- Lohagaranews24 - http://lohagaranews24.com -

লোহাগাড়ার এসিল্যান্ডকে আদালতের শোকজ

এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরীকে শোকজ করেছেন চট্টগ্রাম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৩য় আদালত। সোমবার (২ নভেম্বর) সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক শেখ তামিদুল ইসলাম এই আদেশ প্রদান করেন।

গত ২৯ অক্টোবর উপজেলার পশ্চিম কলাউজানের (সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান) মৃত আলহাজ্ব বজলুর রহমান সিকদারের মেয়ে ইসরাত জাহান সিদ্দিকীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ আদেশ করা হয়।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উত্তর কলাউজান রসুলাবাদ পাড়া ও হাজী পাড়া সংলগ্ন ‘নাজির খাঁ দিঘী’ অভিযোগকারীর পিতার খরিদা ও দখলীয় সম্পত্তি। দীর্ঘদিন যাবত ভোগদখলে থেকে উক্ত দিঘীতে মাছ করে আসছে। গত ২৫ অক্টোবর দুপুরে সরকারি ক্ষমতা অপপ্রয়োগ করে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্থানীয় বক্সুগংদের সহযোগিতায় দিঘী থেকে বেআইনীভাবে মাছ শিকারের অপচেষ্টা করে।

বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে অপর আপীল মামলা (নং- ৫০৭/২০০৫ ইং) আদালতে চলমান ও বিচারাধীন থাকা অবস্থায় বাদী পক্ষকে হয়রানির অপচেষ্টা করায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও বক্সুগংদেরকে নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করেন আদালত।

বুধবার (৪ নভেম্বর) এসিল্যান্ড নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী এ নোটিশ গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে। অপরদিকে, উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরীর মুঠোফোন রিসিভ না করায় এ ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

যে তিন অঙ্গরাজ্যে জিতে গেলেই ক্ষমতার মসনদ বাইডেনের

Posted By admin On In দেশ-বিদেশের সংবাদ,ব্রেকিং নিউজ,শীর্ষ সংবাদ | No Comments

আন্তর্জাতিক ডেক্স : কে প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন তা এখনই বলা যাচ্ছে না। মার্কিন নির্বাচনে ভোট গণনার শেষ পর্যায়ে চলছে টান টান উত্তেজনা। কারণ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে। হিসাবের খাতায় ট্রাম্পই ‘জিতে যাচ্ছেন’ বলে মনে হচ্ছে। পিছিয়ে নেই বাইডেনও। যে কোনো সময় পাল্টে যেতে পারে চিত্র।

ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন এ পর্যন্ত ২৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট জিতে এগিয়ে রয়েছেন। শুরুর দিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে বেশ বড় ব্যবধানেই এগিয়ে ছিলেন বাইডেন। তবে সময়ের সঙ্গে সেই দূরত্ব কমিয়ে এনেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী। বর্তমানে তার ঝুড়িতে রয়েছে ২১৩টি ইলেকটোরাল ভোট।প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার জন্য বাইডেনের আর দরকার মাত্র ৩২ ইলেকটোরাল ভোট। অন্যদিকে ট্রাম্পের দরকার ৫৭। এদিকে, নেভাডা অঙ্গরাজ্যে ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে ছয়টি। অঙ্গরাজ্যটিতে ৮৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। এর মধ্যে ট্রাম্প পেয়েছেন ৪৮ দশমিক সাত শতাংশ। আর জো বাইডেন পেয়েছেন ৪৯ দশমিক তিন শতাংশ। এই অঙ্গরাজ্যটিতে এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। ১০ ইলেকটোরাল ভোটের অঙ্গরাজ্যে উইসকনসিনে এগিয়ে রয়েছে বাইডেন। সেখানে মোট ভোটের ৮৯ শতাংশ ভোট পড়েছে। এর মধ্যে বাইডেন পেয়েছেন ৪৯ দশমিক ২ শতাংশ। আর ট্রাম্প পেয়েছেন ৪৯ শতাংশ।

১৬ ইলেকটোরালের ভোটের অঙ্গরাজ্য মিশিগানে অল্প কিছু সংখ্যক ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। অঙ্গরাজ্যটিতে মোট ভোটের ৯০ শতাংশ গণনা করা হয়েছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪৯ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ট্রাম্প। আর ৪৯ দশমিক ১ শতাংশ পেয়েছেন জো বাইডেন। সেখানে ট্রাম্প পেয়েছেন ২৩ লাখ ৯৭ হাজার নয়শ ৪২টি ভোট। বাইডেন পেয়েছেন ২৩ লাখ ৮৪ হাজার আটশ ৮৫টি ভোট। এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান ১৩ হাজার ৫৬টি। ধারণা করা হচ্ছে যেকোনো সময় বদলে যেতে পারে এই চিত্র।

মিশিগান, উইসকনসিন ও নেভাডায় বাইডেন জয় পেলে তার ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা দাঁড়াবে ২৭০টিতে। এমন পরিস্থিতি হলে ক্ষমতার মসনদে বসতে বাইডেনকে আর কেউ আটকাতে পারবে না। সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস, ইয়াহু নিউজ।

সাংবাদিক সরওয়ার অপহরণের ঘটনায় মামলা দায়ের

Posted By admin On In দেশ-বিদেশের সংবাদ,ব্রেকিং নিউজ,শীর্ষ সংবাদ | No Comments

নিউজ ডেক্স : সাংবাদিক গোলাম সরওয়ারকে অপহরণ করে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (৪ নভেম্বর) কোতোয়ালী থানায় সাংবাদিক গোলাম সরওয়ার বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়েরের সময় সাংবাদিক গোলাম সরওয়ারের সঙ্গে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলামসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।  

