ব্রেকিং নিউজ
Home | লোহাগাড়ার সংবাদ | পদুয়া হাঙ্গর খালের রাবারড্যামে বিরূপ প্রভাব : রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি

পদুয়া হাঙ্গর খালের রাবারড্যামে বিরূপ প্রভাব : রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি

140

নিউজ ডেক্স : লোহাগাড়ার পদুয়া ফরিয়াদিকুলের নবনির্মিত হাঙ্গর খালের রাবারড্যামের বিরূপ প্রভাবে নদীর উভয় তীরে চরে শত শত একর রবিশষ্য পানিতে ডুবে গেছে। ফলে সহায় সম্বলহীন কৃষকের মাথায় হাত পড়েছে। আর প্রভাবশালীরা নদীতে মাছের চাষ করছে। দুর্গত কৃষকরা এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারী স্থানীয় সাংবাদিক এরশাদ হোসাইনকে সাথে নিয়ে এ প্রতিনিধি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতির ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করেছেন। দুর্গতরা অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বশর কনস্ট্রাকশনের মাধ্যমে ফরিয়াদিকুল নুনুর মা’র ঘাটায় এ রাবারড্যাম প্রতিষ্ঠা করেন। গত এক মাস আগে ড্যামের কার্যকারিতা শুরু হয়। ফলে নদী প্রবাহ বাঁধাগ্রস্ত হয়ে প্রচুর পানি জমে যায়। খালের দু’তীরে স্থানীয় কৃষকরা এ বছর বিপুল পরিমাণে মরিচ, বেগুন, আলু, টমেটো, সিম ও অন্যান্য ফসলাদির চাষ করেন। হাঙ্গর খালের একটি শাখা নদী কৈলমারা খাল। এ খালের পানি সন্নিহিত পাহাড় থেকে নেমে এসে হাঙ্গর নদীতে পড়ে। কিন্তু রাবারড্যাম চালু হওয়ার পর হাঙ্গরের পানি উজানে উঠে যায়। ফলে কৈলমারা খালের দু’তীরে অবস্থিত বরচরে কৃষকের ফলানো ফসলে ঢুকে পড়ে। অতিরিক্ত পানি জমা হওয়ায় ক্ষেতের ফসল ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যায়। কৃষকরা নিজ উদ্যোগে কৈলমারা খালে একটি আঁড়ি বাঁধ নির্মাণ করে। উজান থেকে প্রবাহিত পানি মেশিনের সাহায্যে নিষ্কাশনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আর হাঙ্গরের পানি প্রতিবন্ধক দেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুব আলম ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের লিখিত দরখাস্ত পাওয়া নিশ্চিত করেছেন। তিনি অভিযোগ তদন্ত করবেন বলে জানিয়েছেন ।

এ ব্যাপারে কৃষি কর্মকর্তা শামীম হোসেন জানান, এলাকাটি রবিশষ্যের খনি হিসেবে খ্যাত। পদুয়া বাজারসহ অন্যান্য বাজারে এ অঞ্চলের কৃষকরা রবিশষ্য বিপনন করেন। রাব্যারড্যাম নির্মাণের আগে ক্ষতির প্রাক–সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়নি। এ বছর বোরো চাষের আগেই রাবারড্যাম চালু করায় এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।

এলাকার কৃষক মোঃ রফিকুল ইসলাম, আবদুল জলিল, জামাল উদ্দিন, মনোয়ারা বেগম ও মিনু আক্তারসহ অসংখ্য কৃষক প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, তারা কানি (৪০ শতক) প্রতি ১২ হাজার টাকা লাগিয়তে মরিচসহ অন্যান্য ফসলাদি ফলান। মাঠের ফসর মাঠেই বিপন্ন হয়ে গেছে এবং মরে যাচ্ছে। তারা রাবার ড্যামের বিপক্ষে নন। তবে সহনীয় পর্যায়ে যাতে পানি রাখা হয় তার জন্য তারা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। অনেকে কাপ্তাই বাঁধের উদাহরণ টেনে বলেছেন, এ বাঁধ দেয়ায় যেমন বিস্তীর্ণ পাহাড়ী এলাকা কর্ণফুলী নদীতে বিলীন হয়েছে। হাঙ্গরকুলের অবস্থাও একই অবস্থায় চলে যাচ্ছে। বরচরসহ অন্যান্য চরে যেখানে বোরো চাষের বদলে কৃষকরা রবিশষ্য আবাদ করেন। সে সকল চর যাতে রাবারড্যামে সুফল ভোগ করতে পারে তার ব্যবস্থা নেয়া জরুরি বলে তারা অভিমত রেখেছেন। রাবারড্যাম পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম মেম্বার দাবি করেছেন, ঠিকাদার এখনো রাবারড্যাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রকৌশলী ও ইউপি চেয়ারম্যান বরাবরে বুঝিয়ে দেননি। তবে পরীক্ষামূলকভাবে এটি চালু হওয়ায় পানি প্রবাহ বেড়ে গেছে। তবে কৃষকের দুর্গতির কথা চিন্তা করে ইতোমধ্যেই পানি সহনীয় পর্যায়ে রাখার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন- মোঃ জামাল উদ্দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!