- Lohagaranews24 - http://lohagaranews24.com -

লোহাগাড়ায় সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ৩৬, আহত ৩৭

এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়ায় ২০২০ সালে সড়ক দূর্ঘটনায় ৩৬ জন নিহত ও ৩৭ জন আহত হয়েছেন। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া সীমানা ও উপজেলার বিভিন্ন সড়কে দূর্ঘটনায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। পুরো বছরের সড়ক দূর্ঘটনার সংবাদগুলো পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া যায়।

১১ জানুয়ারি লোহাগাড়া সদরের আলহাজ¦ মোস্তফিজুর রহমান বিশ^বিদ্যালয় কলেজ গেইট এলাকায় হাইয়েচের ধাক্কায় বিশাল বড়ুয়া (২২) ও উত্তম বড়ুয়া (২১) নামে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছিল। ১৮ জানুয়ারি পদুয়া ঠাকুরদিঘী এলাকায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় সাবেরা বেগম (৫৫) নামে এক বৃদ্ধা নিয়ে হয়েছিল। ৩০ জানুয়ারি পশ্চিম কলাউজান বাংলা বাজার এলাকায় ডাম্পট্রাকের ধাক্কায় রিফাত হোসেন (২০) ও সাজ্জাদ হোসেন (১৮) নামে দুই মোটরসাইকেল আরোহী আহত হয়েছিলেন।

১১ মার্চ চুনতি নলবনিয়া এলাকায় মালবাহী ট্রলি খাদে পড়ে চালক মো. ইসমাইল (৩৮), শ্রমিক আবদুল হাকিম (৪৫) ও মো. আমিন (৪৯) নিহত হয়েছিলেন। ৭ মার্চ দরবেশহাট ডিসি সড়কে সিএনজি চালিত অটোরিক্সার ধাক্কায় মো. সামির (৬) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। ২২ মার্চ চুনতি জাঙ্গালিয়া ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে যাত্রীবাহী পিকআপ ও লবনবাহী ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৫ জন নিহত ও ২ জন হয়েছিলেন। তারা হলেন যথাক্রমে জসিম উদ্দিন (২৮), বেলাল হোসেন তাওরাত (১৭), মো. বাদশা (৩৮), মো. আব্দুল ছালাম (৭০), সিরাজুল ইসলাম (৪০) মো. রুবেল (২০), জহির উদ্দিন (২৮) মো. এনাম (৪৫), আবদুর রশিদ (৬৫), মো. ফরহাদ (১৫), আবদুর রশিদ প্রকাশ রইস্যা (৫০), মো. সুমন (১৫), লালু ফকির (৪৫), জসিম উদ্দন (৪০) ও নবী হোসেন (৪২)। ২৭ মার্চ পদুয়া নয়া পাড়া এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাইভেট কার উল্টে চালক আবদুর রহিম (৩৮) আহত হয়েছিলেন।

১৬ এপ্রিল পদুয়া তুলাতলী এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের উপর উল্টে মো. পারভেজ (২৫) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছিলেন। ৩০ মে আধুনগর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার সামনে দ্রুতগতির ট্রাকের ধাক্কায় আনোয়ার হোসেন (৩২) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী আহত হয়েছিলেন। ২১ জুন আমিরাবাদ রাজঘাটা এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় জয়দেব জলদাশ (৪২) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছিলেন।

১৬ জুলাই আমিরাবাদ কিল্লার আন্দর এলাকায় মাইক্রোবাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই মোটরসাইকেল আরোহীর মধ্যে মো. জাহাঙ্গীর (২৯) নিহত ও মো. আরিফ (২৬) আহত হয়েছিলেন। ২৬ জুলাই পদুয়া পেঠান শাহ্ গেইট এলাকায় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘষে আবদুর রহিম (৩২) ও মো. হানিফ (১৫) নামে শ্যালক-দুলাভাই গুরতর আহত হয়েছিলেন। ২৮ জুলাই বার আউলিয়া মাজারের মাঝে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বশির আহমদ (৫৬) নামে বৃদ্ধ ও চুনতি ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন এলাকায় অজ্ঞাত গাড়ির ধাক্কায় মোহাম্মদ ইমরান (২৬) নামে এক প্রতিবন্ধী নিহত হয়েছিলেন। ৩০ জুলাই আমিরাবাদের বার আউলিয়া বিশ^বিদ্যালয় কলেজ গেইট এলাকায় মালবোঝাই ট্রাকের সাথে সংঘর্ষে মোহাম্মদ শওকত (২৫) ও মোস্তফিজুর রহমান (৩২) নামে দুই বাসযাত্রী নিহত হয়েছিলেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছিলেন আরো ১৫ জন বাসযাত্রী।