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, সাংবাদিক গোলাম সরওয়ারকে অপহরণ করে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা তিনি নিজে বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।  

২৯ অক্টোবর সকাল থেকে অপহরণের শিকার হন সাংবাদিক গোলাম সরওয়ার। এ ঘটনায় ওইদিন রাতে কোতোয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন আজকের সূর্যোদয়’র সহকারী সম্পাদক ও গোলাম সরওয়ারের সহকর্মী জুবায়ের সিদ্দিকী।

গোলাম সরওয়ার আজকের সূর্যোদয় চট্টগ্রাম ব্যুরোর স্টাফ রিপোর্টার ও অনলাইন পোর্টাল সিটি নিউজ বিডি ডট কমের নির্বাহী সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

১ নভেম্বর সন্ধ্যায় অপহরণের শিকার সাংবাদিক গোলাম সরওয়ারকে মুমূর্ষু অবস্থায় সীতাকুণ্ডের কুমিরা এলাকায় ফেলে যায় অপহরণকারীরা। বাংলানিউজ

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীসহ বড় বড় শহরে বিক্ষোভ, চলছে ধরপাকড়

Posted By admin On In দেশ-বিদেশের সংবাদ,ব্রেকিং নিউজ,শীর্ষ সংবাদ | No Comments

আন্তর্জাতিক ডেক্স : যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফলে এগিয়ে আছেন জো বাইডেন। ফক্স নিউজ জানিয়েছে, ২৩৮টি ইলেক্টরাল ভোট নিশ্চিত হয়েছে তার। ট্রাম্পের নিশ্চিত হয়েছে ২১৩টি। জিততে প্রয়োজন মোট ২৭০টি।

চূড়ান্ত ফলাফল আসার আগেই বিক্ষোভকারীরা নেমেছেন রাস্তায়। নির্বাচনের রাতে হোয়াইট হাউজসহ রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। আরও বেশ কিছু শহরে বিক্ষোভ হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো। ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনকারীরাও জড়ো হয়েছেন হোয়াইট হাউজের নিকটবর্তী এলাকায়।

সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন বিভিন্ন শহরে ব্যবসায়ীরা। সতর্কতা জারি করা হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বিভাগ থেকেও। সহিংসতা প্রতিরোধে ৫০ জনকে আটকও করা হয়েছে বলে জানিয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস। যারা লস অ্যাঞ্জেলেসের ডাউনটাউনের স্ট্যাপলস সেন্টারের আশেপাশে জড়ো হয়েছেন তাদের সরে যেতে অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ।

বিক্ষোভ হয়েছে নিউ ইয়র্ক সিটির সিয়াটলে, মিনিয়াপলিসেও। সিয়াটলে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। অনেক স্থানে বিক্ষোভকারীরা বাইডেন কিংবা ট্রাম্প, কারো পক্ষেই স্লোগান দিচ্ছেন না। তারা স্লোগান দিচ্ছেন বর্ণবাদ নিরসন ও ন্যায়বিচারের পক্ষে। 

আমরা সুপ্রিমকোর্টে যাব : ট্রাম্প

Posted By admin On In দেশ-বিদেশের সংবাদ,ব্রেকিং নিউজ,শীর্ষ সংবাদ | No Comments

আন্তর্জাতিক ডেক্স : ভোট দেয়ার জন্য আমেরিকান জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে হোয়াইট হাউজের ইস্ট রুম থেকে বক্তব্য দিয়েছেন রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।

নিজেকে বিজয়ী দাবি করে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ”আমরা বিজয়ের জন্য প্রস্তুত ছিলাম, সত্যি কথা বলতে, আমরাই বিজয়ী হয়েছি।”এরপর কোন রকম প্রমাণ উপস্থাপন না করেই তিনি দাবি করেন, নির্বাচনে কারচুপি করা হয়েছে।

এটা আমেরিকান জনগণের সঙ্গে প্রতারণা দাবি করে তিনি জানান, নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে লড়াই করতে তিনি সুপ্রিমকোর্টে যাবেন।

”আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিমকোর্টে যাবো। এখন আমরা সব ভোট গণনা কার্যক্রম বন্ধ চাই। এটা খুবই দুঃখজনক একটি মুহূর্ত।” বলছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

২০২০ সালের নির্বাচনে কয়েক কোটি মানুষ ভোট দিয়েছে, যা এখনো গণনা চলছে।ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ের যে দাবি করেছেন তার কোন বিশ্বাসযোগ্যতা এখন পর্যন্ত নেই। সূত্র: বিবিসি

ট্রাম্প বললেন, ‘আমরা নির্বাচনে জিতে গেছি’

Posted By admin On In দেশ-বিদেশের সংবাদ,ব্রেকিং নিউজ,শীর্ষ সংবাদ | No Comments

আন্তর্জাতিক ডেক্স : বিভিন্ন রাজ্য থেকে মার্কিন ভোটের ফলাফল আসতে শুরু করেছে। শুরুতে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও ক্রমেই জয়ের সম্ভাবনা প্রবল হচ্ছে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের।

এরই মধ্যে পূর্ব ঘোষণা মতো জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি নিজের বড় জয়ের ঘোষণা দিয়েছেন।

