মারুফ খান : লোহাগাড়ায় ২০১৯ সালে সড়ক দূর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত ও ৬০ জন আহত হয়েছেন। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া সীমানা ও উপজেলার বিভিন্ন সড়কে দূর্ঘটনায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। পুরো বছরের সড়ক দূর্ঘটনার সংবাদগুলো পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া যায়।
২ ফেব্রুয়ারী চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় বাসের ধাক্কায় রূপন কান্তি দাশ (৫০) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছিল। ২৫ ফেব্রুয়ারী লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ির হেলপার মুকুল শেখ (৪০) ও চুনতি ফরেষ্ট অফিস এলাকায় ম্যাজিক গাড়ির ধাক্কায় পথচারী লিটন শীল (২৮) নিহত হয়েছিল।
৬ মার্চ পদুয়া পেঠান শাহ গেইট এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় আবু বক্কার (১০) নামে এক শিশু নিহত হয়েছিল। ২৬ মার্চ বার আউলিয়া মাজার গেইটের উত্তরে মীরপাড়া রোডের মুখে রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকের চাপায় মোছাম্মৎ আবিদা (৬) নামে এক কন্যাশিশু নিহত হয়েছিল। ২৮ মার্চ চুনতি জাঙ্গালিয়ার সীমান্ত গেইট এলাকায় যাত্রীবাহী বাস ও মাইক্রোবাস মুখোমুখি সংঘর্ষে মহিলা-শিশুসহ ৮ জন নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছিল। নিহতরা হলেন আফজাল হোসেন ওরফে সোহেল (৩০), আবু সিদ্দিকের পুত্র মোঃ সায়েম (২২), নুরুল হুদা (২৪), আবদুস শুক্কুর (২৮), তসলিমা আক্তার (২২), সাদিয়া (১৮ মাস), হাসিনা মমতাজ (৪৫) ও অজ্ঞাতনামা (২৬)।
২০ এপ্রিল চরম্বা নয়াবাজারের পশ্চিমে টংকাবতী সড়কে তামাকপাতাবাহী মিনিট্রাক উল্টে নজরুল ইসলাম (৩০) নামে এক শ্রমিক নিহত ও চালকসহ অপর ২ জন আহত হয়েছিল। ২২ এপ্রিল লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের নেয়াজের টেক এলাকায় সড়ক দূর্ঘটনা ১ জন এএসআই ও ৩ জন সিপাহী আহত হয়েছিল। ২১ এপ্রিল আলুরঘাট সড়কের দর্জিপাড়া সংযোগস্থলে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আহমদ কবির (৭০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছিল।
৩ মে আধুনগর ব্রীজ সন্নিকটে এক ফিলিং ষ্টেশনের সামনে মাইক্রোবাসের ধাক্কায় হাজী আবুল কাশেম সওদাগর (৭০) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছিল। ১২ মে লোহাগাড়া বটতলী মোটর ষ্টেশনে রাস্তা পার হওয়ার সময় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নাইমুল ইসলাম তামিম (৫) নামে এক শিশু নিহত হয়েছিল।
১০ জুন আমিরাবাদ রাজঘাটা ব্রীজ এলাকায় ফলবাহী একটি মিনিট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ২ ব্যবসায়ী আহত হয়েছিল। ৪ জুন আমিরাবাদ মল্লিক ছোবহান তজু মুন্সি গ্যারেজ এলাকায় মুখোমুখি সংঘর্ষে মাওলানা জিয়াবুল হক (৪০) নামে ম্যাজিক গাড়ির চালক নিহত হয়েছিল। ১৪ জুন আধুনগর খাস মহাল এলাকায় সিএনজি অটোরিক্সার ধাক্কায় আরফাত হোসেন (২৪) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী গুরতর আহত হয়েছিল।
২৭ জুলাই চুনতি হাজি রাস্তার মাথা এলাকায় বাস ও সিএনজি অটোরিক্সার মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক সাইফুল ইসলাম (২৮) নিহত ও মোঃ ওসমান সিকদার (৩০) নামে এক যাত্রী আহত হয়েছিল।
৬ আগষ্ট চুনতি সুফি নগর এলাকায় বাসের ধাক্কায় মোঃ ওমর উল্লাহ (১০) নামে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছিল। ১৮ আগষ্ট চুনতি বনপুকুর এলাকায় মাহেন্দ্রা ও প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে আবদুল মান্নান (৭০) নামে এক যাত্রী নিহত ও চালকসহ ১০ যাত্রী আহত হয়েছিল।
৬ সেপ্টেম্বর চুনতি নলবনিয়া এলাকায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ ১৫ জন আহত হয়েছিল। ২৯ সেপ্টেম্বর আমিরাবাদ রাজঘাটা এলাকায় বাসের ধাক্কায় মানসিক ভারসাম্যহীন অজ্ঞাত এক যুবক আহত হয়েছিল।
২ অক্টোবর পদুয়া ঠাকুরদিঘী এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় মাইক্রোবাসের ধাক্কায় মোঃ জাহেদুল ইসলাম (১২) নামে হেফজখানার এক ছাত্র নিহত হয়েছিল।
৬ নভেম্বর বটতলী মোটর ষ্টেশনে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় মোঃ হাতিম হোসেন লিমন (২৪) নামে মোটরসাইকেল আরোহী এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছিল। ২২ নভেম্বর চুনতি বনপুকুর এলাকায় বাসের ধাক্কায় মোঃ ইসমাঈল (২১) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত ও অপর ১ জন আহত হয়েছিল।
৭ ডিসেম্বর আধুনগর হাতিয়ারকুল এলাকায় বাসের ধাক্কায় মোঃ ছলিমুল্লাহ (৩৩) ও মোঃ ফাহাদ (১৬) নামে দুই মোটরসাইকেল আরোহী গুরতর আহত হয়েছিল। ৫ ডিসেম্বর চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক মোঃ রায়হান (২৭) নিহত ও ৮ জন আহত হয়েছিল। ২৬ ডিসেম্বর চুনতি বনপুকুর এলাকায় লরি গাড়ির ধাক্কায় পলাশ দাশ (৩৫) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছিল। ২৮ ডিসেম্বর চুনতি মিঠার দোকান এলাকায় ট্রাক-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে ২ জন মহিলা যাত্রী আহত হয়েছিল। ৩০ ডিসেম্বর চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় ২টি কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে সিরাজুল ইসলাম (৩৫) নামে এক চালক নিহত হয়েছিল।
নিরাপদ সড়ক চাই লোহাগাড়া উপজেলা শাখার আহবায়ক মোজাহিদ হোসাইন সাগর জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত না হওয়া, মহাসড়কের লোহাগাড়া সীমানায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক বেশী থাকা ও দূর্ঘটনা প্রবন এলাকায় সর্তকতামূলক রোড সাইন না থাকায় দূর্ঘটনা মূল কারণ।
দোহাজারী হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইয়াছিন আরাফাত জানান, অদক্ষ চালক, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ও আঁকাবাঁকা সড়কের কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া সীমানায় সড়ক দূঘটনা বেশি হয়ে থাকে।