- Lohagaranews24 - http://lohagaranews24.com -

সাত মাসে মাত্র ১৬ শতাংশ নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড

ed3d20f45f75b0999e54ef416fc91f7d-584aaa2d247eb

নিউজ ডেক্স : গত ১৬ মার্চ নগরীর দুটি ওয়ার্ডে জাতীয় পরিচয়পত্র ‘স্মার্টকার্ড’ বিতরণ শুরু হয়। কোতোয়ালী থানার ১৩ নং পাহাড়তলী ও ডবলমুরিং থানার ১৫ নং বাগমনিরাম ওয়ার্ডে কার্ড বিতরণের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু হয়। ৭ মাসে দুই থানার অধীনে ১৫ ওয়ার্ডে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হয়েছে। নগরীর ৪১ ওয়ার্ডের মধ্যে বাকি রয়েছে আরও ২৬ ওয়ার্ড। এই অবস্থা চলতে থাকলে বাকি ২৬ ওয়ার্ডে কার্ড বিতরণে অন্তত আরও ১৩ মাস সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি ও ভোটার তালিকা হালনাগাদ নিয়ে এখন বেসামাল অবস্থা নির্বাচন কমিশনের।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মইন উদ্দিন খান গতকাল বলেন, ‘এখন দুটি ওয়ার্ডে কার্ড বিতরণ করা হচ্ছে। জনবল ও সরঞ্জাম সংকটে পুরোদমে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা যাচ্ছে না। আরও দুই–তিনটি ওয়ার্ডে চালু করা গেলে নাগরিকদের জন্য সুবিধা হতো।’ এই বিষয়টি নির্বাচন কমিশনার (ইসি) কার্যালয়ে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ৩১ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর কমিশনের কার্যক্রম অনেকটা

গুটিয়ে আসবে। তখন থেকে স্মার্টকার্ড নিয়ে পুরোদমে কাজ শুরু করা যাবে। তবে এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে।

আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, নগরীর দুই ওয়ার্ডে দুটি টিম স্মার্টকার্ড বিতরণে কাজ করছে। কোতোয়ালী থানার টিমে কাজ করছেন ১৮ জন। টিমের সদস্যরা দুই ভাগে ভাগ হয়ে কার্ড বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। টিমে অপারেটর ১০ জন, ৬ জন সহকারী অপারেটর, একজন টিম লিটার ও একজন সাপোর্টার কাজ করছেন। ডবলমুরিং থানার টিমে কাজ করছেন ২৬ জন। তিন ভাগে ভাগ হয়ে কাজ করছেন টিমের সদস্যরা। টিমে অপারেটর আছেন ১৫ জন, সহকারী অপারেটর ৯ জন, টিম লিডার একজন ও সাপোর্টার একজন।

Page-1_03

ডবলমুরিং থানার অধীনে রয়েছে নয়টি ওয়ার্ড। এরমধ্যে ৬টি ওয়ার্ডে কার্ড বিতরণ শেষ হয়েছে। ২৮ নং ওয়ার্ডে কার্ড বিতরণ চলমান রয়েছে। কোতোয়ালী থানার অধীনে রয়েছে ১০টি ওয়ার্ড। এরমধ্যে ৯টি ওয়ার্ডে কার্ড বিতরণ শেষ হয়েছে। চলতি মাসে বিতরণ কার্যক্রম শেষ হবে।

কোতোয়ালী থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘অক্টোবরে কোতোয়ালী থানার ১০ ওয়ার্ডে কার্ড বিতরণ কার্যক্রম শেষ হবে। এরপর নতুন করে চান্দগাঁও থানার ওয়ার্ডগুলোতে বিতরণ শুরু হবে।’ প্রায় ৬০ শতাংশ কার্ড বিতরণ কার্যক্রম শেষ করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, অনেক ভোটারের কার্ড পৌঁছেনি। অনেকের কার্ডে নাম ঠিকানায় ভুল হয়েছে। এরকম সাড়ে তিন হাজার লোকের আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ সংগ্রহ করে নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে। তবে কমিশন থেকে এসব ভোটারের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি।

জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, কোতোয়ালীতে ভোটার রয়েছেন দুই লাখ ৩৫ হাজার ৪৫ জন। এরমধ্যে স্মার্টকার্ড পেয়েছেন এক লাখ ২৪ হাজার ২৭২ জন। অর্থাৎ ৫৩ শতাংশ ভোটার স্মার্টকার্ড পেয়েছেন। ডবলমুরিং থানায় ভোটার রয়েছেন তিন লাখ ৯৮ হাজার ২১৬ জন। এরমধ্যে স্মার্টকার্ড পেয়েছেন এক লাখ ৭৭ হাজার ৪৬৯ জন ভোটার। অর্থাৎ ৪৫ শতাংশ ভোটারের কাছে কার্ড তুলে দেওয়া হয়েছে।

জনবল সংকট ও সরঞ্জামাদির অভাবে নগরীতে পুরোদমে স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু করা যাচ্ছে না বলে জানান নির্বাচন কর্মকর্তারা। শুধু দুটি ওয়ার্ডে কার্ড বিতরণের সরঞ্জাম রয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরীতে ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৬১৫ জন ভোটার রয়েছেন। সব ভোটারের স্মার্টকার্ড জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে পড়ে রয়েছে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান বলেন, ‘নগরীর ভোটারদের কার্ড পৌঁছে গেছে। জনবল সংকট ও সরঞ্জামের অভাবে পুরোদমে কার্ড বিতরণ করা যাচ্ছে না।

এক নির্বাচন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নির্বাচন কমিশমনার অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু করছিল। কিন্তু জনবল ও সরঞ্জামের অভাবে কার্ড পৌঁছার এক মাস পর তা বিতরণ করতে হয়েছে। স্মার্টকার্ড বিতরণের সময় ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও ডিভাইসের মাধ্যমে চোখের মণির ছবি নেওয়া হচ্ছে।

নির্বাচন কার্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, চলতি বছরের নভেম্বর মাসে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কার্যক্রম শেষ করা হবে। জানুয়ারিতে খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে। জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে হালনাগাদ কার্যক্রম করা হচ্ছে। এসব নিয়ে আগামী বছর নির্বাচন কমিশন ব্যস্ত থাকবে। তখন স্মার্টকার্ড বিতরণে আরও সংকট দেখা দেবে বলে জানান তারা। -পূর্বকোণ