ট্রাম্প ভাষণে বলেছেন, ‘আমরা নির্বাচনে জিতে গেছি। ওরা আমাকে ধরতেই পারবে না। আমরা পেনসিলভানিয়ায়ও বড় ব্যবধানে জিততে যাচ্ছি। আমাকে হারনো তাদের পক্ষে অসম্ভব। উইসকনসিনও আমরা জয় করতে যাচ্ছি।’ট্রাম্প জোর গলায় ঘোষণা দিলেন, ‘আমরা নির্বাচনে জিতে গেছি।’ সূত্র: বিবিসি

আল্লাহ রসুলের অনুসারী মুসলমান মানেই ধর্মান্ধ-জঙ্গি নয়

Posted By admin On In উন্মুক্ত পাতা,শীর্ষ সংবাদ | No Comments

পীর হাবিবুর রহমান : সব সময় ভাবী এক রকম, হয় আরেক রকম। লিখতে চাই একটা, লেখা হয় আরেকটা। ঘটনার পর ঘটনা ঘটতে থাকে। মুসলমান হিসেবে মহান আল্লাহতায়ালার প্রতি আমার ইমান ও আনুগত্য পারিবারিকভাবেই নিঃশর্ত। একটি ধর্মপ্রাণ মুসলমান পরিবারে জন্ম নিলেও আমার পরিবার ও সমাজ অসাম্প্রদায়িকতার পাঠ দিয়েছে। সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ কী আমি জানি না। ধর্মের তর্কযুদ্ধেও যাই না। সব ধর্ম নিয়ে ব্যাপক পড়াশোনা আমার নেই। অনেককে দেখি এককালের তাত্ত্বিক বামের অহংকারী ফ্যাশন চর্চার মতো নাস্তিক বলে দাবি করেন। এতেও আমি মাথা ঘামাই না। এসব তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। আমার কিছু যায় আসে না। কেউ বা আবার ধর্মের পোশাকে আচরণে বেশ উগ্র, দম্ভ নিয়ে হাঁটেন, যেন তিনিই শ্রেষ্ঠ মুসলমান। এটাও আমি গুনি না। আল্লাহই জানেন কার পরিণতি কী। শেষ বিচারের মালিক তিনি। কিন্তু কারও ধর্মীয় বিশ্বাস অনুভূতিতে আঘাত গ্রহণযোগ্য নয়। ধর্মের নামে সহিংসতা হানাহানি বিদ্বেষকে ঘৃণ্য অপরাধ মনে করি।

শ্রেষ্ঠ মহামানব শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা। তিনিই মুসলমানদের ফিলোসফার, পথপ্রদর্শক। বিভিন্ন ধর্মের কত জগদ্বিখ্যাত মানুষও তাঁকে সম্মান করেন। পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআনের পর রসুলের কথাই শেষ কথা। ধর্মের সুললিত শান্তির বাণী অনন্তকাল ধরে চলে আসছে। আল্লাহ, রসুলের প্রতি আনুগত্য আর নামাজ রোজা হজ জাকাত পালন করা যদি হয় সাম্প্রদায়িকতা তাহলে ধর্মের নামে পাকিস্তানি শাসকদের ২৪ বছরের শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানসহ সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ জীবন যৌবন উৎসর্গ করে জান বাজি রেখে জাতির মহত্তম নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে নিরন্তর আন্দোলন-সংগ্রাম করত না নির্ভীকচিত্তে। ইতিহাসে সেদিন পাকিস্তানের স্বঘোষিত ইসলামপন্থি বড় বড় নেতারাই নিশ্চিহ্ন হননি, তাদের আজ্ঞাবহ দলও অস্তিত্ব হারিয়েছে। এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান সাম্প্রদায়িক নয় বলেই ’৭১ সালে নির্বাচিত জাতির একক নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সামরিক অভিযানকে আমলেই নেয়নি। বিশ্বমোড়লদের পাকিস্তান-প্রীতি ও সমর্থনকে দুই আনা মূল্য দেয়নি। গণতান্ত্রিক ভারতের জনগণ ও তাদের মহান নেতা ইন্দিরা গান্ধীর আশ্রয়, আন্তরিক সমর্থন ও সহযোগিতা যেমন ছিল তেমনি ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ ও বিশ্বের মানবতাবাদী মানুষের সমর্থন। ’৭০ সালের নির্বাচনে পরাজিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর সাম্প্র্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলোও একটি অংশের ভোট পেয়েছিল। সেই ক্ষুদ্র অংশটি একাত্তরেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে সশস্ত্র ভূমিকা রাখে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দালাল ক্রীতদাসরা সেদিন মুক্তিযুদ্ধের মহান নেতা বীর ও সমর্থকদের হিন্দুস্থানের দালাল বলেছিল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাওয়া, সমর্থন করাদের ইসলামের দুশমন বলে তাদের ধরিয়ে দেয়। অবর্ণনীয় নির্যাতন করা, নৃশংস গণহত্যা করা, নারীদের ধরে এনে গণধর্ষণ করা, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে জাহান্নাম করেছিল।

