
নিউজ ডেক্স : বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার সেই মুক্তামণি আর নেই। বুধবার সকাল ৮টার দিকে সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের নিজ বাড়িতেই মৃত্যু হয় ১২ বছর বয়সী মুক্তামণির। মুক্তামণির বাবা ইব্রাহিম গাজী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, মুক্তামণির বাবার সঙ্গে তার কথা হয়েছে। গত ২২ ডিসেম্বর সে ঢামেক বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে যায়।

গত কয়েকদিন থেকেই মুক্তামণির শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তার হাত আগের থেকে অনেক ফুলে গিয়েছিল। ঢাকা মেডিকেল থেকে করে দেয়া ব্যান্ডেজ খুলে পরিষ্কার করার সময় হাত থেকে বেরিয়ে আসছিল বড় বড় পোকা। হাতটি কয়েকগুণ ফুলে যাওয়ায় দুই-এক ঘণ্টা ছাড়া সারাদিনই শুয়ে থাকতে হতো তাকে। দুর্গন্ধ বেড়েছিল অনেক বেশি। রোগের বিস্তার ধীরে ধীরে বুক, পেট আর পায়েও ছড়িয়ে পড়ছিল। তার সুস্থতার ভরসা রাখতে পারছিলেন না চিকিৎসকরাও। চিকিৎসকের নির্দেশমতো বন্ধ ছিল সব ধরনের ওষুধ সেবন।
২০১৭ সালের ২২ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে আসা হয় মুক্তামণিকে। প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়ার পর তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়ারও উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে সেখানকার চিকিৎসকরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুক্তামণির হাত দেখে আঁতকে ওঠেন। একইসঙ্গে হাত অপারেশনের জন্য অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা দেশেই অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কয়েক দফা অপারেশনও করেন। তবে হাতের কোনো পরিবর্তন আনতে পারেননি।
অবশেষে দীর্ঘ ৬ মাস চিকিৎসা সেবার পর এক মাসের ছুটিতে বাড়িতে আসে মুক্তামণি। তবে পরবর্তীতে মুক্তামণি আর ঢাকায় যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে। একইসঙ্গে মুক্তামণির অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় ঢাকায় যেতে নিরুৎসাহী হয়ে পড়ে তার পরিবারও।
সর্বশেষ ১৯ মে মুক্তামণির সঙ্গে কথা হয় জাগো নিউজের সাতক্ষীরা প্রতিনিধির। তখন সে বলে, ‘আমি আর সুস্থ হব না। ডাক্তার স্যাররা অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আমাকে সুস্থ করতে পারেননি। জানি না কতদিন এভাবে বেঁচে থাকব আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।’
Lohagaranews24 Your Trusted News Partner