ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | পাহাড়ের কান্না কে শুনবে

পাহাড়ের কান্না কে শুনবে

নিউজ ডেক্স : থামছে না পাহাড় কাটা। নানা কৌশলে কাটা হচ্ছে। চট্টগ্রাম মহানগরীর দুই শতাধিক পাহাড়ের অধিকাংশ কেটে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে যে ক’টি অবশিষ্ট রয়েছে সেগুলোতেও নিয়মিত কোপ পড়ছে পাহাড়খেকোদের। তাই থামছে না পাহাড়ের কান্না। নগরবাসী বলছেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট নানা সংস্থা থাকার পরও পাহাড় কাটা থামছে না। তাদের প্রশ্ন, পাহাড়ের কান্না কেউ কি শুনবে না?

নিয়মিত পাহাড় কাটা হচ্ছে ফৌজদারহাট বায়েজিদ লিংক রোডের দুই পাশে। এছাড়া আরেফিন নগর, জালালাবাদ, নাসিরাবাদ, দক্ষিণ খুলশী, জিইসি মোড়ের সন্নিকটসহ নানা স্থানে নানাভাবে কাটা হচ্ছে পাহাড়। চট্টগ্রাম মহানগরীতে এক সময় দুই শতাধিক পাহাড় ছিল। এসব পাহাড়ের কারণে চট্টগ্রামের বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্য অন্যরূপে ধরা দেয়। কিন্তু আশির দশকের শুরু থেকে পাহাড় কাটা শুরু হয়। গত চল্লিশ বছরে শহরের অনেক পাহাড় কেটে ফেলা হয়েছে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থাকে ম্যানেজ করে শহরের বুকে অপরূপ সৌন্দর্যের পাহাড়গুলো কেটে স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে বাড়িঘর, মার্কেট। পাহাড় কেটে একাধিক আবাসিক এলাকাও গড়ে তোলা হয়েছে।

শহরে এখন আর বেশি পাহাড় অবশিষ্ট নেই উল্লেখ করে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নগরীতে সরকারিভাবেও কাটা হয়েছে পাহাড়। ফৌজদারহাট বায়েজিদ লিংক রোডের জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকটি পাহাড় কেটেছে। পাহাড়ের ভিতর দিয়ে ফৌজদারহাট থেকে বায়েজিদ পর্যন্ত আনা রাস্তাটি পাহাড়খেকোদের বেপরোয়া করে তুলেছে। রাস্তা নির্মাণের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় আশেপাশের পাহাড়গুলো হুমকির মুখে পড়েছে। প্রতিদিনই কাটা হচ্ছে পাহাড়। পাহাড় কেটে গড়ে তোলা হচ্ছে বিভিন্ন স্থাপনা।

আরেফিন নগরে ব্যাপক হারে পাহাড় কাটা হচ্ছে বলে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ সাহেদ ইকবাল বাবু পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। জনৈক মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম পাহাড় কাটছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। অভিযোগ করেন, নানাভাবে সতর্ক করে স্থানীয়ভাবে পাহাড় কাটা বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি পরিবেশ অধিদপ্তরসহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

আরেফিন নগরের মাঝের ঘোনায় তালিমুল কোরআন মাদ্রাসা কমপ্লেঙের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু হজ্ব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকারি খাস জায়গা দখল এবং পাহাড় কাটার অভিযোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। জালালাবাদ এলাকায় নানা কৌশলে পাহাড় কাটা হচ্ছে। জিইসি মোড়ের সন্নিকটে কৌশলে দুটি পাহাড় কেটে ফেলা হচ্ছে। পাহাড় কাটা ও অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ চলছে বলে স্বীকার করে সরকারি পদস্থ একজন কর্মকর্তা বলেন, চট্টগ্রামে প্রচুর পাহাড় ছিল। অধিকাংশই কেটে ফেলা হয়েছে। এখন যেগুলো আছে সেখানেও কোপ পড়ছে। তিনি জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হয়। জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সমন্বিত একটি ক্রাশ প্রোগ্রাম নেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে।

বায়েজিদ বোস্তামী এলাকার আরেফিন নগরে পাহাড় কাটা হচ্ছে জানিয়ে কাউন্সিলর সাহেদ ইকবাল বাবু বলেন, আমি পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছি। মেয়র মহোদয়কেও বলেছি। এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে পাহাড় কাটছে। আগে বেড়ার ঘর করে ভিতরে ভিতরে পাহাড় কাটছিলেন। এখন স্টিল স্ট্রাকচারের অবকাঠামো গড়ে তোলার জন্য পাহাড় কাটছেন।

অবশ্য ফখরুল ইসলাম পাহাড় কাটার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, কাউন্সিলর সাহেব কেন মিথ্যা অভিযোগ করেছেন বুঝতে পারছি না। আমি কোনো পাহাড় কাটছি না। আমার একটি কাঁচাঘর ছিল, সেটিকে পাকা করার উদ্যোগ নিয়েছি। -আজাদী প্রতিবেদন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!