- Lohagaranews24 - http://lohagaranews24.com -

সুখছড়ি স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী শারীরিক প্রতিবন্ধী পিউ দাশের অবিরাম সংগ্রাম

22-3-664x525

এলনিউজ২৪ডটকম : পিউ দাশ একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী ক্ষুদে শিক্ষার্থী। পা পা করে জীবন চলার সিঁড়ি পেরিয়ে বর্তমানে সে দশম শ্রেণীর ছাত্রী। তার পিতার নাম রনজিত দাশ, পেশায় একজন দোকানী। মাতার নাম কৃষ্ণা দাশ। পেশায় গৃহস্থী। উপজেলার কলাউজান ইউনিয়নের রাম দয়াল তহশীলদার পাড়ায় বাড়ি। বাড়ির অদূরে আমিরাবাদ ইউনিয়নস্থ সুখছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগ হতে সে আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। তার ভাই জয় দাশ পটিয়া সরকারি কলেজে এবং বোন চৈতী দাশ উল্লিখিত বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে লেখাপড়া করছে। পিউ দাশের বয়স প্রায় ১৬ বছর এবং উচ্চতা প্রায় ২ ফুট ৬ ইঞ্চি। সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। অন্যের সাহায্য ছাড়া নড়াচড়া করতে পারে না। দাঁড়াতে পারে না এবং স্বেচ্ছায় স্থানও পরিবর্তন করতে পারে না। হাত দুটো নড়াচড়া করতে পারে। তবে, তাও স্বাভাবিকভাবে নয়। সে বর্তমানে দশম শ্রেণীর নির্বাচনী পরীক্ষা দিচ্ছে। গত ১৫ অক্টোবর উক্ত বিদ্যালয়ে গেলে উল্লিখিত প্রতিবন্ধী ছাত্রীকে হল রুমে পরীক্ষা দিতে দেখা গেছে এবং তার মাতা কৃষ্ণা দাশ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের বাইরে টুলের পর বসেছিলেন। পিউ দাশের বিদ্যালয়ে উপস্থিতি ও লেখাপড়া সম্পর্কে মাতা কৃষ্ণা দাশ জানান, তাঁর কন্যা পিউ দাশ জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী। শৈশবকাল থেকে তাকে কোলে-পিঠে করে লালন-পালন করে আসছেন। কথা-বার্তা স্পষ্ট নয়। শারীরিক গঠন স্বাভাবিক থেকে ভিন্ন। সবসময় বসা থাকে। দেখলে মনে হয় একটি গোলাকার বৃত্ত। শৈশবে এ অবুঝ প্রতিবন্ধী শিশু কন্যার মনে আগ্রহ সৃষ্টি হয় লেখাপড়ার প্রতি। মাতা-পিতা ও ভাই-বোনদের অনুপ্রেরণায় লেখাপড়ার প্রতি তার আগ্রহ বেড়ে যায়। বিশাল সৃষ্টির মাঝে তার চাওয়া-পাওয়া তেমন কিছু নয়। লেখাপড়া করার প্রতি তার অদম্য উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে তাকে পূর্ব সুখছড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে হাইস্কুলে ভর্তি করা হয়েছে। সে ২০১৫ সালের জেএসসি পরীক্ষায় ৪.৩৫ গ্রেডে পাশ করে। এরপর তার শিক্ষা জীবন গতিশীল হওয়ায় আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করে। উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গঠনে পিউ দাশের জীবন-চক্রযান ঘুরছে অবিরত। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তার মাতা কৃষ্ণা দাশ জানান, বাড়ি থেকে তিনি নিজেই কোলে-পিঠে করে বিদ্যালয়ে আনা-নেয়া করেন। রাস্তাঘাট ভাল থাকলে মাঝে-মধ্যে হুইল চেয়ার করে আনা-নেয়া করা হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, পিউ দাশ শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষাথী। লেখাপড়ার প্রতি তার আগ্রহ খুব বেশি। তাই বিদ্যালয়ের সকলে তার প্রতি সদয়। -পূর্বকোণ