নিউজ ডেক্স : দেশের সব বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ল্যাবরেটরিকে আগামী বৃহস্পতিবারের (৯ আগস্ট) মধ্যে বিভিন্ন প্যাথলজি পরীক্ষার ফি, সেবার মূল্যতালিকা এবং চিকিৎসকের চিকিৎসা ফি’র (মূল্যতালিকা) তালিকা প্রকাশ্য (উন্মুক্ত) স্থানে টাঙাতে হবে। এক আদেশে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের বেসরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা শাখার যুগ্ম সচিব মো. সাইফুল্লাহিল আজমের স্বাক্ষরে গত ১ আগস্ট এ আদেশ জারি করা হয়। মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনার আলোকে উক্ত আদেশ বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণের জন্য প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার উদ্যোগ নিতেও স্বাস্থ্য অধিদফতরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে আদেশে।
জানতে চাইলে আদেশের তথ্য নিশ্চিত করে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. সাইফুল্লাহিল আজম গতকাল রাতে বলেন– এ সংক্রান্ত মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। আমরা মহামান্য আদালতের নির্দেশনার আলোকে এ আদেশ জারি করেছি। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিভিন্ন প্যাথলজি পরীক্ষার ফি, সেবার মূল্যতালিকা এবং চিকিৎসা ফির (মূল্যতালিকা) তালিকা প্রকাশ্য (উন্মুক্ত) স্থানে টাঙাতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটালে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান মন্ত্রণালয়ের এ যুগ্মসচিব।
এর আগে দেশের সব বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ল্যাবরেটরিতে বিভিন্ন প্যাথলজি পরীক্ষার ফি, সেবার মূল্যতালিকা এবং চিকিৎসকের চিকিৎসা ফির (মূল্যতালিকা) তালিকা প্রকাশ্য (উন্মুক্ত) স্থানে টাঙাতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। গত ২৪ জুলাই বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের দ্বৈত বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। আদেশে ১৫ দিনের মধ্যে এ তালিকা টাঙাতে বলা হয়। একই সঙ্গে আদেশ পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে মেডিক্যাল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স–১৯৮২ অনুযায়ী নীতিমালা তৈরি করতে এবং তা বাস্তবায়নের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলকে (বিএমডিসি) এ আদেশ বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়ে আগামী ৭ অক্টোবর পরবর্তী আদেশের দিন ধার্য করেছেন আদালত। আদালতের বেঁধে দেয়া সময় (১৫ দিনের মধ্যে) হিসেব করে আগামী ৯ আগস্টের মধ্যে এ নির্দেশ বাস্তবায়নে আদেশ জারি করলো স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গত– হিউম্যান রাইটস ল ইয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিং এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশের পক্ষে সংগঠনটির কোষাধ্যক্ষ মো. শাহ আলমের করা এক রিট আবেদনে এ নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। তাঁর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ড. বশির আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ। শুনানি শেষে আদালত অন্তবর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেছেন। রুলে সব বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স অনুমোদন, এসব প্রতিষ্ঠানে সেবা প্রদানের বিষয়টি তদারকি এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য মেডিক্যাল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স–১৯৮২ অনুসারে নীতিমালা তৈরির কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং সব জেলা সদরে সরকারি হাসপাতালে ৩০ বেডের ইনটেনসিভ করোনারি কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) ও করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) স্থাপনে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিএমডিসি, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) ও র্যাব মহাপরিচালককে (ডিজি) রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।