ইসলামাবাদের রাষ্ট্রপতি ভবনকে বেশ্যালয় বানিয়ে মাতাল প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান মদ ও নারীতে ডুবে বর্বর জঘন্য গণহত্যা ও গণধর্ষণে উল্লাস করেছিল। জাতির ঐক্যের প্রতীক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানের কারাগারে একা নির্জন সেলে বন্দী করে ফাঁসি দিতে কবর খুঁড়েছিল। কিন্তু সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তানের গণহত্যা ও গণধর্ষণের পরিণতি করুণ পরাজয় ও আত্মসমর্পণে শেষ হয়েছিল। বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস গৌরবের ত্যাগের রক্তের ইতিহাস। সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের রক্তে এ মাটি ভেজা। বীরত্বের ইতিহাস লেখা। সেই যুদ্ধে মুসলমান, হিন্দু- সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ গেছে। ভয়াবহতার মুখোমুখি হয়েছে। সেদিন বিশ্বমোড়লদের সঙ্গে পূর্বের চীন আর মধ্যপ্রাচ্যের সৌদিও পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়েছে। সোভিয়েত-ভারতসহ যারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল তারা মুসলমান নয়। রাষ্ট্রের জন্ম আমাদের মানবতার আদর্শ দিয়েছে। ধর্মকে ব্যক্তিজীবনের চর্চার শিক্ষা করেছে। যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সংবিধান কেটেছে, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিষ এনেছে, তারা খুনির ভাই, দেশের বিশ্বাসঘাতক, রাষ্ট্রের শত্রু। সদ্য স্বাধীন দেশের সংবিধানের মূলনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতা ঠাঁই পেয়েছিল। এটাই ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের গণজাগরণ ও স্বাধীনতার বড় অর্জন। কিন্তু ’৭১-এর পরাজিত পাকিস্তান ও তাদের মিত্ররা পরাজয়ের দহনে এতটাই পুড়ছিল যে এ বিজয় মেনে নিতে পারেনি। ’৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবার-পরিজনসহ নৃশংসভাবে হত্যা করে অসাংবিধানিক অবৈধ খুনির শাসন কায়েম করে একে একে মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত মহান আদর্শ নির্বাসনে দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর রক্তের ওপর দিয়ে বিশ্বাসঘাতক খুনিরা ক্ষমতায় গেছে আর ’৭১-এর পরাজয়ের গ্লানি বহন করা দেশগুলো একে একে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে। রাষ্ট্রের আদর্শ ও আত্মাকে হত্যা করেই তারা সেদিন তৃপ্ত হয়নি। বিজয়ের আনন্দ ভোগ করেছিল। অথচ এটা ছিল বিশ্বরাজনীতির ইতিহাসে ঘটে যাওয়া মানবসভ্যতার সবচেয়ে বেদনাদায়ক হত্যাকা-। মানবিক শক্তির মহান নেতা শোষিতের কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করে তারা আনন্দ করেছে। ’৭০ সালের নির্বাচনে প্রত্যাখ্যাত হয়ে সেই ’৭১ সাল থেকে যারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর হয়ে এ দেশের রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ধর্মের নামে ফের রাজনীতির পতাকা উড়িয়েছে, সাংগঠনিক কর্মকা- করেছে, পাকিস্তানি আইএসআইর পৃষ্ঠপোষকতা নিয়েছে এরাই বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক অপরাধী শক্তি। আল্লাহ-রসুলের ভক্ত হলেই, ধর্ম পালনে ইবাদতে মগ্ন হলেই সাম্প্রদায়িক নয়। ধর্মান্ধ নয়। জঙ্গি নয়। ব্যক্তিগত জীবনে মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টান আর রাজনৈতিক জীবনে যারা সব ধর্মের প্রতি সম্মান রেখে অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনায় পারিবারিক সামাজিক বন্ধনে বাস করে তারাই দেশপ্রেমিক। এ দেশের জন্মটাই অসাম্প্রদায়িক। সাম্প্রদায়িক ও পাকিস্তানের দাসরা কখনো দেশপ্রেমিক নয়। এরা সর্বনাশা আগুন নিয়ে খেলে। সাম্প্রদায়িক উগ্র ধর্মান্ধ সামরিক শাসনে ক্ষতবিক্ষত ব্যর্থ পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রেতাত্মারাই এ সাম্প্রদায়িক শক্তি। সাম্প্রদায়িক শক্তি সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, মন্দিরে হামলা করে। ধর্মের নামে বাতাসে হিংস্রতার বিষ ছড়ায়। সমাজকে অশান্ত করে। ওরা অসাম্প্রদায়িক গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ মনে-প্রাণে মানতে পারে না। ওরা পাকিস্তানি বিশ্বাস লালন করে। ৩০ লাখ শহীদ, আড়াই লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত একটি অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ দেশের সংবিধান ক্ষতবিক্ষত করেছে আগেই। এখন সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বানাতে চায়।

এ দেশের মানুষ ধর্মভীরু। কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। এখানে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ সম-নাগরিক অধিকার ভোগ করে। কিন্তু কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা, সমাজে অস্থিরতা তৈরি করা বরদাশত করা হয় না। ইসলাম ধর্ম নিয়ে নাস্তিকতার ফ্যাশনে বিকৃত বক্তব্য লেখার কারণে, জঙ্গিদের হাতে কেউ কেউ নিহত হয়েছেন। এটা দুঃখজনক। ধর্মপ্রাণ অসাম্প্রদায়িক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, এসব অন্যায়, বিকৃতি। তেমনি খুনিদেরও রেহাই দেওয়া হয়নি। জঙ্গিদের কঠোর হাতে দমন করেছেন। অনেকে নাস্তিকতার বিতর্ক তুলে বিদেশে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। যেমন অনেকে দেশে মৌলবাদের তকমা গায়ে মাখিয়ে নিজস্বার্থে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। রাষ্ট্র ও জনগণের সঙ্গে এটা বিশ্বাসঘাতকতা। এ দেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ হলেও সাম্প্রদায়িক নয় বলে এখানে সব নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীসহ সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক শক্তির পরাজয়ই নয়, জামানতও বাজেয়াপ্ত হয়। আইএসআইয়ের নিরন্তর প্রচেষ্টা, মধ্যপ্রাচ্যের সহযোগিতা, এরদোগানের প্রেম বিফলে যায়। এ দেশের জনগণের হৃদয়ে ঐতিহাসিকভাবে যে ঘৃণা ’৭১-এর বর্বরতার জন্য পাকিস্তানের প্রতি এতে আর যাই হোক যেনতেন কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকলেও মানুষের ঘেন্না ও ক্ষোভ মুছে যাবে না। দালাল পুষতে পারে। পাকিস্তান আমলেও ছিল, ’৭১ সালেও ছিল। পরেও ছিল। তাদের পরিণতি ভয়ঙ্কর হয়েছে। পাকিস্তানের এজেন্টরা যত শক্তিশালী হোক সাময়িক সময়ই তাদের ভোগ। সময় তাদের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত করবে। আগুন নিয়ে খেলা ছাড়া এদের কোনো শক্তি নেই। আগুন অনেক সময় নিজেকেও পোড়ায়। বিএনপি-জামায়াত আমলেও পুড়িয়েছে। চলমান নানা ঘটনার পর ঘটনা দেখলে প্রশ্ন জাগে, ভয়াবহ আগুন নিয়ে খেলতে দেওয়া যায় না। এ শান্তি, এ উন্নয়ন স্তব্ধ করা যায় না।

