Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | সাতকানিয়ায় অন্তসত্ত্বা গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার : পুলিশ বলছে আত্মহত্যা, বাবার দাবি হত্যা

সাতকানিয়ায় অন্তসত্ত্বা গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার : পুলিশ বলছে আত্মহত্যা, বাবার দাবি হত্যা

নিউজ ডেক্স : সাতকানিয়ায় শ্বশুরবাড়ি থেকে অন্তসত্ত্বা এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। গৃহবধূটির নাম পারভীন আকতার (২৩)। গতকার রবিবার রাতে উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের বড়দুয়ারা গোয়ালউড়া এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের ধারণা পারিবারিক কলহের জের ধরে পারভীন গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পারভীন আকতারের বাবার দাবি তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে হত্যা করে গলায় ওড়না বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে।

এলাকাবাসী জানায়, বাজালিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বড়দুয়ারা গোয়ালউড়া এলাকার মৃত খায়ের আহমদের পুত্র আহমদ হোসেনের সাথে ৪/৫ বছর আগে পুরানগড় ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের স্কুল পাড়ার আমিন শরীফের মেয়ে পারভীন আকতারের বিয়ে হয়।

পারভীন আকতারের বাবা আমিন শরীফ বলেন, “বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন নানা কারণে তার মেয়েকে নির্যাতন করত। মেয়ের স্বামী আহমদ হোসেন প্রায় সময় পারভীনকে মারধর করত। গত মাসে মেয়ে আমার বাড়িতে এসেছিল। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের ভয়ে ওই সময় মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে যেতে চায়নি। আমি তাকে জোর করে পাঠিয়েছিলাম। আমার মেয়ে তিন মাসের অন্তসত্ত্বা।”

তিনি বলেন, “ঘটনার দিন মেয়ের চাচা শ্বশুর সোলাইমান বাঁশির মাধ্যমে জানতে পারি আমার মেয়ে মারা গেছে। তখন সেখানে গিয়ে দেখি আমার মেয়ের মরদেহ খাটের উপর পড়ে আছে। তখন স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক ছিল। তারা আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে হত্যা করে গলায় ওড়না বেঁধে ঝুলিয়ে রেখে সবাই পালিয়ে যায়। এখন তারা আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।”

এদিকে, মেয়ের চাচা শ্বশুর মো. সোলাইমান বাঁশি বলেন, “আহমদ হোসেনের জ্বর হয়েছে। ঘটনার দিন সে তার স্ত্রীর কাছ থেকে কাঁথা চেয়েছিল কিন্তু স্ত্রী যথা সময়ে কাঁথা দেয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আহমদ হোসেন তার স্ত্রীকে চড়-থাপ্পড় দেয়। এসময় স্ত্রীও তার স্বামীকে লাথি মেরেছে। এ ঘটনার জের ধরে পারভীন আকতার ঘরের বিমের সাথে ওড়না বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ওই কক্ষের দরজা ভেতর থেকে হুক লাগানো ছিল। দরজা ভেঙে প্রবেশের পর আমরা তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখি। পরে তাকে সেখান থেকে নামিয়ে খাটের উপর রাখা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তার মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।”

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, “পারিবারিক কলহের জের ধরে পারভীন আকতার গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শুনেছি ঘটনার দিন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। এসময় স্বামী তাকে চড়-থাপ্পুড় মেরেছে। এতে অভিমান করে কক্ষের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে পারভীন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় মেয়ের বাবা বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার আগে এর বাইরে কিছু বলা যাচ্ছে না।” আজাদী অনলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!