Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | চবিতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৭

চবিতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৭

cu-01-20190223160758

নিউজ ডেক্স : সাবেক এক নেতাকে অপহরণের পর মারধরের অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত সাতজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত জিরো পয়েন্ট থেকে সোহরাওয়ার্দী হল মোড় পর্যন্ত চলে এ সংঘর্ষ। বিবাদমান পক্ষ দুটি হলো সিক্সটি নাইন ও উল্কা। উভয় পক্ষই সিটি মেয়র আ জ ম নাছিরের অনুসারী।

আহতদের মধ্যে ছয়জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- শিক্ষা ও গবেষণা ইনিস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের অর্ণব ইসলাম,২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ধ্রুব, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অভয়, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ইশতিয়াক হোসেন শামীম, আরবি বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ ইমাম, পদার্থবিদ্যা বিভাগের ১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের মো. আনিস।

এদের মধ্যে আঘাত গুরুতর হওয়ায় প্রথম দুইজনসহ অজ্ঞাত একজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন চবি মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক টিপু সুলতান। তিনি বলেন, তাদের চোখে ও মুখে কাঁচের বোতল ও ইটের আঘাত গুরুতর। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

এদিকে বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের ১১ নম্বর বেডে ভর্তি আছেন চবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম রসুল নিশান।

চমেক পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক আলাউদ্দিন বলেন, তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। তিনি সুস্থ আছেন। তবে রাতে হাসপাতালে ভর্তি হলেও তারা পুলিশকে বিস্তারিত কিছুই জানাননি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে নগরীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিস্টিটিউটে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপুর বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে চবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম রসুল নিশানকে অপহরণ করা হয়েছে এমন খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে। এ খবরে তার অনুসারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা দেয় এবং সড়কে অগ্নিসংযোগ করে। যদিও এক ঘণ্টা পর তাকে টাইগার পাস এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় বলে জানায় তার অনুসারীরা।

তবে তারা অপহরণের ঘটনায় সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতাদের জড়িত থাকার অভিযোগে এনে বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে দুই গ্রুপের মধ্যে জিরো পয়েন্ট ও শাহজালাল হলের সামনে ধাওয়া-পাল্টার ঘটনা ঘটে। যা পরবর্তীতে সংঘর্ষে রূপ নেয়। উল্কার সঙ্গে যোগ দেয় ছাত্রলীগের আরও তিনটি গ্রুপের নেতাকর্মীরা।

এ সময় ব্যাপক ইট-পাটকেল ও কাঁচের বোতল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পুরো সড়ক পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। খবর পেয়ে রাত আড়াইটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পরে ধাওয়া দিয়ে দুই পক্ষকে হলে ঢুকিয়ে দেয় পুলিশ।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রসুল নিশানের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে ভিএক্স গ্রুপের নেতা ও সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক মিজানুর রহমান বিপুল বলেন, সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপুর বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে যাওয়ার পথে লালখান বাজার এলাকায় সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম নিশান রসুলকে অপহরণ করে মারধর করে ফেলে রাখা হয়। পরে টাইগারপাস এলাকা থেকে ছাত্রলীগ কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে।এ ঘটনার প্রতিবাদে কর্মীরা মূল ফটকে তালা দেয় ও কিছুটা উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে সিনিয়র নেতারা সকলকে হলে পাঠিয়ে দেয়। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।

তবে অপহরণের ঘটনাকে ‘সাজানো নাটক’ বলছেন সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা ও সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আবু তোরাব পরশ। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনো নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততা নেই। পূর্বপরিকল্পিতভাবে জামায়াত-শিবিরের স্টাইলে এক নেতাকে অপহরণের নাটক সাজিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর রাতের আঁধারে হামলা করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় আমরা আইনি ব্যবস্থা নিব।

বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আকতারুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে রাতে সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আলী আজগর চৌধুরী বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো ছাড় দেয়া হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!