- Lohagaranews24 - https://lohagaranews24.com -

চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় ১ হাজার ৯৬৪টি দুর্গাপূজার আয়োজন

নিউজ ডেক্স : এ বছর চট্টগ্রাম জেলার আওতাধীন ১৫ উপজেলায় সর্বজনীন ১ হাজার ৫৫৩টি এবং পারিবারিক ৪১১টি মণ্ডপ সহ মোট ১ হাজার ৯৬৪টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দেবীর বোধনের মাধ্যমে শুরু হওয়া পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) বিজয়া দশমীতে।

রোববার (১০ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ-চট্টগ্রাম জেলা আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। বাংলানিউজ

লিখিত বক্তব্যে সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা ও উৎসবাদি আয়োজনের লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালে গঠিত হয় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদ।  ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ গঠিত হওয়ার পর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ সংগঠন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের চট্টগ্রাম জেলা শাখায় রূপান্তরিত হয়।

তিনি বলেন, গত ৬ অক্টোবর বোয়ালখালীর মেধস আশ্রমে মহালয়া উদযাপনের মাধ্যমে জেলাব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। করোনার সংক্রমণ রোধে গত বছরের মতো এবারও উৎসব পরিহার করে মাঙ্গলিক আনুষ্ঠানিকতায় হবে দুর্গাপূজা। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা আয়োজনের লক্ষ্যে ৪ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সমন্বয় সভা, ৫ অক্টোবর পুলিশ সুপারের সঙ্গে আইনশৃংখলা বিষয়ক সভা এবং ৯ অক্টোবর চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজির সঙ্গে পৃথক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, র‌্যাবসহ সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা সংস্থার সদস্যরা দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন বলে এসব সভায় জানানো হয়েছে। এছাড়া সকল উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার অফিসার ইনচার্জরা পৃথক সভায় পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা ও সার্বিক বিষয়ে কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন পর্যায়ের পূজামণ্ডপে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক টিম রাখা, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের ফোন নম্বর দৃশ্যমান স্থানে ঝুলিয়ে রাখা, জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করা, পূজামণ্ডপ পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের জন্য খোলামেলা রাখা, পূজা ও পুষ্পাঞ্জলি প্রদানের সময় মাইক বা সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা, ডিজে পরিহার করা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গান-বাজনা, মেলা, নাটক, সমাবেশ, আরতি প্রতিযোগিতা ও শোভাযাত্রা পরিহার করা, পূজামণ্ডপে আগত সবার মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করা, মণ্ডপে প্রবেশমুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার অথবা সাবান-পানি রাখা, মহিলা ও পুরুষদের জন্য আলাদা  প্রবেশ ও প্রস্থানের ব্যবস্থা রাখা, আতশবাজি বা পটকা ফুটানো পরিহার করা, সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা, অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা রাখা, বিদ্যুতের বিকল্প জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখা, বিজয়া দশমী শুক্রবার হওয়ায় জুমার নামাজের পরে সূর্যালোক থাকা অবস্থায় প্রতিমা নিরঞ্জন সম্পন্ন করতে আয়োজকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে প্রতিমা নিরঞ্জন না করতে সবার প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।  

সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার দেব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেশের সকল উপজেলায় সরকারি উদ্যোগে ১টি মডেল মন্দির নির্মাণ, বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করে চণ্ডীতীর্থ মেধস আশ্রমের সংস্কার ও সড়ক উন্নয়ন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে ফাউন্ডেশনে রূপান্তর করা, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৪ দিন সরকারি ছুটি, দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণে আইন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন যথাযথ বাস্তবায়নে জটিলতা নিরসন করতে আবেদন জানাচ্ছি।  

এসময় উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক নারায়ণ চৌধুরী, বিপুল দত্ত, বিজয় কৃষ্ণ বৈষ্ণব, বিশ্বজিৎ পালিত, উত্তম শর্মা, কল্লোল সেন, সাগর মিত্র, রিমন মুহুরী, সুভাষ চৌধুরী টাংকু, দোলন মজুমদার, রাজীব শীল, কাজল শীল, অধ্যাপক শিপুল দে প্রমুখ।

এদিকে চট্টগ্রাম মহানগরের প্রধান পূজামণ্ডপ জেএম সেন হল প্রাঙ্গণসহ ১৬টি থানায় ব্যক্তিগত, ঘটপূজাসহ ২৭৬টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য।