- Lohagaranews24 - http://lohagaranews24.com -

হেফাজতের নতুন কমিটি প্রত্যাখ্যান শফী অনুসারীদের

নিউজ ডেক্স : হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর নতুন কমিটি প্রত্যাখ্যানকারী অংশটি সিদ্ধান্ত নিতে ঢাকায় আলোচনায় বসছে আগামী শনিবার। রবিবার (১৫ নভেম্বর) হাটহাজারী মাদ্রাসায় সম্মেলনে নতুন কমিটি ঘোষণার পর একথা জানিয়েছেন বিলুপ্ত কমিটির নায়েবে আমির মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস।

হাটহাজারী মাদ্রাসায় সম্মেলনে সাবেক মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরীকে নতুন আমির এবং ঢাকা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক নূর হোসাইন কাসেমীকে নতুন মহাসচিব হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়।

কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনটির ঐ সম্মেলনে প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফীর অনুসারীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। হাটহাজারীতে যখন সম্মেলন চলছিল তখন ঢাকায় পূর্ব ধোলাইরপাড়ের আসকান টাওয়ারে মুফতি ওয়াক্কাসের নেতৃত্বে শফীর অনুসারীরা বৈঠক করেন।

বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে ওয়াক্কাস বলেন, “এই কমিটি সার্বজনীন হয়নি, এটাই বাস্তব। কোনো প্রকার নিয়ম অনুযায়ী হয়েছে বলে আমি কোনো দিক থেকে দেখছি না। আমাদের হাটহাজারী মাদ্রাসার আমিরের (আহমদ শফী) জন্য দোয়া মাহফিল করব। আগামী শনিবারে সেই দোয়া মাহফিল হবে। সেই সময় আমরা কাউন্সিল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেব।”

সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মাঈনুদ্দীন রুহী চট্টগ্রাম থেকে এসে এই বৈঠকে যোগ দেন। হাটহাজারীর আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত সম্মেলন নিয়ে মাওলানা রুহী বলেন, “(কেন্দ্রীয় কমিটির) ১৫১ সদস্যের মধ্যে ৬৫ জন সদস্য এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। সুতরাং এ কাউন্সিল সম্পূর্ণ অবৈধ এবং আমরা তা প্রত্যাখ্যান করছি।”

এই বছরের মাঝামাঝিতে শফীর ছেলে আনাস মাদানির সঙ্গে দ্বন্দ্বে মাদ্রাসার পদ হারান বাবুনগরী তবে হেফাজতের মহাসচিবের পদে থেকে যান। ঐ ঘটনার জের ধরে গত সেপ্টেম্বরে এক দল মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর বিক্ষোভের মুখে মাদ্রাসার মহাপরিচালকে পদ ছাড়েন আহমদ শফী; তার ছেলে আনাস মাদানিকেও বরখাস্ত করা হয়। এরপর বাবুনগরী আবার মাদ্রাসার পদে ফেরেন।

হাটহাজারী মাদ্রাসার কর্তৃত্ব হারানোর পরদিনই আহমদ শফী মারা যান। আমিরের শূন্যপদ পূরণে বাবুনগরীরা সক্রিয় হয়ে ওঠার পর থেকে তার বিরোধিতা করে আসছেন শফীর ‍অনুসারীরা।

মুফতি ওয়াক্কাস বলেন, “তিনি (আহমদ শফী) ইন্তেকাল করেছেন, একটা পদ শূন্য হয়েছে। শুধু আমিরের জায়গায় একজন আমির ঠিক করলেই হয়ে যেত কিন্তু এখানে কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে।”

আমন্ত্রণ না পাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি তো কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির এবং ঢাকা মহানগরে প্রধান উপদেষ্টা। আমাকে একটি চিঠিও দেওয়া হয় নাই, জানানোও হয়নি। এভাবে অনেকেই বাদ পড়ে গেছেন।”

হেফাজতে ইসলামের কর্তৃত্ব নিতে ষড়যন্ত্র চলছে বলেও মনে করেন এরশাদ আমলের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মুফতি ওয়াক্কাস।

তিনি বলেন, “বিশেষ মহলের ইঙ্গিতে, মনে হয় ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটা পদক্ষেপ। কারও ইঙ্গিতে এগুলো (কাউন্সিল) করা হয়েছে। কোনো একটা মহল যারা চায় না এদেশে ওলামায়ে কেরামরা থাকুক, কথা বলুক। এরকম সন্দেহ হচ্ছে আমার।”

গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে রুহী দাবি করেছিলেন, “আহমদ শফীকে পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর ‍মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল, আর তা ছিল ‘জামায়াত-শিবিরের ষড়যন্ত্র’।”

হেফাজতের কর্তৃত্ব জামায়াতে ইসলামী নিতে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করে আসছেন তিনি। বিডিনিউজ