একদল তথাকথিত নব্য নাস্তিক বেশ মজাই করছে, ফ্রান্সে কয়েকদিন আগে ব্যঙ্গ রসাত্মক ম্যাগাজিন শার্লি এবদোর মহানবী হজরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.)-এর বিকৃত কার্টুন প্রকাশ করে পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করায়। ২০১৫ সালেও এমন বিকৃত কর্মকা-ের কারণে কার্টুনিস্টসহ ১২ জন নিহত হন। এবারও তারা বিশ্বের মুসলমানদের হৃদয়কে আঘাত করেছে। অনেক জায়গায় রক্ত ঝরেছে। বাংলাদেশে ধর্মপ্রাণ মানুষ বিশাল প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। প্রিয় নবীর অবমাননায় কলিজায় আঘাত পাওয়ার কারণে এ প্রতিবাদ স্বতঃস্ফূর্ত। তবে তারা কোনো উগ্র পথ নেননি। যে আলেম-ওলামারা প্রতিবাদমুখর তাদের চিন্তা করতে হবে প্রতিবাদ যেন হঠকারী পথ না নেয়। ফ্রান্সের পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছেন। ফ্রান্সের সঙ্গে সম্পর্ক তারা নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছেন। কিন্তু বুঝতে হবে কূটনৈতিক সম্পর্ক সহজেই বন্ধ হয় না। আলেম-ওলামারা সুগন্ধি আতর মাখেন। ফ্রান্সের পারফিউম অগণিত নারী-পুরুষ ব্যবহার করে সৌরভই ছড়ান না, চিত্ত প্রফুল্ল রাখেন।

মহানবীর অবমাননার প্রতিবাদকে ব্যবহার করে জগতের মতলববাজ শয়তানরা যেন ভিন্ন খাতে নিতে না পারে। আগুন ছড়িয়ে সমাজকে অশান্তিতে দগ্ধ করতে না পারে। সে জন্য সজাগ সতর্ক থাকতে হবে। দায়িত্ব সবার। লালমনিরহাটের পাটগ্রামে মানসিক ভারসাম্যহীন নামাজি শহীদুন্নবীকে গণপিটুনি দিয়ে বর্বরতায় ভয়াবহ আগুনে পুড়িয়ে মারা হলো কেন? কারা করল? আলেম-ওলামাদের কি এসব দেখার বিষয় নয়? এর প্রতিবাদ কেন হলো না? এ খুনিরা কি বেহেশতে যাবে? এ ঘটনার এক দিন আগে জনস্বাস্থ্যের পরিচালক আবদুর রহিম হঠাৎ করে নোটিস দিয়ে বললেন, অফিসে পুরুষরা টাকনুর ওপর প্যান্ট, নারীরা হিজাব পরবেন! যদিও মন্ত্রণালয় সে নোটিস বাতিল করেছে তবু প্রশ্ন। এসব তো আগে ছিল না। যার যা পছন্দ তা পরবে। কেউ তো বাধা দিচ্ছে না। আর সরকারি নির্দেশ সিদ্ধান্ত ছাড়া তিনি দেন কীভাবে? এটা তো ইসলামী প্রজাতন্ত্র নয়? এ কথা বলায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কী যে মন্তব্য। অনেকে তো সিনেমার ব্ল্যাকের টিকিট বিক্রেতার মতো আমাকে দোজখে পাঠিয়ে দেন। যেন নিজের বেহেশত নিশ্চিত। আমি বুঝি আল্লাহ সর্বশক্তিমান ও শেষ বিচারের মালিক। তিনিই জানেন, কার পরিণতি কী? কী হবে মানবিক মুসলমানের পরিণতি, কোথায় হবে ধর্মান্ধ জঙ্গি উগ্র খুনি মুসলমানের জায়গা। কুমিল্লার মুরাদনগরে গুজব ছড়িয়ে সংখ্যালঘুদের বাড়িতে আগুন কি বর্বরতা নয়? আলেমরা প্রতিবাদ করবেন না? সমর্থকদের শান্ত হতে বলবেন না? কোনো উগ্র হঠকারিতার পথ না নিতে বলবেন না? সরকার তো আছে!

