নিউজ ডেক্স : প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা বলেছেন, দেশের ব্যবসায়ীরা শত শত কোটি টাকার লেনদেন করেন। জাল নথি ও ব্যাংক গ্যারান্টি দিয়ে পণ্য আমদানি রফতানি করেন কিন্তু যখন এই বিষয়টি ধরা পড়ে তখন জড়িতদের খুঁজে পাওয়া যায় না। এটাই আমাদের দেশের প্রকৃত ঘটনা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে নিম্ন হারের ইনকাম ট্যাক্স (আয়কর) ধরা হলেও দেশের শত শত কোটি টাকার মালিক ও অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা ইনকাম ট্যাক্স (আয়কর) দেন না।
সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত শনিবার সুপ্রিম কোর্ট নতুন মিলনায়তনে এক মতবিনিময় ও প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এই কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, যারা আয়কর দেন না তাদের সরকারি আইনগত সহায়তা সেবা দেয়ার যে প্রস্তাব এসেছে তার সঙ্গে আমি একমত নই। কারণ আমাদের দেশে সবচেয়ে কম হারে সরকার কর আদায় করে। একটি টিআইএন নম্বর ব্যবহার করে অনেকেই একাধিক গাড়ি ব্যবহার করছেন। কিন্তু আয়কর দেন না। ফলে যারা আয়কর দেন না তাদের আইনগত সহায়তা দেয়ার প্রস্তাব এটা কার্যকর করা ঠিক হবে না।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নিয়োগের বিষয়ে বিচারপতি এস কে সিনহা বলেন, আগে প্রতিটি জেলায় প্রখ্যাত আইনজীবীরা ফৌজদারি মামলায় এপিপি হিসেবে নিয়োগ পেতেন। এই নীতি বেশকিছু সময় চলার পর এখন আর দেখা যাচ্ছে না। এখন এপিপি বলতে যেকোনো সরকারি দলের, যে-ই থাকে, তাদের একটি প্যানেল লিস্ট করা হয়। এর বাইরে নিয়োগ দেয়া হয় না।
লিগ্যাল এইড কমিটির প্যানেল আইনজীবীদের বিপরীতে সংশ্লিষ্ট মামলায় প্রথিতযশা আইনজীবীদের নিয়োজিত থাকার বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, তখন ভারসাম্য থাকে না।
তিনি বলেন, কাউকে খাটো করার জন্য বলছি না। এক পক্ষে প্রথিতযশা ও অভিজ্ঞরা থাকেন; অন্য পক্ষে মোটামুটি প্রখ্যাত না। অনভিজ্ঞরা থাকেন। এ ক্ষেত্রে খাপ খায় না। এর ফলে সরকারি তহবিল থেকে টাকা চলে যাচ্ছে, প্রকৃতপক্ষে দুস্থরা বিচার পাচ্ছেন না।
অনুষ্ঠানে দুস্থদের পক্ষে প্রখ্যাত আইনজীবী নিয়োগের জন্য প্রধান বিচারপতি ব্যক্তিগতভাবে একটি তহবিল গঠন করার ঘোষণা দেন।
সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান এম. ইনায়েতুর রহিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ইউসূফ হোসেন হুমায়ুন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বক্তব্য রাখেন।