- Lohagaranews24 - http://lohagaranews24.com -

সাতকানিয়ায় ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ে বন্ধ

b

নিউজ ডেক্স : বিয়ের আকদ হয়ে গেছে। কাবিন নামায় স্বাক্ষর করা বাকি। কিছুক্ষণ পরেই খাবারের পালা। ধুমধাম সব আয়োজন সম্পন্ন। কিন্তু সবকিছু হওয়ার পরও যেন কিছুই হলো না। নতুন পাঞ্জাবি–পায়জামা পড়েও শ্বশুর বাড়ি যাওয়া হলো না বরের। সব আত্মীয় স্বজনদের সামনে বর যেন লজ্জায় বার বার ভেঙে পড়ছিল। বিয়েতো হলোই না, উল্টো বর–কনে পক্ষের অভিভাবকদের অঙ্গীকারনামা দিতে হলো। সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবারক হোসেনের হস্তক্ষেপে বন্ধ হলো সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ের বাল্যবিয়ে।

স্বাচিপের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাতকানিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান জানান, লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের রাজঘাটা এলাকার মোহাম্মদ জহির উদ্দিন সাতকানিয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের ভোয়ালিয়া পাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তাঁর মেয়ে নার্গিস আকতার (১৩) সাতকানিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। এরই মধ্যে জানতে পারলাম সাতকানিয়া পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সতিপাড়ার বাসিন্দা আবদুল কাদেরের পুত্র মোহাম্মদ সোহেলের সাথে তাঁর বিয়ে ঠিক হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আকদ এবং পরে খাবারের আয়োজন করা হয়। বিষয়টি প্রথমে স্থানীয় কাউন্সিলর নেচার আহমদকে জানায়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবারক হোসেন এবং ওসি মোঃ রফিকুল হোসেনকে জানালাম। ততক্ষণে সাতকানিয়া জুমা মসজিদে বিয়ের আকদ হয়ে গেছে। কাবিননামা লেখার কাজও প্রায় শেষ। বাকি শুধু স্বাক্ষর করা। এরই মধ্যে সাতকানিয়া থানা পুলিশ গিয়ে হাজির। জানানো হলো বাল্যবিয়ের বর ও কনের অভিভাবকদেরকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে যেতে হবে। কথা শুনে সবাই অবাক। বিয়ের কাবিননামা এবং খাবারের সব আয়োজন তাৎক্ষণিক বন্ধ রেখে বর ও কনে অভিভাবকদের নিয়ে গেলো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে। রাত ৮ টার দিকে দুই পক্ষের অভিভাবকদেরকে বাল্যবিয়ের কুফল ও আইনে শাস্তির বিধানসহ সবকিছু বলার পর তারা বিয়ে বন্ধ করার বিষয়ে একমত হন। পরে কনের পিতা মেয়েকে প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বাল্যবিয়ে দিবে না মর্মে অঙ্গীকারনামা প্রদান করেন। একই সাথে বরের পিতাও বাল্যবিয়ে বন্ধ রাখার বিষয়ে অঙ্গীকার নামা দেন।

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মোবারক হোসেন জানান, গতকাল সন্ধ্যায় সাতকানিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী নার্গিস আকতারের বিয়ের আকদ হওয়ার কথা ছিল। বাল্যবিয়ে হওয়ার খবর পেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশের মাধ্যমে দুই পক্ষের অভিভাবকদের ডেকে অফিসে নিয়ে আসি। পরে তাদেরকে বাল্যবিয়ের কুফল এবং আয়োজকদের শাস্তির বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর পর তারা নিজেরাই বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে একমত হয়েছে। তখন কনের বাবা মেয়ের বয়স ১৮ পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দিবে না এবং বিয়ে দিতে হলে উপযুক্ত আদালতের অনুমতি নিয়ে বিয়ের আয়োজন করবে মর্মে অঙ্গীকারনামা প্রদান করেন। এছাড়া বরের পিতাও বাল্যবিয়ে বন্ধের বিষয়ে অঙ্গীকারনামা দেন। -আজাদী