- Lohagaranews24 - https://lohagaranews24.com -

লোহাগাড়াসহ ১৫ উপজেলায় ৯৪ হাজার কম্বল দিচ্ছে সরকার

প্রতিকী ছবি

প্রতিকী ছবি

নিউজ ডেক্স : আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, স্বাভাবিকভাবে ডিসেম্বর মাসে চট্টগ্রামের সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা থাকার কথা ১৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ গতকাল রোববার রেকর্ড হয়েছে ১৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল।

একইভাবে চলতি মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকার কথা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু গতকাল রেকর্ড হয়েছে ২২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। শুধু গতকালকের পরিসংখ্যান নয়। প্রায় এক সপ্তাহ ধরেই স্বাভাবিকের চেয়ে কম তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে চট্টগ্রামে। অবশ্য আবহাওয়ার এ পরিবর্তনকে স্বাভাবিক হিসেবেই দেখছেন আবহাওয়াবিদগণ। তারা বলছেন, সাধারণত মধ্য ডিসেম্বর থেকে মধ্য ফেব্রয়ারি পর্যন্ত শীতের সময় ধরা হয়। এ সময় সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থান করে। ফলে বাংলাদেশে সূর্যের রশ্মি পড়ে তির্যকভাবে। তাই কমতে থাকে তাপমাত্রা। বরং তাপমাত্রা না কমাটা অস্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেছেন আবহাওয়াবিদ শেখ ফরিদ আহমেদ। -দৈনিক আজাদী

এদিকে তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে নগরী ও ১৪ উপজেলায় তীব্রতা বাড়ছে শীতের। শীতের এ তীব্রতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জনজীবনে নেমে আসতে পারে চরম দুর্ভোগ। এরই মাঝে শীতের তীব্রতায় দুর্ভোগ বেড়েছে ছিন্নমূল লোকদের। শীত থেকে বাঁচতে ছিন্নমূলের জনসাধারণ রাত জাগছেন বিভিন্ন খড়কুটো জ্বালিয়ে।

এদিকে শীতার্ত দুঃস্থ ও অতিদরিদ্র জনসাধারণের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভাণ্ডার তহবিল থেকে প্রতিটি উপজেলায় বিতরণ করা হচ্ছে কম্বল। চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলার জন্য ৯৪ হাজার ৩০০ পিস কম্বল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বরাদ্দকৃত কম্বলের মধ্যে মীরসরাই উপজেলার ৮ হাজার ২৮০ পিস, সীতাকুণ্ড উপজেলায় ৪ হাজার ৬০০ পিস, সন্দ্বীপ উপজেলায় ৭ হাজার ৩৬০ পিস, ফটিকছড়ি উপজেলায় ৮ হাজার ৭৪০ পিস, হাটহাজারী উপজেলায় ৬ হাজার ৯০০ পিস, রাউজান উপজেলায় ৬ হাজার ৯০০ পিস, রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ৭ হাজার ৩৬০ পিস, কর্ণফুলী উপজেলায় ২ হাজার ৩০০ পিস, বোয়ালখালী উপজেলায় ৪ হাজার ৬০০ পিস, পটিয়া উপজেলায় ৮ হাজার ২৮০ পিস, আনোয়ারা উপজেলায় ৫ হাজার ৬০ পিস, চন্দনাইশ উপজেলায় ৪ হাজার ৬০০ পিস, সাতকানিয়া উপজেলায় ৮ হাজার ২৮০ পিস, লোহাগাড়া উপজেলায় ৪ হাজার ১৪০ পিস এবং বাঁশখালী উপজেলায় বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৬ হাজার ৯০০ পিস কম্বল।

এ বিষয়ে হাটহাজারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন জানান, উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদ এবং পৌরসভার জন্য ৪৬০ পিস করে কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। কম্বলগুলো সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এদিকে পরশু রাত থেকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কম্বল বিতরণ শুরু করেছেন বোয়ালখালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আছিয়া খাতুন। তিনি বলেন, প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-সদস্যদের মাধ্যমে দুঃস্থ শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। আমি নিজে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে কম্বল তুলে দিয়েছি।

কমছে তাপমাত্রা : পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত শনিবার চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ ২২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। ওইদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম।

আগেরদিন শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। একইদিন রেকর্ড হওয়া সর্বনিম্ন ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ ২১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। একইদিন সর্বনিম্ন ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। নগরবাসী বলছেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে নগরে বৃদ্ধি পেয়েছে শীতের তীব্রতা। এতে ঠাণ্ডার সঙ্গে মাঝারি কুয়াশা প্রভাব ফেলছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়।

চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার (আজ সন্ধা ৬টা) আবহাওয়ার পূর্বাভাস সম্পর্কে জানান, আজ আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সেই সাথে মধ্য রাত থেকে সকাল পর্যন্ত নদী অববাহিকা ও তদসংলগ্ন এলাকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা বিরাজ করতে পারে। রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। বাতাসের দিক ও গতিবেগ উত্তর/উত্তর পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮-১২ কি. মি. বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।