- Lohagaranews24 - https://lohagaranews24.com -

চমেক হাসপাতাল প্রশাসন ডাক্তারদের হাজিরা নিশ্চিতে কঠোর হচ্ছে

cmch-pic-1837560333

নিউজ ডেক্স : ডাক্তারদের নির্ধারিত সময়ে হাজিরা নিশ্চিতে কঠোর হচ্ছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল প্রশাসন। এ লক্ষ্যে ১৫টি বায়োমেট্রিক মেশিন বসানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । এ তথ্য নিশ্চিত করে ১৫টি মেশিন (বায়োমেট্রিক) চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জালাল উদ্দিন।

হাসপাতাল প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কর্মস্থলে উপস্থিতির ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম চলে আসছে চমেক হাসপাতালে। নিয়মনুযায়ী সকাল ৮টায় হাসপাতালে উপস্থিত হওয়ার কথা থাকলেও বেশির ভাগ চিকিৎসকই এ নিয়ম মানেন না। নিয়ম না মানার এ দলে রয়েছেন নার্সসহ অন্যান্য কর্মকর্তা–কর্মচারিরাও। তবে ঠিক সময়ে কর্মস্থলে উপস্থিতির ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের নিয়েই অভিযোগ বেশি। এ নিয়ে প্রায়ই শোকজ করা হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। কিন্তু শোকজ করার পর কয়েকদিন ঠিক থাকলেও পরবর্তীতে আবারো সেই একই চিত্র। নির্ধারিত সময় মেনে কর্মস্থলে না আসায় ইতোমধ্যে অনেক চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা–কর্মচারিকে অফিসে ডেকে বকা–ঝকাও করেছে হাসপাতাল প্রশাসন। কিন্তু পরিস্থিতির তেমন পরিবর্তন হয়নি। ফলে এ নিয়ে কঠোর অবস্থানে যেতে বাধ্য হয়েছে হাসপাতাল প্রশাসন। নির্ধারিত সময়ে উপস্থিতির বিষয়টি নজরদারিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বর্তমানে প্রতিনিয়ত রাউন্ড দেয়া হচ্ছে জানিয়ে হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জালাল উদ্দিন বলেন, চিকিৎসক–নার্সসহ হাসপাতালের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা–কর্মচারিদের নির্ধারিত সময়ে কর্মস্থলে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে আমরা নজরদারি বাড়িয়েছি। হাসপাতালের উপ–পরিচালককে এ বিষয়ে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কড়া নির্দেশনা রয়েছে উল্লেখ করে হাসপাতাল পরিচালক বলেছেন– শুধু উপস্থিতির এজেন্ডা নিয়ে মন্ত্রণালয়ে সম্প্রতি একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। চিকিৎসক–নার্সসহ হাসপাতালের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা–কর্মচারির নির্ধারিত সময়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কড়া নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমরা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করছি।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়– স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দেশের বিভাগীয় শহরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোর পরিচালক, বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের পরিচালক ও বেশ কয়েকটি জেলার সিভিল সার্জন অংশ নেন। বৈঠকে চিকিৎসক–নার্সসহ হাসপাতালের কর্মকর্তা–কর্মচারিদের নির্ধারিত সময়ে উপস্থিতি নিশ্চিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বায়োমেট্রিক মেশিন বসানোর নির্দেশনা দেয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পর গত ১৩ মার্চ এ বিষয়ে একটি আদেশ জারি করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম মুজহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়– স্বাস্থ্য অধিদফতর ও এর আওতাধীন সকল স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারিগণ অফিসে নির্ধারিত সময়ে আগমন ও প্রস্থানকালে বায়োমেট্রিক মেশিনে ফিঙ্গার প্রিন্ট প্রদান পূর্বক অফিসে আগমন ও প্রস্থান করিবেন। যাহারা বায়োমেট্রিক মেশিনে ফিঙ্গার প্রিন্ট প্রদানে বিরত থাকবেন তাদেরকে কর্মস্থলে অননুমোদিত অনুপস্থিত হিসেবে গন্য করা হবে। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়।

কিন্তু বায়োমেট্রিক মেশিন না থাকায় এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে পারছে না চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । এর প্রেক্ষিতে ১৫টি বায়োমেট্রিক মেশিন চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে চিঠি দিয়েছে হাসপাতাল প্রশাসন। হাসপাতাল প্রশাসন বলছে– চিকিৎসকদের মধ্যে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারি অধ্যাপক, মেডিকেল অফিসারসহ প্রতিটি পদ ভেদে এক একটি মেশিন স্থাপনের চিন্তা আছে। একই ভাবে নার্স এবং কর্মকর্তা–কর্মচারিদের ক্ষেত্রেও ক্যাটাগরি হিসেবে আলাদা আলাদা মেশিন স্থাপন করা হবে। এ জন্য সব মিলিয়ে ১৫টি মেশিন চাওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে হাসপাতাল পরিচালক বলেন– আমরা ১৫টি বায়োমেট্রিক মেশিন চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে চিঠি দিয়েছি। কথাও বলেছি। মেশিন দেওয়া হবে বলে অধিদফতরের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে।