Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | রাতেও জমজমাট বেচাকেনা জব্বারের বলীখেলার মেলায়

রাতেও জমজমাট বেচাকেনা জব্বারের বলীখেলার মেলায়

নিউজ ডেক্স : থরে থরে সাজানো মাটির জিনিস। ছোট-বড় ব্যাংক, ফুলদানি, কাপ-পিরিচ, জগ-গ্লাস, ধর্মীয় নানা স্মারক কী নেই! জব্বারের বলীখেলার তিন দিনের বৈশাখী মেলার প্রথম দিন রোববার (২৪ এপ্রিল) রাতেই মাটির জিনিস কিনতে ছুটে আসছেন অনেকে।রাত যত বাড়ছে নানা বয়সী মানুষের ভিড়ও যেন বাড়ছে।  

শুধু কি মাটির জিনিসের প্রতি আকর্ষণে আসছে মানুষ! আসলে তা নয়। হাতপাখা, মুড়ি-মুড়কি, বাঁশি, শিশুদের খেলনা, টমটম গাড়ি, নারীদের ইমিটেশনের গহনা, শীতলপাটি, গাছের চারা, বাঁশের শলার তৈরি মাছ ধরার চাই (ফাঁদ), ডালা, কুলা, দা-বঁটি, প্লাস্টিকের ফুলসহ বাহারি সব জিনিস কিনতে আসছেন মানুষ। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের রকমারি শোপিসের প্রতি আগ্রহ বেশি দেখা গেছে তরুণ-তরুণীদের।        

করোনার কারণে দুই বছর হয়নি শতবছরের ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা। এবার স্বল্প সময়ের প্রস্তুতিতে আয়োজিত হচ্ছে এ মেলা। যেখান থেকে বৃহত্তর চট্টগ্রামের মানুষ এক বছরের গৃহস্থালি টুকিটাকি সংগ্রহ করেন। বলা হয়ে থাকে সুঁই থেকে ফুলশয্যার খাটও মেলে জব্বারের বলীখেলায়। কিন্তু এবার খাট-পালঙ্ক, কাঠের আসবাবপত্র কম। কম দেখা গেছে ফুলের ঝাড়ু বা নারকেল পাতার শলার ঝাড়ুও।

লালদীঘির পেট্রল পাম্প এলাকায় এখন মাটির তৈরি জিনিসপত্রের হাট বসেছে যেন। ঢাকা, শাহবাগ, সাভার, বরিশাল, কুমিল্লা থেকে মেশিন, ডাইস, হাতে তৈরি রকমারি মাটির জিনিস নিয়ে এসেছেন তরুণ উদ্যোক্তা দীপু। তিনি জানান, এক ট্রাকে দুই আড়াই লাখ টাকার মাটির জিনিস আনা হয়। আনার পথে অনেক জিনিস ভেঙে যায়। প্রতিবছর জব্বারের বলীখেলায় আমরা আসতাম। গত দুই বছর করোনার কারণে মেলা না হওয়ায় আসা হয়নি। ঈদের আগে এ মেলা হওয়ায় আশা করছি মানুষ পছন্দের জিনিসটি সংগ্রহ করতে পারবেন।  

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সেহেরি পর্যন্ত স্টল খোলা রাখব। দিনে প্রখর রোদের কারণে অনেকে মেলায় আসেন না, তারা রাতে রিলাক্সে কেনাকাটা করেন।  

কথা হয় কেনাকাটা করতে আসা জামালখান এলাকার গৃহিণী কামরুন নাহারের সঙ্গে। তিনি বলেন, দিনের বেলা সংসারের প্রচুর কাজ থাকে। প্রতিবছর রাতের বেলায় জব্বারের বলীখেলায় আসি গৃহস্থালি পণ্যসামগ্রী কিনতে। গত দুই বছর মেলা না হওয়ায় এটা ওটা নিয়ে এ বাড়ি ও বাড়ি অনেক টানাটানি করতে হয়েছে। মাটির ব্যাংক, ফুলদানি, হাতপাখাসহ টুকিটাকি কিছু জিনিস প্রতিবছরই কিনতে হয় আমাদের। তবে এবার জলুস কম।   

চকবাজার থেকে এসেছিলেন সবুজ আলম। তিনি বলেন, মেলার প্রথম দুই দিন মাটির জিনিসের বেশি দাম হাঁকা হয়। তৃতীয় দিন অনেকটা পানির দামে বেচে দেন বিক্রেতারা। এখন দেখেশুনে রাখছি কী কী কিনবো।  

পেট্রল পাম্প ছাড়াও মাটির জিনিস পাওয়া যাচ্ছে সিনেমা প্যালেস থেকে সোনালী ব্যাংক আসার পথেও। বড় বড় মাটির ব্যাংক, ফুলদানি, কলসিসহ আকর্ষণীয় সব জিনিস মিলছে এখানে। যথারীতি সোনালী ব্যাংকের সামনে বসেছে শীতলপাটির হাট। ছোট বড় মাঝারি নকশাদার বেতের পাটি মিলছে ১ থেকে ৪ হাজার টাকায়। পাটি বিক্রেতাদের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে সস্তা টেকসই প্লাস্টিকের মাদুর।

লালদীঘির উত্তর-পূর্ব কোণে বসেছে দেশি-বিদেশি ফুল ফলের চারার স্টল। আম, ডালিম, কমলা, সফেদা, মরিচসহ বাহারি ফুল, পাতা শোভা পাচ্ছে চারাগাছগুলোতে। বিক্রেতারা জানালেন, ছোট ছোট চারা বিক্রি হচ্ছে বেশি।  

সোমবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে লালদীঘির মোড়ে অস্থায়ী বালুর মঞ্চে ১১৩তম জব্বারের বলীখেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলা চলবে পরদিন মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) পর্যন্ত। এ উপলক্ষে বলীখেলা কমিটি, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। -বাংলানিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!