- Lohagaranews24 - https://lohagaranews24.com -

একমাত্র লাশই শওকতের ভ্যানের যাত্রী

নিউজ ডেক্স : সড়ক দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা, খুন, গুমসহ অপমৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ কেস মানেই লাশের ময়নাতদন্ত। আর ময়নাতদন্ত মানেই লাশ ঘটনাস্থল থেকে লাশকাটা ঘরে নিয়ে যাওয়া। নিজের ভ্যানে অতি যত্নে লাশ বহনের এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করে চলেছেন বৃদ্ধ শওকত ওরফে ‘লাশ টানা শওকত’।

খুন, গুম, হত্যা, অজ্ঞাত লাশ বহন করেই জীবিকা নির্বাহ করেন শওকত। নিজের ভ্যানে করে এসব মরদেহ বয়ে বেড়ান তিনি। লাশ টানার কারণে তার ভ্যানে ওঠে না অন্য কোনো যাত্রী। ফলে তার ভ্যানের একমাত্র যাত্রী মরদেহ।

আর কোনো উপার্জনের পথ এবং স্থায়ী কোনো বেতন ভাতার ব্যবস্থা না থাকায় কখনও কখনও হাসপাতালে লাশ বহনের কাজও করে থাকেন ৭০ বছর বয়সী শওকত। জীবিকার তাগিদে দিনভর হাসপাতালের সামনে লাশের অপেক্ষায় বসে থাকেন তিনি।

মাগুরার বেলনগর এলাকার বাসিন্দা শওকত মুসলিম হয়েও লাশ টানার কাজ করায় পরিবার ও সমাজ সবার কাছেই তাচ্ছিল্যের পাত্র হয়ে বেঁচে আছেন।

বৃদ্ধ শতকত বলেন- দিন-রাত, ঝড় কি বৃষ্টি থানা থেকে ডাক এলেই ছুটে যেতে হয় তাকে। মাগুরা সদর থানা এলাকায় ৩০ বছর ধরে এই কাজের জন্য একমাত্র লোক তিনি। এটা তার চাকরি না হলেও কোনো ছুটি বা না বলার সুযোগ নেই। এ কাজে জীবন পেরিয়ে গেলেও জোটেনি কোনো স্থায়ী বন্দোবস্ত বা ভাতার ব্যাবস্থা। করোনাকালেও তার কাপালে জোটেনি কোনো সহযোগিতা। ইউনিয়ন, পৌরসভা, থানা, উপজেলার কেউ খোঁজ নেয়নি তার। শেষ জীবনে এসে নিজের ও পরিবার নিয়ে শঙ্কিত শওকত চাইছেন ভাতা কিংবা একটি নিশ্চিত জীবিকা।

ময়নাতদন্তের আগে মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনে মরদেহের সুরক্ষা নিশ্চিত বিশেষ গুরুতপূর্ণ একটি বিষয়। মর্গে লাশ বয়ে এনে ডাক্তার, পুলিশ, ডোম ও বাদী পক্ষের উপস্থিতির আগ মুহূর্ত পর্যন্ত সেই লাশ পাহারায় আস্থার সঙ্গে দায়ীত্ব পালন করে এলেও নিজের অনিশ্চিত জীবিকা আর ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত ‘লাশ টানা শওকত’। জাগো নিউজ