নিউজ ডেক্স : কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির চলতি সেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার। ৭টি সম্পাদকীয় ও ৯টি সাধারণ সদস্য পদের বিপরীতে দুইটি প্যানেলে ৩৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নেতা নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ৬৫২ আইনজীবী।
দেড় সপ্তাহ ধরে চলা নির্বাচনী প্রচারণায় ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চালিয়েছেন প্রার্থীরা। কিন্তু নিয়মানুসারে বৃহস্পতিবার রাতেই শেষ হয়েছে প্রচারণা। এরপরও শেষ বারের মতো শুক্রবারও অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ করে শেষবারের মতো নিজের ও প্যানেলের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন অনেক প্রার্থী। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমর্থন চেয়ে পোস্ট করেছেন। চারিদিকে শুধু ব্যানার আর পেস্টুনে আদালত প্রাঙ্গনে বইছে নির্বাচনী আমেজ।
এবার প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্যানেলের মূল প্রার্থীসহ অনেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অতিশয় যোগ্য। তাই ভোটের পাল্লা কোনো দিকে ভারি হচ্ছে, তা সহজে অনুমান করা যাচ্ছে না। কিন্তু নতুন অন্তর্ভুক্ত হওয়া আইনজীবীরাই জয়-পরাজয়ে ফ্যাক্টর হতে পারে বলে ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের। এটি মাথায় রেখেই প্রার্থীরা যে যার মতো কৌশলে নবীন ভোটারদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছেন। তবে তা কে কতটুকু পেরেছেন সেটি জানতে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
কার্য-নির্বাহী পরিষদ নির্বাচন-২০১৭ এর প্রধান নির্বাচন কমিশনার এম. শাহজাহান অ্যাড. জানান, শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জেলা বার প্রাঙ্গনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
নবীন-প্রবীণ মিলে ৬৫২ আইনজীবী ভোটাধিকার প্রয়োগ করে এক বছরের জন্য নতুন নেতৃত্ব ঠিক করবেন। ৭টি সম্পাদকীয় পদ ও ৯টি সাধারণ সদস্যপদে দুই প্যানেলে ৩৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ মনোনীত প্যানেল থেকে সভাপতি প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইছহাক-১ ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অ্যাড. জিয়া উদ্দিন আহমদ।
‘ইছহাক-জিয়াউদ্দিন’ প্যানেলের সহ-সভাপতি প্রার্থী নুরুল আমিন ও মোহাম্মদ জাকারিয়া, সহ-সাধারণ সম্পাদক (সাধারণ) আবদুল শুক্কুর, সহ-সাধারণ সম্পাদক (হিসাব) রাহামত উল্লাহ, পাঠাগার সম্পাদক আবুল হোছন এবং আপ্যায়ন ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এ.বি.এম মহিউদ্দীন।
এই প্যানেলের সদস্য পদে পীযুষ কান্তি চৌধুরী, আমজাদ হোসেন, আবুল কাশেম-২, মাহবুবুর রহমান, মোহাম্মদ নুরুল আজিম, খাইরুল আমিন, সোমেন দেব, মীরাজুল হক চৌধুরী ও লিপিকা পাল প্রার্থী হয়েছেন।
অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদী, ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী সমমনা আইনজীবীদের মনোনীত প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী এস.এম নুরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক পদে মোহাম্মদ আখতার উদ্দিন হেলালী।
এ প্যানেলের সহ-সভাপতি সাদেক উল্লাহ ও রমিজ আহমদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক (সাধারণ) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, সহ-সাধারণ সম্পাদক (হিসাব) মোহাম্মদ এনামুল হক সিকদার, পাঠাগার সম্পাদক মোহাম্মদ শামীমুল ইসলাম এবং আপ্যায়ন ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ছৈয়দ আলম।
সাধারণ সদস্য পদে আবুল কালাম ছিদ্দিকী, মোহাম্মদ আবুল আলা, সব্বির আহমদ, মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন ফারুকী, মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, ছৈয়দ আলম, মোহাম্মদ গোলাম ফারুক খান, এ.এইচ.এম শাহজাহান এবং মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম (টিপু) প্রার্থী হয়েছেন।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অ্যাড. কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, চেহারা বা প্যানেল বিবেচনায় নয়, দক্ষতা ও যোগ্যতা বিবেচনা করে আইনজীবীরা নেতা নির্বাচন করবেন।
ভোটারদের মতে, কর্মদক্ষ, সাহসী, জুনিয়র আইনজীবীদের চেম্বার সংকট নিরসনে নতুন ভবন নির্মাণ, জমির লিজ সম্পাদন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত পাঁচ কোটি টাকা আনায়ন, বেঞ্চ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা, বার ও বেঞ্চের মর্যাদাপূর্ণ সম্পর্ক সমুন্নত রেখে বিচারপ্রার্থী অসহায় জনসাধারণের ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ প্রার্থীদের নির্বাচিত করা দরকার।
২০১৬ সালের বর্ষে কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২৭ ফেব্রুয়ারি। এতে সমান ভোট পেয়ে যৌথভাবে সভাপতি নির্বাচিত হন আবুল কালাম ছিদ্দিকী ও মোহাম্মদ ইছহাক। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল থেকে আ.জ.ম মঈন উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত জেলা আইনজীবী সমিতির বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৬৫২ জন। নতুন অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন ৬৭ জন। এরাই শনিবারের নির্বাচনে প্যানেলের জয়-পরাজয় নির্ণয়ে ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।