মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা :
♦ মুহাম্মদ (সা.)—রাসুল (সা.)-এর বিশেষ নাম।
♦ আহমদ—হজরত ঈসা (আ.) এই নামেই রাসুল (সা.)-এর শুভাগমন সম্পর্কে সুসংবাদ দিয়েছিলেন।
♦ মোতাওয়াককিল—আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল।
♦ মাহি—রাসুল (সা.)-এর বরকতে আল্লাহ পাক কুফরের মূলোত্পাটন করেছেন।
♦ হাশির—যেহেতু কিয়ামতের দিন তিনিই সর্বপ্রথম পুনরুত্থিত হবেন, অন্যরা তাঁর পর পুনরুত্থিত হবে।
♦ আকিব—অর্থাত্ তিনি সব নবী (আ.)-এর পরে দুনিয়ায় আগমন করেছেন।
♦ মাকফি—এই শব্দটিও পূর্ববর্তী শব্দের অনুরূপ অর্থে ব্যবহূত।
♦ নাবীউত তাওবা—অর্থাত্ রাসুল (সা.)-এর শরিয়তে গুনাহ মাফ পাওয়ার জন্য পূর্ণ আন্তরিতার সঙ্গে খাঁটি তাওবা করাই যথেষ্ট। পূর্ববর্তী সময়ে গুনাহ মাফের জন্য আত্মাহুতিও অত্যাবশ্যকীয় ছিল।
♦ নবীউল মালহামাহ—অর্থাত্ যুদ্ধের নবী। কারণ তাঁর শরিয়তে জিহাদের বিধান প্রবর্তিত হয়েছে।
♦ নাবীউর রহমত—সৃষ্টিজগতের জন্য রাসুল (সা.) ছিলেন রহমতস্বরূপ। মুসলমানদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জাহানে, কাফেরদের জন্য কেবল দুনিয়াতে তিনি রহমতস্বরূপ। কারণ তাঁর বরকতে পূর্ববর্তী উম্মতদের মতো তাদের ওপর আজাব নাজিল করা হয় না। অন্যান্য সৃষ্টিজগতের নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব রাসুল (সা.)-এর দ্বীনের স্থায়িত্বের ওপর নির্ভরশীল। অর্থাত্ যত দিন রাসুল (সা.)-এর আনীত দ্বীন অবশিষ্ট থাকবে, তত দিন অন্যান্য সৃষ্টিজগত্ও অবশিষ্ট থাকবে, আর যেদিন তাঁর দ্বীনের কোনো অংশ অবশিষ্ট থাকবে না, এমনকি যেদিন একজন মানুষও আল্লাহ আল্লাহ উচ্চারণকারী থাকবে না। সেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে। সারা জগত্ ধ্বংস হয়ে যাবে।
♦ ফাতেহ—অর্থাত্ উন্মুক্তকারী—রাসুল (সা.)-এর বরকতেই হেদায়েতের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। কাফেরদের বিভিন্ন দেশ ও শহর জয় করা হয়েছে, জান্নাতের দ্বার তাঁরই অনুসরণে প্রশস্ত হবে।
♦ আমিন—সত্যবাদী, বিশ্বস্ত।
♦ শাহেদ—কিয়ামতের দিন তিনি স্বীয় উম্মতের জন্য সাক্ষী হবেন।
♦ মুবাশ্বির—বিশ্বাসীর জন্য তিনি সুসংবাদদাতা।
♦ নাজির—কাফেরদের আজাবের ভয় প্রদর্শনকারী।
♦ কাসিম—ফয়েজ ও ধনসম্পদ বণ্টনকারী।
♦ জাহুক—মুমিনের সঙ্গে হাশিখুশি থাকতেন।
♦ আবদুল্লাহ—অর্থাত্ আল্লাহ পাকের বান্দা।
♦ সিরাজামমুনিরা—দীপ্তিময় সূর্য বা আলোকদিশারি।
♦ সাহেবু লিওয়াইল হামদ—অর্থাত্ কিয়ামতের দিন তাঁর হাতে আল্লাহর প্রশংসার পতাকা থাকবে আর আগের ও পরের সব মানুষ সেই পতাকাতলে আশ্রয় গ্রহণ করবে।
♦ সাহেবুল মাকাম—কিয়ামতের দিন গুনাহগার উম্মতের শাফায়াতের জন্য তাঁর নির্দিষ্ট মাকামে আসন গ্রহণ করবেন।
♦ সাদেক—তিনি সত্য সংবাদ দিতেন।
♦ মাসদুক—রাসুল (সা.)-কে ওহির দ্বারা সত্য সংবাদ পৌঁছানো হতো।
♦ রাউফুর রহিম—উভয় শব্দের অর্থই দয়াবান এবং অতি দয়াবান। উপরোল্লিখিত নামগুলোর মধ্যে বিভিন্ন নাম রাসুল (সা.)-এর জন্যই নির্দিষ্ট এবং কয়েকটি নাম অন্যান্য নবী (আ.)-এর জন্যও ব্যবহূত হয়েছে।
লেখক : প্রাবন্ধিক, গবেষক