- Lohagaranews24 - https://lohagaranews24.com -

অলির চেয়ে নির্ভরশীলদের আয় বেশি

E-3-1

নিউজ ডেক্স : লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) সভাপতি অলি আহমদ বীর বিক্রমের চেয়ে তার নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় বেশি। চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামায় তিনি নির্ভরশীলদের আয় দেখান ১৮ লাখ ৪৩ হাজার ৪৫৫ টাকা। এছাড়া অলি আহমেদ নিজের আয় দেখিয়েছেন ১৬ লাখ ২৪ হাজার ৯৩ টাকা। অন্যদিকে স্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নামে রাজধানীর মহাখালীতে পাঁচতলা দালান রয়েছে উল্লেখ করলেও মূল্য দেখাননি তিনি। এছাড়া স্ত্রীর নামে নগরীর লালদীঘির পাড় এলাকায় পাঁচ তলা ভবনের এক চতুর্থাংশ মালিকানা আছে বলে তথ্য দেন। তবে সেটিরও মূল্য দেখাননি তিনি। খবর দৈনিক আজাদীর।

হলফনামার তথ্যমতে, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে অলি আহমদের কাছে মোট ১ কোটি ১৭ লাখ ২৪ হাজার ৫৪৫ টাকার সম্পদ রয়েছে। এরমধ্যে স্থাবর সম্পদ রয়েছে ৩৫ হাজার টাকা ও অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ১ কোটি ১৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫৪৫ টাকার। তবে স্ত্রীর নামে স্থাবর সম্পদ দেখানো না হলেও অস্থায়ী সম্পদ দেখিয়েছেন ৬২ লাখ ৬৮ হাজার ৭৭১ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজের নামে ৫ কাঠা অকৃষি জমি। যার অর্জনকালীন মূল্য ১৮ হাজার টাকা। এছাড়া মহাখালীতে একটি ৫ তলা ভবন নিজের নামে ও নগরীর লালদীঘি এলাকায় স্ত্রীর নামে ৫ তলা ভবনের এক চতুর্থাংশ মালিকানা দেখিয়েছেন তিনি। তবে দুই ক্ষেত্রেই তিনি টাকার অংক উল্লেখ করেননি। এছাড়া মহাখালীতে স্ত্রীর নামে দুটি ফ্ল্যাটের মালিকানা দেখিয়েছেন। সেগুলোরও তিনি মূল্য দেখাননি। এছাড়া ২৫ একর রাবার বাগানের ৫ শতাংশ মালিকানার অর্জনকালীন সময়ের মূল্য দেখান ১৭ হাজার টাকা। অন্যদিকে অলি আহমদ বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ১৬ লাখ ২৪ হাজার ৯৩ টাকা। তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় দেখান ১৮ লাখ ৪৩ হাজার ৪৫৫ টাকা। বার্ষিক আয়ের মধ্যে বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান ভাড়া থেকে আয় করেন ১০ লাখ ৭৪ হাজার ৪৩১ টাকা। এছাড়া বার্ষিক পেনশন পান ৫ লাখ ৬ হাজার ২৭৭ টাকা ও ব্যাংক মুনাফা থেকে আয় হয় ৪৩ হাজার ৩৮৫ টাকা। অন্যদিকে অলি আহমদের নির্ভরশীলরা বাড়ি ভাড়া, দোকান থেকে বার্ষিক আয় করেন ১৮ লাখ ৩৯ হাজার ৮৫৯ টাকা। এছাড়া ব্যাংক মুনাফা থেকে ৩ হাজার ৫৯৬ টাকা নির্ভরশীলরা আয় করেন বলে জমা দেয়া হলফনামাতে তিনি তথ্য দেন।

অপরদিকে অস্থাবর সম্পদের মধ্যে অলি আহমদের কাছে নগদ টাকা আছে ৩৮ লাখ ৪২ হাজার ২৪৫ টাকা, স্ত্রীর কাছে আছে ২৭ লাখ ৭৪ হাজার ৭৩৭ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের কাছে জমা আছে ১৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৫২ টাকা এবং স্ত্রীর কাছে ৫ লাখ ৯৯ হাজার ১৩৪ টাকা। এছাড়া পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে নিজের নামে বিনিয়োগ আছে ৮ লাখ ৩৪ হাজার ৭৫৮ টাকা। এছাড়া নিজের নামে ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের মাইক্রোবাস ও ৪০ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯০ টাকা দামের একটি পাজেরো জিপ রয়েছে বলে হলফনামাতে তথ্য দেন তিনি। অন্যদিকে স্ত্রীর নামে আছে ৪ লাখ টাকার আরেকটি জিপ। এছাড়া নিজের নামে ৫ হাজার টাকার ও স্ত্রীর নামে ৭৫ হাজার টাকার ২৫ তোলা স্বর্ণ আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। অপরদিকে নিজের নামে ইলেকট্রনিক সামগ্রী দেখিয়েছেন ৫ লাখ ৪১ হাজার ৫০০ টাকার এবং স্ত্রীর নামে দেখান ৬ লাখ ৫৪ হাজার ৯০০ টাকার। অপরদিকে নিজের নামে ৩ লাখ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকার আসবাবপত্র বলে হলফনামায় উল্লেখ করেন তিনি। অন্যদিকে অস্থাবর সম্পদে নিজের নামে ৭০ হাজার টাকার একটি শর্টগান রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে গত ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনের হলফনামাতে অলি আহমদ বার্ষিক আয় দেখান ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৮ টাকা ও নির্ভরশীলদের আয় দেখান ৪ লাখ ৪১ হাজার ৬২৬ টকা। স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ দেখান ৩৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫৬৬ টাকা। স্ত্রীর নামে ২৫ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩২ টাকার অস্থাবর সম্পদ দেখান। তবে হলফনামাতে স্থাবর সম্পদ দেখানো হলেও সেগুলো মূল্য উল্লেখ করেননি তিনি। হলফনামাতে শিক্ষাগত যোগ্যতা পিএইচডি ডিগ্রি বলে তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়া গত সংসদ নির্বাচনে ১৩ লাখ ৬১ হাজার ৫৮৬ টাকার ঋণ ছিল উল্লেখ করলেও এবার কোনো ঋণ নেই বলে হলফনামাতে তথ্য দেন। ইতোপূর্বে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন জানিয়ে ভোটারদের দেয়া প্রতিশ্রুতির শতভাগ বাস্তবায়ন করেছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেন অলি আহমদ।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের নির্বাচনে জোটগত সিদ্ধান্তের কারণে অলি আহমদ ও তার দল এলডিপি নির্বাচনে অংশ নেননি।