- Lohagaranews24 - https://lohagaranews24.com -

দ্বিতীয় দিন স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি দুদকের মুখোমুখি

নিউজ ডেক্স : স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ দুদকের তলবে দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত হয়েছেন।

আজ (১৩ আগস্ট) তাকে করোনা চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের চুক্তিসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাপারে দুদক কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। গতকালের মতো আজও তিনি সকাল ১০টার আগেই দুদক কার্যালয়ে উপস্থিত হন।

গতকাল ১২ আগস্ট তিনি প্রথমদিনের মতো দুদকের তলবে হাজির হন। দুদক কর্মকর্তারা এদিন পিপিই ও মাস্ক কেনাকাটায় দুর্নীতি নিয়ে প্রায় পাঁচঘন্টাব্যাপী তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাইরে বেরিয়ে এসে তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় তিনি নিজেকে দক্ষ ও সৎ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে দাবি করে বলেন, তিনি কোনো প্রকার দুর্নীতির সাথে জড়িত নন। দুর্নীতির সাথে যারা জড়িত তাদের শাস্তি হওয়া উচিত এবং এ ব্যাপারে তিনি দুদককে সর্বাত্মক সহায়তা করবেন বলে জানান।

গত ৬ আগস্ট মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও সিএমএসডির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসার জন্য নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জামাদি ক্রয়সহ বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহের নামে অন্যদের যোগসাজশে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ-পূর্বক অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগটি সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার বক্তব্য নেয়ার জন্য তলব করা হয়।

অন্যদিকে দুদক পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা স্বাক্ষরিত অপরে একপত্রে আগামী ১৩ আগস্ট অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদকে তলব করা হয়েছে। এই পত্রে বলা হয়, রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যানের প্রতারণার বিষয়ে দুদকে চলমান অনুসন্ধানের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাকে তলব করা হয়েছে।

শেখ মোহাম্মদ ফানাফিল্যা স্বাক্ষরিত অপর এক পত্রে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক ডা. মো. আমিনুল হাসান, উপপরিচালক মো. ইউনুস আলী, ডা. মো. শফিউর রহমান ও গবেষণা কর্মকর্তা ডা. মো. দিদারুল ইসলামকে ১২ আগস্ট তলব করা হয়েছে।

চাকরির নির্ধারিত মেয়াদ শেষে দুই বছরের চুক্তিতে ছিলেন আবুল কালাম। আগামী বছরের ১৪ এপ্রিল তার সেই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শুরু হলে চিকিৎসা কার্যক্রমসহ নানা বিষয় নিয়ে সমালোচিত হন ডিজি আবুল কালাম আজাদ। এন-৯৫ মাস্কের মোড়কে বিভিন্ন হাসপাতালে সাধারণ মাস্ক সরবরাহ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সমালোচিত হন ডিজি।

সর্বশেষ রিজেন্ট হাসপাতালের কেলেঙ্কারিতে সমালোচনায় পড়েন তিনি। সরকার রিজেন্ট হাসপাতালের দুটি শাখাকে (উত্তরা ও মিরপুর) কোভিড চিকিৎসার দায়িত্ব দিয়ে সমঝোতা স্মারক সই করে। কিন্তু র্যাবের অভিযানে বেরিয়ে আসে, হাসপাতালের মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সের বিষয়টি। এছাড়া নমুনা পরীক্ষা না করেই সনদ দিত রিজেন্ট।

এ নিয়ে সমালোচনার শুরু হলে ব্যাখ্যা দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্যাখ্যায় জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ওই ব্যাখ্যায় ক্ষুব্ধ হয় মন্ত্রণালয়। এরপর স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।

জবাবে আবুল কালাম আজাদ জানান, তৎকালীন স্বাস্থ্য সচিব আসাদুল ইসলাম এ বিষয়ে অধিদফতরের পরিচালককে (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) মৌখিক নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার নির্দেশেই মন্ত্রীর উপস্থিতিতে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করে অধিদফতর।