- Lohagaranews24 - https://lohagaranews24.com -

একটি নির্মম সত্য ঘটনা : আমি লজ্জিত, আমি লোহাগাড়াবাসী

530

মিছবাহ উদ্দিন রাজিব : গত জুমাবার (১৫ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজার সি-সাইড হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারিতে আমার একটি পুত্র সন্তান জন্মলাভ করে। খুব ইচ্ছে ছিল ডেলিভারি আমার জন্মস্থান লোহাগাড়াতে করার। তাই শুরু থেকেই আমি লোহাগাড়ার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে স্ত্রীকে চিকিৎসা করিয়েছি। বাচ্চা মায়ের গর্ভে থাকাকালে ৭ থেকে ৮ মাস পর্যন্ত ডাক্তার ৩ বার আল্ট্রাসনোগ্রাফি করিয়েছে। আল্ট্রাসনোগ্রাফির পর ডাক্তার বলে পজিশন ঠিক নেই এবং বাচ্চা দূর্বল। উক্ত ডাক্তারে সাথে আল্ট্রাসনোগ্রাফির টেকনিশিয়ানও একি ধরনের কথা বলে।

এদিকে ডাক্তারের কথা শুনে আমার স্ত্রী ভয়ে সম্পূর্ণ মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। তার অবস্থা দেখে আমিও টেনশনে ছিলাম।  পরবর্তীতে আমার এক ঘনিষ্ট ডাক্তারের কাছে গেলাম, তাকে বিষয়টি খুলে বললাম। তিনি বললেন ৭ থেকে ৮ মাস পর্যন্ত বাচ্চার পজিশন ঠিক থাকতে হবে এমন কোন কথা নেই। একটু এদিক-সেদিক হতেও পারে। পজিশন ঠিক হয় ডেলিভারির কিছু দিন আগে অথবা ডেলিভারি হওয়ার আগ মূহুর্তে।

ডাক্তারেরা ভয় দেখিয়ে রোগীকে মানসিকভাবে দূর্বল করে ফেলে, যাতে ডেলিভারি হওয়ার সময় বাচ্চাটি স্বাভাবিক প্রসব না হয়। যার ফলে বাধ্যতামূলক সিজার করতে হবে। পরিচিত ডাক্তারের পরামর্শ মতে ১৫ দিন আগে স্ত্রীকে নিয়ে কক্সবাজার শশুর বাড়িতে অবস্থান করলাম। সেখানে ডাক্তার জমিলাকে দেখালাম। তিনি চেকআপ করে আগের প্রেসক্রিপশনগুলো দেখে অবাক হয়ে বললেন, আপনার স্ত্রীর রক্ত শূন্যতা ছিল। কিন্তু রক্ত বৃদ্ধির জন্য ডাক্তার এতদিন কোন ঔষুধ দেয়নি কেন ? তিনি নিশ্চিত সিজার করাতে চেয়েছিলেন। তারপর ডাক্তার জমিলা রক্ত বৃদ্ধির ঔষুধ দিলেন এবং নতুন করা আল্ট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট দেখে বললেন চিন্তার কিছু নেই, আল্লাহর রহমতে নরমাল ডেলিভারি হবে। বাচ্চাও স্বাভাবিক আছে। একটু টেনশন মুক্ত হলাম। ঠিক ১৫ দিন পর ওই হাসপাতালে আল্লাহর রহমতে নরমাল ডেলিভারি হল। ডেলিভারির পর মাত্র এক রাত হাসপাতালে থাকতে হয়েছে। আল্লাহর রহমতে বর্তমানে মা-ছেলে দু’জনই সুস্থ আছে।

কষ্ট পেলাম এবং লজ্জিত হলাম লোহাগাড়ার মানুষ হয়েও কেন আজকে আমাকে কক্সবাজারে আমার সন্তানের ডেলিভারি করাতে হল ?  লোহাগাড়ায় এতগুলো হাসপাতাল থেকে লাভ কি ? এই লজ্জা কার ??

লেখক : সভাপতি, লোহাগাড়া দোকান কর্মচারী পরিষদ ও সদস্য, লোহাগাড়া বটতলী শহর পরিচালনা কমিটি।