আমি মুসলমান, গভীরভাবে ধর্মে বিশ্বাসী। কিন্তু যে ইমাম পবিত্র কোরআন শপথ করিয়ে ছাত্রীদের একের পর এক ধর্ষণ করেছে, যে মাদ্রাসাশিক্ষক নিয়মিত ছাত্রদের বলাৎকার করেছে এতে হাশরের ময়দানে কার শাস্তি কী হবে সেটি আমরা জানি? নাকি সর্বশক্তিমান আল্লাহ জানেন। আলেমদেরও এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। বিদায় হজের ভাষণে প্রিয় নবী নিরপরাধ মানুষ হত্যার নিষেধাজ্ঞা দিয়ে গেলেও যারা ধর্মের নামে ’৭১ সালে, একালে জিহাদের নামে আইএস, জঙ্গিবাদ করে নিরীহ নারী-শিশু হত্যা করেন তারা কি ভুল করছেন না? এ অপরাধের পথকেও পৃথিবীর মুসলমানরা সমর্থন দেয়নি। একসময় আলেমরা সহনশীল ছিলেন। ঘুষ, দুর্নীতি, গিবত, পাপাচারের বিরুদ্ধে বলতেন। ধর্মের নামে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়াতেন না।

ফরাসিরা গণতন্ত্রের সুকোমল আবির্ভাব ঘটিয়েছে। কত দার্শনিকের উপহার দিয়েছে। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতে পৃথিবীর তীর্থস্থান। ফুটবলেও খ্যাতি ছিল। মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ভলতেয়ার, রুশোর ফ্রান্স। পিকাসোর শিল্প ইতিহাস। এত সভ্য সুন্দর দেশ। কিন্তু পৃথিবীর শান্তি বজায় রাখতে বিশ্বের বিশাল জনগোষ্ঠীর মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত কেন? এটা বিশ্বকে অশান্তই করে না, জঙ্গিবাদেরও জন্ম দেয়। রাশিয়া যথার্থ বলেছে এসব কার্টুন বন্ধ করতে। পোপও সমর্থন করেননি এ আঘাত। ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট শিরাকও নন। মত প্রকাশের স্বাধীনতা মানেই যা খুশি বলা নয়। দায়িত্বশীলতা শব্দটিও রয়েছে। আমরাও বলি ধর্ম ব্যক্তিজীবনে রাখি। রাজনীতি-সমাজ নয়। কারও মনেই ধর্মের আঘাত নয়। শান্তি আজকের পৃথিবীর বড় আকুতি। মানবতাই সেখানে আলো জ্বালাতে পারে।

মহানবীর ব্যঙ্গ কার্টুন ফরাসি সভ্যতাকে উলঙ্গ করেছে। বিশ্বে বিতর্কিত করেছে। এমন জঘন্য কার্টুন বারবার করে তারা মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে বিশ্বের বিশাল মুসলমান জনগোষ্ঠীর ওপর তাদের ভিতরের হিংস্র বন্য বিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। বর্ণবাদ পৃথিবীতে এমনিতেই মুছে যায়নি। এর মধ্যে একটি বিশাল ধর্মের মানুষের আবেগ-অনুভূতিতে আঘাত করা পৃথিবীতে আগুন ছড়িয়ে দেওয়া। হিংসার। শান্তিপ্রিয় মুসলমানদের উগ্রপথ গ্রহণে প্রভোগ করার। বিশ্বনেতাদের এটা ভাবতে হবেই। সাংবাদিক রবার্ট ফিস্ক ৭৪ বছর বয়সে চলে গেলেন। তিনি নিয়ন্ত্রিত সাংবাদিকতার কট্টর সমালোচক। বিশেষ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যমের সেন্সরশিপের কঠোর সমালোচনা করতেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুদ্ধাভিযানের সংবাদ সংগ্রহ এবং নিরপেক্ষতার মাধ্যমে পরিবেশন করে পৃথিবীকে মুগ্ধ করেন।

নিউইয়র্কের নাইন-ইলেভেনের টুইন টাওয়ার হামলার আগুনে কেবল মানুষই মরেনি, মানবতাই আক্রান্ত হয়নি, বিশ্ববাসীর হৃদয় কেঁদেছিল। সে সময় রবার্ট ফিস্কই সাহস করে বলেছিলেন, টুইন টাওয়ারে ৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। আফগানিস্তানের অভিযানে ৫ লাখ নারী-শিশু মরেছে। ইরাকেও নিরপরাধ মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। ধর্মের নামে জঙ্গি হামলাই হোক, আর যুদ্ধ বা দখলের নামে আক্রমণ হোক সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা হলো নিরপরাধ মানুষের করুণ মৃত্যু। লাদেনকে বিশ্বের মুসলমানরা সমর্থন করেনি। তালেবানরা করেছে। পাকিস্তান আশ্রয় দিয়েছ। তার নির্মম পরিণতিতে কারও চোখে অশ্রু দেখা যায়নি। ধর্মের নামে এ সন্ত্রাসের দায় তাকে কেউ দেয়নি। সাদ্দাম, গাদ্দাফির পরিণতিও ভয়াবহ হয়েছে। সিরিয়া আইএসের অভিশাপে অভিশপ্ত। আইএসকে বিশ্বের মুসলমানরা ঘৃণা করেছে। পৃথিবীর দেশে দেশে মুসলমান মানেই জঙ্গি, ধর্মান্ধ সন্ত্রাসী এমনটি যেমন সত্য নয়, তেমনি নিরপরাধ মানুষ হত্যাও গ্রহণযোগ্য নয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ক্লিনটন এ দেশকে মডারেট মুসলিম কান্ট্রি বলেছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আমরা ধর্মনিরপেক্ষতা হারিয়েছি। আর সাম্প্রতিককালে ভারতে তার রাষ্ট্রের সৌন্দর্য ধর্মনিপেক্ষতা হিন্দুত্ববাদের ছোবলে আক্রান্ত। পাকিস্তান তো জন্ম থেকেই ধর্মের বিষে বিষাক্ত হয়ে আছে। এ দেশেও জঙ্গিদের ঠাঁই হয়নি। সরকারের অপারেশনে নিহত, ফাঁসিতে ঝুলন্ত জঙ্গিদের লাশও পরিবার নিতে আসেনি। তাই শান্তির পৃথিবীতে মানুষ ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে বসবাস করতে চাইলে যে যে ধর্ম বা মতেরই হোক না কেন তার মতো স্বাধীন জীবন শান্তিতে যাপন করবে। কিন্তু কেউ কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে উত্তপ্ত, সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারবে না। প্রতিটি দেশে আইন আছে। বিচার আছে। আর শেষকালে তো বিশ্বাসীদের জন্য হাশরের ময়দান আছে। রাষ্ট্রের সঙ্গে জনগণের চুক্তিনামা হলো সংবিধান আইন। এর ঊর্ধ্বে কেউ নয়। যে কোনো ইস্যুতে আইন হাতে তুলে নেওয়া বা পরিবেশ অস্থির অর্থাৎ সহিংস করার এখতিয়ার কারও নেই। সরকার নিশ্চয় ফ্রান্স সরকারকে জনগণের অনুভূতিসহ প্রতিবাদ জানিয়েছে বা জানাবে। তাই বলে প্রতিবাদের বাইরে আমরা নিজেরা নিজেরা কোনো সংঘাতে জড়াতে পারি না। লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।

