
নিউজ ডেক্স : সাতকানিয়ায় চার বছর বয়সী এক মাদ্রাসার ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে একই প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ-ঘটনায় ছাত্রীটির মা বাদী হয়ে গতকাল বুধবার দুপুরে সাতকানিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
গ্রেফতারকৃত শিক্ষক হলেন- মাওলানা রুহুল আমিন (৩৭)। তিনি কক্সবাজারের বাহারছড়া এলাকার নুরুল কবিরের ছেলে। গত ৩ এপ্রিল বিকেলে সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের চিববাড়ি আল মাদ্রাসাতুল ইসলামিয়া ফয়জুল উলুম হেফজখানা ও এতিমখানায় ওই যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
সাতকানিয়া থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের ওই মাদ্রাসার চার বছর বয়সী এক শিশু ছাত্রীকে শিক্ষক মাওলানা রুহুল আমিন গত দেড় মাস ধরে বিভিন্নভাবে যৌন নিপীড়ন করে আসছেন। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার ছাত্রীটি সকালে মাদ্রাসায় যায়। বিকেলে তাকে মাদ্রাসার একটি কক্ষে নিয়ে ওই শিক্ষক আবারো যৌন নিপীড়ন করেন। পরে বাড়িতে গেলে ছাত্রীটির মা তার গায়ে রক্ত দেখতে পেয়ে তাকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে সেখান থেকে অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে সাতকানিয়ায় তোলপাড় শুরু হলে সাতকানিয়া থানার ওসি তা আমলে নিয়ে গত মঙ্গলবার সকালে চিববাড়িস্থ ওই মাদ্রাসায় যান। প্রথমে মাদ্রাসার সব শিক্ষককে অফিসে ডেকে বিষয়টি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তারা অস্বীকার করেন। এ সময় সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নেজাম উদ্দীন অফিসে উপস্থিত ছিলেন। পরে ওসি সন্ধি শিক্ষকদের সাতকানিয়া থানায় নিয়ে এসে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করলেও তারা তখনও ঘটনায় কে জড়িত বিষয়টি ওসির কাছে স্বীকার করেনি। পরে ছাত্রীটিকে থানায় এনে যৌন-নিপীড়নকৃত শিক্ষককে সনাক্ত করা হয়। অন্যান্য শিক্ষকদের ছেড়ে দিয়ে ওই শিক্ষক রুহুল আমিনকে গ্রেফতার করা হয়।
গতকাল বুধবার দুপুরে ছাত্রীটির মা বাদী হয়ে ওই শিক্ষককে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ ব্যাপারে ছাত্রীটির মা বলেন, মাদ্রাসা থেকে ঘরে এসে আমার মেয়েটি কান্না করতে থাকে। পরে দেখি তার বিশেষ স্থান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। তাৎক্ষনিক তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে ওই শিক্ষকের রিরুদ্ধে মামলা করেছেন বলে জানান।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল হোসেন বলেন, নৈতিক অবক্ষয় চরম পর্যায়ে পৌঁছায় সমাজে এরকম ঘটনা ঘটছে। এ জন্য সামাজিক সচেতনতা খুবই জরুরি। এ ঘটনার খবর পেয়ে গত বুধবার সকালে মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষকদের থানায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে শিশু ছাত্রীটির সনাক্ত মতে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক রুহুল আমিনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ছাত্রীটির মা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। -ইত্তেফাক