ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | চট্টগ্রামে ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে তিনটি খুনের ঘটনা

চট্টগ্রামে ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে তিনটি খুনের ঘটনা

k-bg20171007202932

নিউজ ডেক্স : গত আগস্টে নগরীর নন্দনকাননে ইমরানুল করিম ইমন নামে এক যুবককে নৃশংসভাবে খুনের পর মরদেহ এসিডে গলানোর চেষ্টা করে তার বন্ধু যুবলীগ নামধারী ক্যাডার অমিত মুহুরী।  গণমাধ্যমে এই নৃশংস খুনের ঘটনা প্রকাশের পর দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।  এই ঘটনার দুই মাসের মাথায় নগরীতে ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত বিশ্বাসকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে।  এই দুটি ঘটনার মাঝে নগরীতে অন্ত:ত ১০টি চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা ঘটেছে গত দুই মাসে।

সর্বশেষ ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে তিনটি খুনের ঘটনাও ঘটেছে।  রাজনৈতিক বিরোধ, স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া, ছিনতাইকারীর হাতে খুন, পেশাদার অপরাধী গ্রুপের অভ্যন্তরীণ বিরোধ-নানা কারণে একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটেই চলেছে।

অধিকাংশ চাঞ্চল্যকর ঘটনার রহস্য পুলিশ উদঘাটন করতে পারলেও আসামি গ্রেফতারে তেমন সাফল্য নেই।  রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা প্রতিরোধেও পুলিশের কার্যকর কোন ভূমিকা নেই।  এই অবস্থায় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

জানতে চাইলে নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) সালেহ মো.তানভীর বাংলানিউজকে বলেন, যত খুনের ঘটনা ঘটছে এর কিছু পলিটিক্যাল আর কিছু ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স।  পলিটিক্যাল বিষয়, কার মাথা কখন গরম হয়ে যাচ্ছে, কার হাতে কখন ছুরি উঠে যাচ্ছে, এটা কিভাবে বুঝব।  আর ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স তো আগের থেকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কারও নেই।  তবে এটা বলতে পারি, ঘটনা ঘটার পর তদন্ত এবং আসামি গ্রেফতারে আমাদের কোন গাফেলতি নেই।

গত ১৩ আগস্ট ইমনের ড্রামভর্তি মরদেহ উদ্ধারের পর আসামি অমিত মুহুরীকে গ্রেফতারে সময় লেগেছে এক মাস।  ৩০ আগস্ট নগরীর পাহাড়তলী পাওয়ার হাউস এলাকায় যুবক আরিফ হোসেন ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে খুন হন।

২০ আগস্ট বায়েজিদের শেরশাহ এলাকায় পোশাক কর্মী জরিনা বেগম, ১৬ সেপ্টেম্বর আলকরণে গৃহবধূ আফসানা আক্তার স্বামীর হাতে খুন হন।  জরিনার স্বামী গ্রেফতার হলেও শান্তার স্বামীর হদিস নেই।  ৫ সেপ্টেম্বর নগরীর বড়পোল এলাকায় গৃহবধূ সোনিয়া আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

১৪ সেপ্টেম্বর নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় মাদকের টাকা না পেয়ে সাদিয়া সুলতানা লিজা নামে এক গৃহবধূকে এসিড ছুঁড়ে মারে স্বামী।  ওইদিন নগরীতে কর্ণফুলী নদী থেকে এক পুরুষের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।  ৫ অক্টোবর নগরীর কালুরঘাটে একটি পরিত্যক্ত কারখানার ভেতর থেকে দুই যুবকের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়, যারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই।

সর্বশেষ ৬ অক্টোবর নগরীর সদরঘাট থানার দক্ষিণ নালাপাড়া এলাকায় নগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাসকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে খুন করে দুর্বৃত্তরা।  থানা থেকে হাঁটাপথে মাত্র সাত মিনিটের দূরত্বে এই ঘটনা ঘটলেও পুলিশ জানতে পারে ঘটনার পাঁচ ঘণ্টা পর।

একইদিন নগরীর আকবর শাহ থানার কৈবল্যধাম এলাকায় ছুরিকাঘাতে জয় দাশ নামে এক যুবক খুন হয়েছেন।  পরদিন ৭ অক্টোবর নগরীর ডবলমুরিং থানার সুপারিপাড়া এলাকায় ইমন নামে এক যুবক খুন হয়েছেন।  ইমন পেশাদার ছিনতাইকারী এবং নিজেদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে ইমন খুন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ডবলমুরিং থানার ওসি একেএম মহিউদ্দিন সেলিম।

নগরজুড়ে ধারাবাহিক খুনের ঘটনায় চিন্তিত পুলিশ প্রশাসনও।  মাঠ পর্যায়ে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তা এবং শীর্ষপদে থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতাকেই অপরাধ বেড়ে যাবার কারণ বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা।

কয়েকজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, আগে নগরীতে একটি খুন কিংবা বড় অপরাধ ঘটলেই ১৬ থানাকে ‍অ্যালার্ট করা হত।  ডিবির টিম দ্রুত মাঠে নেমে যেত।  এখন সেই ধরনের কোন উদ্যোগ নেই।  ১৬ ‍থানার মধ্যে হাতেগোণা ৪-৫ জন ওসি ছাড়া বাকিদের চট্টগ্রামে কাজ করার অভিজ্ঞতাও নেই।  আন্তরিকতা এবং পেশাদারিত্বের অভাবেই নগরীতে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না। -বাংলানিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!