ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | সাতকানিয়ার সুদর্শন ঢোল বাজিয়ে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নিলেন

সাতকানিয়ার সুদর্শন ঢোল বাজিয়ে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নিলেন

a-2-78

নিউজ ডেক্স : একটানা ২৭ ঘণ্টা ঢোল বাজিয়ে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশের পণ্ডিত সুদর্শন দাশ।

যুক্তরাজ্যে বসবাসরত চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার সুদর্শন দাশ পূর্ব লন্ডনে গত ২০ জুন সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরের দিন রাত ১০টা পর্যন্ত টানা ঢোল বাজান।

এই ঢোল বাজানোর পুরো ২৭ ঘণ্টার অনুষ্ঠান ভিডিও ক্যামেরায় ধারণ করে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়। এরপর গত বৃহস্পতিবার গিনেস কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তিনি রেকর্ডের সনদ পেয়েছেন।

সুদর্শন দাশ জানান, ঢোল বাজিয়ে রেকর্ড সৃষ্টির জন্য গত বছর গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের কাছে আবেদন করেন লন্ডনের নিউহ্যাম এলাকার একটি স্কুলের সংগীতের শিক্ষক সুদর্শন। চলতি বছর ৩ মে তারা তাকে চিঠি দিয়ে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় টানা ঢোল বাজানোর চ্যালেঞ্জ জানান।

সুদর্শন দাশ জানান, তিনি ২৭ ঘণ্টা ধরে ২৫টি তালে ঢোল বাজান। সবকিছু মিলিয়ে দেখে নিশ্চিত হয়ে তাকে সনদ দেয় গিনেস কর্তৃপক্ষ।

তিনি আরো জানান, বাংলাদেশের ছেলে হিসেবে তিনি গর্বিত। তার এই সফলতা দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।

এর আগে গত বছর গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখানোর লক্ষ্যে টানা ২৫ দিন ৫৫৮ ঘণ্টা ৫৯ মিনিট ধরে তবলা বাজান সুদর্শন দাশ। এর মাধ্যমে তিনি ভারতের কুজলমান্নাম রামকৃষ্ণাণের গড়া ৫০১ ঘণ্টার মৃদঙ্গ বাজানোর রেকর্ড ভেঙে দেন।

গত ২৭ নভেম্বর পূর্ব লন্ডনের ম্যানরপার্কের একটি অডিটোরিয়ামে সুদর্শন শুরু করেন তার তবলা ম্যারাথন। ২৫ দিন একটানা প্রায় ৫৬০ ঘণ্টা তবলা বাজিয়ে ২২ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় নতুন এই বিশ্ব রেকর্ড গড়েন তিনি। সিসিটিভির মাধ্যমে গত ২৫ দিন ধরে তার তবলা বাজানো পর্যবেক্ষণ করেছে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কর্তৃপক্ষ। সুদর্শন দাশের রেকর্ড গড়ার প্রচেষ্টাকে তিনটি ভিডিও ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিকভাবে ধারণ করা হয়েছে।

সুদর্শন দাশ বলেন, রেকর্ড গড়ায় তার কোনো আর্থিক লাভ হবে না। তবে তার এই রেকর্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের নামটিও গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে যুক্ত হলো। এটাই তার জন্য বড় পাওয়া।

তিনি আরো বলেন, বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করতেই তিনি এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।

সুদর্শন দাশের পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায়। অমূল্য রঞ্জন দাশ ও বুলবুল রানী দাশ দম্পতির সন্তান সুদর্শন চার বছর বয়স থেকেই চট্টগ্রামের আলাউদ্দিন ললিতকলা একাডেমিতে তবলায় তালিম নেওয়া শুরু করেন। ১৯৯০ সালে ফুলকুঁড়ি আয়োজিত সংগীত প্রতিযোগিতায় তবলায় স্বর্ণপদক লাভ করেন।

১৯৯১ সালে বাংলাদেশ আন্তঃকলেজ প্রতিযোগিতায় তিনি স্বর্ণপদক লাভ করেন। ১৯৯২ সালে চলে যান ভারতের শান্তিনিকেতনে। সেখানে পণ্ডিত বিজন চ্যাটার্জির কাছ থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন। ১৯৯৮ সালে ভারতের বোলপুরের শান্তিনিকেতন থেকে তাকে তবলাবিশারদ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

এরপর আইন পড়তে লন্ডনে যান তিনি। তবে তবলার নেশা তাকে ছাড়েনি। ২০০৪ সালে লন্ডনে প্রথম ‘তবলা অ্যান্ড ঢোল’একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৮ সালে ভারতের বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক তবলা প্রতিযোগিতায় তিনি দ্বিতীয় পুরস্কার রৌপ্যপদক লাভ করেন।

আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর করা সুদর্শন দাশ বর্তমানে লন্ডন বরো অব নিউহ্যামের শিক্ষক। এর আগে তিনি টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলে ‘মিউজিক ইন্সপেক্টর’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

-রাইজিংবিডি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!