তালেব, আবু বক্কর, নুরুল আমিন, মোঃ ইদ্রিচ, নেজাম উদ্দিন ও ফরিদুল আলম।

এদিকে, দলীয় প্রার্থীকে বয়কটের ঘোষনার বিষয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান জানান, দল থেকে এডভোকেট এ.জেড.এম মঈনুল হক চৌধুরী খোকনকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ভুল হতে পারে। কিন্তু দল যেহেতু তাকে প্রার্থী করেছে নেতা-কর্মীদের উচিত হলো তার পক্ষে কাজ করা। দলীয় মেয়র প্রার্থী এলডিপির রাজনীতির সাথে জড়িত কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, তিনি দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতি করেছেন। এক সময় সাতকানিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতিও ছিলেন। তবে মাঝখানে এলডিপিতে যোগদান করার বিষয়টিও সত্য। এরপরও দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক তার পক্ষে কাজ করা উচিত। যারা দলীয় প্রর্থীকে বয়কটের ঘোষনা দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে কিনা জানতে তিনি আবু সুফিয়ান বলেন এটা সময় বলে দিবে।

দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের বয়কটের ঘোষনার বিষয়ে কথা বলার জন্য বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী এডভোকেট এ.জেড.এম মঈনুল হক চৌধুরী খোকনের ব্যক্তিগত মোবাইলে একাধিকবার বার চেষ্টা করেও সাড়া মিলেনি। আজাদী অনলাইন