- Lohagaranews24 - https://lohagaranews24.com -

প্রবেশের অপেক্ষায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গা

rohinga_3

নিউজ ডেক্স : মিয়ানমার সামরিক জান্তার নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গা উখিয়া সীমান্তের আনজুমানপাড়া জিরো পয়েন্ট নাফনদীর এপারে অবস্থান করছে সোমবার রাত থেকে। অভুক্ত এসব রোহিঙ্গারা এপারে চলে আসার জন্য চেষ্টা করলেও বাধার মুখে তারা আসতে পারছে না। তবে কিছু কিছু এনজিও সংস্থা ওই সব রোহিঙ্গাদের শুকনো খাবার বিতরণ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, জড়ো হওয়া রোহিঙ্গাদের অনেকেই ভিন্ন পথে ক্যাম্পে চলে আসছে। এ প্রসঙ্গে সীমান্তে দায়িত্বরত বিজিবি’র কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা বলেন, উপরের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের এ অবস্থায় থাকতে হবে।
সোমবার সীমান্তের নাফ নদী পার হয়ে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক রোহিঙ্গা বালুখালী, কুতুপালং, হাকিমপাড়া, জামতলী, শফিউল্লাহ কাটাসহ কক্সবাজার টেকনাফ সড়কের আশেপাশে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। প্রচণ্ড গরম আর বৃষ্টিতে এসব রোহিঙ্গাদের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছে।
শফি উল্লাহ কাটা বস্তিতে আশ্রয় নেয়া হাফেজ ফয়েজ উল্লাহর সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি বুচিডং শহরের রইচ্ছং গ্রামের বাসিন্দা। তিনিসহ প্রায় ১৪টি গ্রামের ৮০ হাজার রোহিঙ্গা এ সপ্তাহ আগে ভিটে মাটি ছেড়ে এদেশে পালিয়ে আসার জন্য রওনা দেয়। পাহাড় পর্বত, বন জঙ্গল, খাল-বিল, নদী নালা পেরিয়ে আসা এসব রোহিঙ্গারা রোববার মিয়ানমারের গভীর অরণ্য ফতেয়ার পাড়া নামক ঢালায় বিশ্রাম নেন।
রোববার সন্ধ্যায় মিয়ানমার সামরিক জান্তা ও সেখানকার সশস্ত্র রাখাইন যুবকেরা এসব রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে।
প্রত্যক্ষদর্শী কালা পুতু (২৮) জানায়, এ অবস্থায় যারা দৌঁড়ে পালাতে পেরেছে তারাই মূলত সোমবার ভোর রাতে আনজুমানপাড়া সীমান্তে পৌঁছাতে পেরেছে। নারী-শিশু, বয়োবৃদ্ধ ও তাদের স্বজনরাসহ আরো প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গা গতকাল মঙ্গলবার আনজুমানপাড়া সীমান্তে জড়ো হলেও তারা এপারে আসতে পারছে না।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী আওয়ামী লীগ নেতা এম. এ মনজুর জানান, ‘আনজুমান পাড়া সীমান্তে প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রচণ্ড তাপমাত্রায় এসব রোহিঙ্গারা কাহিল হয়ে পড়েছে’।
বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলা ও শিশুরা অনাহারে অর্ধাহারে এবং পানীয় জলের অভাবে কাতরাচ্ছে। এসব রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের জন্য বিভিন্ন সংস্থা ঘটনাস্থলে গেলেও বাঁধার মুখে তাদের ফিরে আসতে হচ্ছে বলে এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বেশ কিছু রোহিঙ্গা বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে বিজিবি’র চোখ ফাঁকি দিয়ে এপারে চলে আসতে সক্ষম হয়েছে বলে বালুখালী ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, আনজুমান পাড়া সীমান্তের শূন্য রেখায় এপার ওপারে প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশের অপেক্ষায় জড়ো হয়ে রয়েছে। -সুপ্রভাত