- Lohagaranews24 - https://lohagaranews24.com -

অতিভারী বৃষ্টিতে নাকাল চট্টগ্রাম!

নিউজ ডেক্স : ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিতে বেহাল দশা হয়েছে চট্টগ্রাম নগরের নিচু এলাকায়। হাঁটু-পানি, বুক-পানি পেরিয়ে কোথাও কোথাও গলা সমান পানিতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে মানুষকে। কিছু কিছু এলাকা পানিবন্দী হওয়ায় দিনভর ছিল অচলাবস্থা।

রোববার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ৯৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করেছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আবহাওয়াবিদ ড. মু. শহিদুল ইসলাম। বাংলানিউজ 

তিনি জানান, চট্টগ্রাম নদী বন্দরকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সোমবার (৭ জুন) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও পাশ্ববর্তী এলাকায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। বিকেল ৩টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছিল ৭৯ দশমিক ৪ মিলিমিটার।  

বহদ্দারহাট থেকে জিইসি পর্যন্ত ডুবে ছিল দিনের বেশিরভাগ সময়। এ সময় পানির তীব্র স্রোতে বেকায়দায় পড়েন পথচারীরা। পানি ঢুকে বিকল হয়ে যায় অনেক গাড়ির ইঞ্জিন। বেশি ভাড়ায় রিকশা, ভ্যানগাড়িতে চড়ে পানি ভাঙেন অনেকে। এ সময় বেশ কয়েকজন নারীসহ পথচারী নালায় পড়ে যান। পানি ঢুকে যায় জলাবদ্ধ এলাকাগুলোর দোকানপাট, শপিংমলের নিচতলায়।    

আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের নিচতলায় যথারীতি হাঁটু-পানি জমে। জরুরি কিছু শয্যা ও সেবা দোতলায় স্থানান্তর করা হলেও দুর্ভোগ লেগেই ছিল রোগী, স্বজন, চিকিৎসক ও সেবিকাদের। পানি জমেছিল আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সামনের সড়কেও। বৈরী আবহাওয়ার কারণে বন্ধ ছিল চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে পণ্য খালাস বা লাইটারিং। বন্দরের এনসিটি, সিসিটি, ৪ নম্বর গেট এলাকার নিচু ইয়ার্ডে বৃষ্টির পানি জমেছিল।

সরেজমিন দেখা গেছে, প্রবর্তক মোড়, বহদ্দারহাট,  দুই নম্বর গেট,  জিইসি, চকবাজার কাঁচা বাজার, কাতালগঞ্জ, বাদুরতলা, মোগলটুলি, বেপারী পাড়া, সরাইপাড়া, হালিশহর, শান্তিবাগ আবাসিক এলাকা, ঈদগাঁ ডিটি রোড, বাকলিয়া ডিসি রোড, পাঁচলাইশ, কমার্স কলেজ রোড, সিডিএ আবাসিকের কয়েকটি সড়কে হাঁটু পানি। এর বাইরে জামালখান ওয়ার্ডের মুহুরি লেন (সিকদার হোটেলের পাশের গলি), গোয়ালপাড়াসহ কিছু নতুন নতুন এলাকায় জলজট সৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে।

ভারী বর্ষণের আশঙ্কা : আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় পশ্চিমা লঘুচাপের সঙ্গে পূবালী বায়ুর সংমিশ্রণের ফলে চট্টগ্রাম, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও রোববার (৬ জুন) বিকেল ৪টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারী (২৪ ঘণ্টায় ৪৪-৮৮ মিমি) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিমি বা তার বেশি) বর্ষণ হতে পারে।  

পাহাড়ধসের আশঙ্কায় মাইকিং : চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন নগরের ফরেস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট এলাকা, মতিঝর্না, বাটালি হিল, একে খান পাহাড়, টাংকির পাহাড়, আমিন জুট মিলস এলাকা, রউফাবাদ, খুলশী, পাহাড়তলী, ফয়’স লেক এলাকার পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং করেছে। আগ্রাবাদ, চান্দগাঁও, বাকলিয়া ও কাট্টলী সার্কেলে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।