৪ আগস্ট আমিরবাদের বার আউলিয়া বিশ^বিদ্যালয় কলেজ গেইট এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছিটকে পড়ে হেলাল উদ্দিন (২৪) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছিলেন। এ ঘটনা আহত হয়েছিলেন ফরিদুল আলম (২৪) নামে আরেক মোটরসাইকেল আরোহী। ৬ আগস্ট লোহারদিঘীর পাড় এলাকায় বাসের ধাক্কায় মোজাম্মেল হক (২৭) ও মিজানুর রহমান ফাহিম (২৫) নামে দুই মোটরসাইকেল আরোহী আহত হয়েছিলেন। ৩১ আগস্ট পদুয়া সিকদার দিঘীর পাড় এলাকায় বাসের ধাক্কায় মো. হাসান (১৯) এক সিএনজি অটোরিক্সা আরোহী নিহত হয়েছিলেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছিলেন চালকসহ আরো ৩ জন।

১০ সেপ্টেম্বর আমিরাবাদ রাজঘাটা এলাকায় বাসের ধাক্কায় মো. হাশেম (৩৩) নামে এক পরিচ্ছন্নকর্মী আহত হয়েছিলেন। ১৪ সেপ্টেম্বর চুনতি ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে মাইক্রোবাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে শাহাদত হোসেন (২৫) ও মুহাইমিন ইসলাম (২৪) নামে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছিলেন।

১২ নভেম্বর সদর ইউনিয়নের পুরাতন থানার গেইট এলাকায় যাত্রীবাহী ও সিএনজি অটেরিক্সার মধ্যে সংঘর্ষে আনোয়ার হোসেন (৫০) নামে এক ব্যবসায়ীর নিহত হয়েছিলেন। ২৪ নভেম্বর চুনতি ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে যাত্রীবাহী ও সিমেন্ট মিক্সার ট্রাকের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষে মো. জসিম (৪০), মো. আমিন (২৫), মো. রফিকুল ইসলাম (৩০) ও মো. শরিফ (২৬) নামে ৪ জন আহত হয়েছিলেন।

২ ডিসেম্বর পুটিবিলা উচ্চ বিদ্যালয় গেইট এলাকায় ডাম্পট্রাক ও পিকআপ গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে মো. ওসমান (২২) ও আকতার হোসেন (৪৫) নামে দুই জন আহত হয়েছিলেন। একইদিন পুটিবিলায় সড়কে অপরিকল্পিত গতিরোধকে ব্যাটারী চালিত রিক্সা উল্টে মো. জাকারিয়া আলম প্রকাশ মিন্টু (৩২) নামে এক চালক নিহত হয়েছিলেন।

নিরাপদ সড়ক চাই লোহাগাড়া শাখার আহবায়ক মোজাহিদ হোসাইন সাগর জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে প্রতিনিয়ত সড়ক দূর্ঘটনা ঘটছে। এর অন্যতম কারণ মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত না হওয়া, মহাসড়কের লোহাগাড়া সীমানায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক বেশী থাকা ও দূর্ঘটনা প্রবন এলাকায় সতর্কতামূলক রোড সাইন না থাকা।

দোহাজারী হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইয়াছিন আরাফাত জানান, অদক্ষ চালক, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ও আঁকাবাঁকা সড়কের কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া সীমানায় সড়ক দূঘটনা বেশি হয়ে থাকে।