কিশোর গ্যাং লিডার হামকা রাজু অস্ত্রসহ আটক

Posted By admin On In দেশ-বিদেশের সংবাদ,ব্রেকিং নিউজ,শীর্ষ সংবাদ | No Comments

নিউজ ডেক্স : নগরের বহদ্দারহাট এলাকার সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাংলিডার মো. রাজু বাদশা প্রকাশ হামকা রাজুকে (৩০) আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

বুধবার (৪ নভেম্বর) ভোররাতে চাঁন্দগাও থানাধীন বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে হামকা রাজুকে আটক করে র‌্যাব-৭ এর একটি দল।

আটক হামকা রাজু চাঁন্দগাও থানাধীন বহদ্দারহাট কসাইপাড়া এলাকার জয়নাল আবেদীন জুনুর ছেলে। তার বিরুদ্ধে কিশোরগ্যাং পরিচালনা ও কিশোর গ্যাংয়ের মাধ্যমে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

র‌্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. মাহমুদুল হাসান মামুন বলেন, বহদ্দারহাট এলাকার সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাংলিডার মো. রাজু বাদশা প্রকাশ হামকা রাজুকে আটক করা হয়েছে। তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে চাঁন্দগাও থানায় হস্তাস্তর করা হয়েছে।

র‌্যাব-৭ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল মাহমুদ বলেন, হামকা রাজুর বিরুদ্ধে ছিনতাই, হত্যাচেষ্টাসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে কিশোরগ্যাং পরিচালনা ও কিশোর গ্যাংয়ের মাধ্যমে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে।

নগরজুড়ে মোটর সাইকেলে ঘুরে ভাসমান ছিনতাই চক্রের দলনেতা ছিল মো. রাজু বাদশা প্রকাশ হামকা রাজু। বহদ্দারহাট এলাকায় চাঁদাবাজি, বাড়াইপাড়ায় জুয়ার আসর ও ইয়াবা বিক্রির বিভিন্ন স্পট পরিচালনা করে আসছিল দীর্ঘদিন।

সম্প্রতি চাঁদার জন্য খাজা রোডে একটি টেক্সি স্ট্যান্ডে হামলা চালায় হামকা রাজু ও তার গ্রুপ। সিএনজি অটোরিকশা চালককে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয় হামকা রাজু।

হামকা রাজু ছাড়াও বহদ্দারহাট এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদকসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত ধামা জুয়েল, ল্যাংড়া রিফাত, রনি সরকার, ইমন বড়ুয়া (বর্তমানে কারাগারে আছে), ফ্রুট সোহেল ও রুবেল। বাংলানিউজ

ব্যক্তিগত গাড়িতে সাইরেন হুটার, আতঙ্ক ছড়াচ্ছে স্বঘোষিত ভিআইপি!

Posted By admin On In দেশ-বিদেশের সংবাদ,ব্রেকিং নিউজ,শীর্ষ সংবাদ | No Comments

নিউজ ডেক্স : যানজটের মধ্যেও দামি গাড়িতে চড়ে সাইরেন ও হুটার বাজানো স্বঘোষিত ভিআইপিদের তৎপরতা বেড়ে গেছে। তারা উচ্চস্বরে সাইরেন ও হুটারযুক্ত গাড়ি হাঁকিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন। কেউ কেউ আবার অবৈধভাবে নিজ গাড়িতে ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড ব্যবহার করছেন। এছাড়া নগরীর উঠতি বয়সী ধনীর দুলালেরা রাত নামতেই সাইলেন্সার ছাড়া পাইপ ও ডিজিটাল হর্ন বাজিয়ে বিকট শব্দ করে গাড়ি কিংবা মোটরসাইকেল হাঁকিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, মোটরযান আইনে শাস্তির পরিমাণ কম হওয়ায় এখন অনেকে গাড়িতে সাইরেনযুক্ত হর্ন, হুটার ও বিকট শব্দ তৈরি করে গাড়ি চালাচ্ছেন। সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের উত্তর জোনের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই-প্রশাসন) মো. মশিউর রহমান বলেন, নিয়ম অনুযায়ী পুলিশ, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ছাড়া কারোরই সাইরেনযুক্ত হর্ন ব্যবহার করার কথা নয়। সাইরেনের শব্দ শুনলে মানুষ ওইসব বাহনকে দ্রুত চলাচলের সুযোগ করে দেয়। অথচ এই বিশেষ হর্ন এখন অনেক সাধারণ গাড়িতে দেখা যাচ্ছে। এতে একদিকে যেমন শব্দদূষণ বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের সময়ের গুরুত্বকে করছে অবজ্ঞা। আমরা এসব গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি, মামলা দিচ্ছি, জরিমানা আদায় করছি। অনেক সময় গাড়ি টো করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ দৌরাত্ম্য বন্ধে আরো কঠোর হতে হলে, তাও হব।

