এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়ার পুটিবিলা ও আধুনগর ইউনিয়নের সংযোগস্থল মিয়া পাড়ায় ডলু খালে প্রায় ২০ বছর যাবত এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ করে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন। এতে দুই ইউনিয়নের মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ওই স্থানে স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, মিয়া পাড়া পুটিবিলা ও আধুনগর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা। ইউনিয়ন ভিন্ন হলেও পাড়ার নাম এক। মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ডলু খাল। ঘোর পথ এড়িয়ে দুই খালের পাড়ের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে প্রতিবছর স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মাণ করেন অস্থায়ী সাঁকো। এই সাঁকো দিয়ে দুই ইউনিয়নের মিয়া পাড়া, জকরিয়া পাড়া, ছোটার পাড়া, নাছির মোহাম্মদ পাড়া, জুঁই পাড়া, হাজির পাড়া, সাতগড়িয়া পাড়া, সুখছড়ি কুল, উত্তর হরিণা মিয়া পাড়া, মেহের আলী সিকদার পাড়া, বড়ুয়া পাড়া, ওজা পাড়া, গুনু চৌকিদার পাড়া, চৌধুরী পাড়া, ঘাটিয়ার পাড়া ও মোস্তাক আহমদ চৌধুরী পাড়ার প্রায় ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ যাতায়াত করেন। এছাড়া হাজী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়, আধুনগর উচ্চ বিদ্যালয়, আধুনগর ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা ও উত্তর হরিণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বহু শিক্ষার্থীকেও এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো পার হয়ে যাওয়া-আসা করতে হয়। স্থায়ী একটি ব্রিজ না থাকায় কৃষকের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতেও নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মিয়া পাড়া সংযোগ সড়কে ডলু খালের ওপর স্থানীয়দের অর্থায়নে গাছ, বাঁশ ও গাছের তক্তা দিয়ে নির্মিত সাঁকো দিয়ে কোনোমতে পারাপারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সাঁকোটি বছরে কয়েকবার সংস্কার করতে হয় বলে স্থানীয়রা জানান। বর্ষার সময় খালে পানি বৃদ্ধি পেলে সাঁকোর গাছ, বাঁশ পানিতে ভেসে যায়। প্রতিবার সংস্কার করতে প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়।
স্থানীয় মুজিবুর রহমান, মো. ফারুক, ছরওয়ার কামাল ও ওমর ফারুক জানান, মিয়া পাড়া এলাকায় ডলু খালে একটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। জনগুরুত্বপূর্ণ এই স্থানে একটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ হলে দুই ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা সুগম হবে। ফলে ঘোর পথ এড়িয়ে আধুনগর বাজার, পুটিবিলা এম চরহাট বাজার, কেয়াজুপাড়াসহ একাধিক এলাকায় সহজে যাতায়াত করা যাবে। এছাড়া বৃষ্টিতে খালে পানি বেড়ে গেলে ভেঙে যায় সাঁকো। যার কারণে বছরে একাধিকবারও সাঁকোটি সংস্কার করতে হয়। এই স্থানে একটি ব্রিজ হলে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম জানান, বর্ষায় খালে পানি বৃদ্ধি পেলে সাঁকোটি নড়বড়ে হয়ে যায়। অনেক সময় একেবারে ভেঙে যায়। ওই সময় স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। তাই এখানে ব্রিজ হলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত সহজ হবে।
এছাড়া এলাকাবাসী দীর্ঘদিন যাবত ওই স্থানে একটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। এ ব্যাপারে লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) এম. ইব্রাহিম কবির জানান, উপজেলা প্রকৌশলীকে সাথে নিয়ে সাঁকো নির্মাণের স্থান পরির্দশন করা হবে। স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা থাকলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।