- Lohagaranews24 - http://lohagaranews24.com -

লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে স্থানীয় সাংসদের

617

নিউজ ডেক্স : লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে স্থানীয় সাংসদ আবু রেজা নিজামুদ্দীন নদভীর। নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগকে এড়িয়ে চলছেন তিনি। নিজের অনুসারীদের নিয়ে তিনি আলাদাভাবে সভা করেন। পাশাপাশি বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জামায়াত প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন দেওয়ারও অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন সাংসদ নদভী।

লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরী বলেন, সাংসদ নদভী নির্বাচিত হওয়ার পর উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়েছেন। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলার বড় হাতিয়া ইউনিয়নের নির্বাচনে তিনি জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী মো. জুনায়েদকে সমর্থন দিয়েছেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সাজেদুর রহমানকে পরাজিত করে জামায়াত প্রার্থী ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ ছাড়া যুবলীগের কমিটিতে তিনি জামায়াতের কর্মীকে সদস্য করেছেন। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের অনেক দলীয় সভা তিনি পুলিশ দিয়ে বানচাল করেছেন। গত ৭ আগস্ট উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় দলের বেশ কয়েকজন নেতা সাংসদের সংগঠনবিরোধী নানা কর্মকাণ্ডের সমালোচনাও করেছেন। সংগঠন ও সাংসদের মধ্যে সমঝোতা না থাকলে আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোটের ফল নৌকার বিপক্ষে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন হিরু বলেন, ‘বিগত সংসদ নির্বাচনে আমরা নদভীর পক্ষে কাজ করেছি। কিন্তু তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সম্পর্কে বিভিন্ন সময় নানা কটূক্তি করেছেন এবং সামাজিকভাবে হেয় করেছেন। স্থানীয় অনেক নেতা-কর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে তিনি জেল খাটিয়েছেন।’

উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন বলেন, স্থানীয় সাংসদের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের বিরোধের কারণে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অচিরেই এ দ্বন্দ্ব নিরসন হওয়া উচিত।

তবে সাংসদের পক্ষে অবস্থানকারী লোহাগাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ এম গনি বলেন, গুটি কয়েক নেতা সাংসদের বিরুদ্ধাচরণ করছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের কেউ কেউ বিগত সংসদ নির্বাচনে নদভীকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়াটা মেনে নিতে পারেননি। এ কারণে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।

এ ব্যাপারে সাংসদ নদভী প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে কিছু দূরত্ব থাকলেও অচিরেই কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বসে তা নিরসন করা হবে। উপজেলা আওয়ামী লীগের কারও বিরুদ্ধে তিনি কোনো কটূক্তি করেননি বলে দাবি করেন। এ ছাড়া কোনো নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থীকেও তিনি সমর্থন করেননি। জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ভিত্তিহীন। ভবিষ্যতে এ আসনে যিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন তাঁর পক্ষেই কাজ করবেন বলে জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগে কোনো বিরোধ নেই। তবে সাংসদের সঙ্গে কী নিয়ে বিরোধ তা তাঁর জানা নেই।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ বলেন, লোহাগাড়ায় উপজেলায় সাংসদের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব চলছে। এই দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করছে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ। -প্রথম আলো