সিএমপির দক্ষিণ জোনের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই-প্রশাসন) মো. মহিউদ্দিন বলেন, আগে সাইরেন ব্যবহার করা হতো শুধু অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, পুলিশের পিকআপসহ অতি প্রয়োজনীয় ও জরুরি কাজে নিয়োজিত বিশেষ কিছু সরকারি গাড়িতে। এখন অনেকেই গাড়িতে সাইরেন বা হুটার ব্যবহার করছেন। আমরা অভিযান চালিয়ে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। মামলা, আটকের পাশাপাশি গাড়ির মালিক ও চালক থেকে মুচলেকাও নেওয়া হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে গাড়িতে সাইরেন বা হুটার জাতীয় কোনো হর্ন না লাগায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্বঘোষিত এই ভিআইপিরা দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নিজেদের গাড়ির হর্নের সঙ্গে এই সাইরেন যুক্ত করে দিচ্ছেন। মন্ত্রীদের গাড়িতে যে ধরনের হর্ন থাকে এই ভিআইপি নামধারীরাও তেমন সাইরেনযুক্ত গাড়ি ব্যবহার করছেন। দিন দিন এ ধরনের ব্যক্তিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক সময় এই সাইরেনযুক্ত গাড়ি দেখে সেই গাড়িটিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সাইড দিয়ে দেন সামনের গাড়িগুলো। কিন্তু পরে দেখা যায়, যাকে সাইড দেওয়া হয়েছে তিনি আসলে স্বঘোষিত ভিআইপি।

বিধি অনুযায়ী, দেশে উল্টো পথে চলা বা সাইরেন বাজিয়ে রাস্তা ফাঁকা করে কোনো ভিআইপির চলাচল অনুমোদিত নয়। শুধু মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চলাচলের সময় রাস্তার এক পাশ ফাঁকা করে চলাচলের বিধান রয়েছে। তবুও সেক্ষেত্রে অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসকে আলাদা গুরুত্ব দেওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের স্বঘোষিত নব্য ভিআইপিরা রাস্তাঘাটে ট্রাফিক পুলিশের মনঃসংযোগ করতে বা সামনের গাড়ি থেকে সহজে সাইড পাওয়ার বাড়তি সুবিধার আশায় এবং উল্টো পথে চলাচলের সুবিধা নিতে ব্যক্তিগত গাড়িতে সাইরেন ও হুটার সংযোজন করছে।

২ নভেম্বর বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বাকলিয়া মিয়াখান নগর এলাকায় প্রচণ্ড যানজট সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে একটি কালো পাজেরো গাড়ি দেখা যায়, যেটির চালক অনবরত সাইরেন ও হুটার বাজিয়ে চলেছেন। কোনো ভিআইপির গাড়ি ভেবে সামনের গাড়িগুলোর মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে গেল। সাইড দেওয়ার পর গাড়িটি যখন বেরিয়ে যায়, দেখা যায়, চালক ছাড়া ওই গাড়িতে আর কেউ নেই। অন্যান্য গাড়ির চালকরা শুরু করলেন গালাগালি। সাইড পেয়ে গাড়িটি ততক্ষণে চলে গেছে বহুদূর।

একই দৃশ্য দেখা গেল গতকাল বিকেল ৪টায়। নিউ মার্কেটের দিক থেকে রেলস্টেশন অভিমুখে যাচ্ছিল সাদা রঙের একটি প্রাইভেট কার ও সিলভার রঙের একটি মাইক্রোবাস। সামনে যথারীতি রাস্তা দখল করে দাঁড়িয়ে আছে সিটি সার্ভিসের তিনটি বাস। পেছন থেকে এ দুটি গাড়ি কখনো সাইরেন দিতে থাকে, কখনো হুটারের শব্দ করে। ঠিকই কার্যসিদ্ধি হলো তাদের। বাসগুলো সাইড দিল। গাড়ি দুটি শাঁ করে বেরিয়ে গেল।

সমপ্রতি নগরীতে আরেকটি গ্রুপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই গ্রুপটি ব্যক্তিগত গাড়িতে সাইলেন্সার পাইপ ছাড়া বিকট শব্দ তৈরি করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এদের কেউ কেউ আবার জীবজন্তুর অদ্ভুত আওয়াজের ডিজিটাল হর্ন ব্যবহার করে। রাস্তায় চলন্ত গাড়ির ঠিক পেছনে পৌঁছেই এসব বিকট শব্দ ছড়ানো হর্ন বাজিয়ে সামনের গাড়ির চালককে তটস্থ করে দিচ্ছে। বিশেষ করে বিত্তশালী পরিবারের উঠতি বয়সের তরুণরা এ ধরনের গাড়িগুলো চালিয়ে বা রেস করে বিকৃত আনন্দ খুঁজে পায়। দৈনিক আজাদী