- Lohagaranews24 - http://lohagaranews24.com -

মামলার চার্জশিট থেকে বাদ যেতে উঠেপড়ে লেগেছে ইয়াবা গডফাদার হেলাল উদ্দিন

K H Manik Pic Ukhiya 11-11-2017

কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া : বাংলাদেশ পুলিশের ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত ইয়াবা মামলা,প্রসাশনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের তদারকির পরও মামলার চার্জশিট থেকে বাদ যেতে উঠেপড়ে লেগেছে স্বরাষ্টমন্ত্রনালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা গড়ফাদার মামলার এজাহার ভুক্ত আসামী হেলাল উদ্দিন। স্থানীয় মহলের মতে,প্রসাশনের সাথে সমযোতার পরেই প্রকাশ্যে এসেছে হেলাল উদ্দিন। অথচ মামলা হওয়ার পর পরই হেলাল উদ্দিন পাড়ি জমিয়েছিল ওমানে। সেখানেই ছিল প্রায় দুই মাস। কিন্ত আদালতে মামলার চার্জশিট জমা পড়ার আগেই সে দেশে ফিরে এসেছে। টেকনাফের হৃীলায় হেলাল উদ্দিনের বিচরন এখন প্রকাশ্যে। এতে ব্যাপক কৌতুহল দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। জানা যায়,গত ১৫ জুলাই ভোররাত সাড়ে ৩ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উখিয়া উপজেলার বালুখালীস্থ হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ এস আই রাজেশ বড়ুয়ার নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২ লাখ ৫৫ হাজার পিস ইয়াবা সহ ঢাকাগামী একটি  ট্রাক জব্দ করে। যা বাংলাদেশ পুলিশের ইতিহাসে অন্যতম সর্বোচ্চ ইয়াবা জব্দের মামলা। এ ঘটনায় হাইওয়ে পুলিশের এস আই রাজেশ বড়ুয়া বাদী হয়ে ট্রাক ড্রাইভার যশোর জেলার শার্শা থানার আব্দুর রশিদের পুত্র মোহাম্মদ মিন্টু আলী, ট্রাক হেলপার একই এলাকার মশিউর রহমানের পুত্র দেলোয়ার হোসেন,দেলোয়ারের মামা ট্রাক মালিক হামিদ ও স্বরাস্ট মন্ত্রনালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা গড়ফাদার টেকনাফ উপজেলার লেদা এলাকার জালাল সওদাগরের পুত্র হেলাল উদ্দিনসহ ৪ জনকে এজাহার নামীয় আসামী করে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করে। যার মামলা নাম্বার ২৮/২০১৭। মামলাটির তদন্তের দ্বায়িত্ব পান উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) কায় কিসলু। এ মামলায় ট্রাক ড্রাইভার মিন্টু আলী  কক্সবাজারে ১ম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজ উদ্দিনের আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয়।  মামলাটি দায়েরের পর থেকেই বিভিন্ন ভাবে হেলাল উদ্দিনের নিকট আত্বীয়রা তদবির চালায়। স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ম্যানেজের মাধ্যমে তদন্তকারী কর্মকর্তা সহ থানা পুলিশকে ম্যানেজ করতে চেষ্টা করে। কিন্ত প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের তদারকি থাকায় সে সময় মোটা অংকের  টাকার মিশন নিয়েও কাজ হয়নি। এরি মধ্যে গ্রেফতার এড়াতে হেলাল উদ্দিন পাড়ি জমায় ওমানে। সেখান থেকে সুযোগ ও চেষ্টা চালাতে থাকে মামলা যেতে বাদ যেতে। কিন্ত আদালতে চার্জশিট জমা পড়ার আগেই হেলাল উদ্দিনের দেশে ফেরত আসাকে প্রসাশনের সাথে সমযোতার অংশ হিসেবেই দেখছেন স্থানীয়রা। তাছাড়া টেকনাফের হৃীলায় হেলাল উদ্দিনের প্রকাশ্যে বিচরন স্থানীয়দের কেীতুহল আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। স্বরাষ্ট মন্ত্রনালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা গড়ফাদার হেলাল উদ্দিন এর আগেও গ্রেফতার হয়েছিল। ২০১৪ সালের ৫ আগষ্ট হেলাল ও বনি আমিনসহ ৪ পাচারকারীকে প্রায় ৩০ হাজার ইয়াবা নিয়ে রাজধানীর মাতুয়াইল থেকে আটক করে র‌্যাব। সে সময় র‌্যাব তাদের কাছ থেকে নগদ ১২ লাখ টাকা ও ১৩টি মোবাইল ফোন এবং একটি ওয়াইফাই মডেম উদ্ধার করে। সে সময় র‌্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঐদিন ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে ওই এলাকার একটি বাসায় এ অভিযান চালানো হয়। সে সময় গ্রেরফতারকৃতরা হলেন- ইয়াবা বিক্রেতা হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা এলাকার মৃত জালাল আহমদ সওদাগরের পুত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকা ভুক্ত ও একাধিক মামলার আসামী হেলাল উদ্দিন (৩৫), হ্নীলা ফুলের ডেইল এলাকার মৃত মুসলিম উদ্দিনের পুত্র বনি আমীন (৫০), ঢাকার নাজমুল হাসান (২৭) ও ইব্রাহিম হাওলাদার (২৬)। ঐ সময় র‌্যাবের বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়,তাদের কাছ থেকে ২৯ হাজার ৮শত ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ইয়াবা বিক্রির নগদ এগার লাখ ৮৩ হাজার টাকা পাওয়া যায়। হেলাল উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ‘ইয়াবা ডিলার’ হিসেবে পরিচিত তিনি। এদিকে হেলাল উদ্দিনের ইয়াবা ব্যবসা করে অর্জিত সম্পদের মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের মইজ্জার টেক এলাকায় ৫ তলা ফ্ল্যাট, বহদ্দারহাট এলাকায় ৪ তলা ফ্ল্যাট, বহদ্দারহাট ১ কিলোমিটার এলাকায় ৩ তলা ফ্ল্যাট, হোয়াংক্যং ও হ্নীলা ইউনিয়নে স্ত্রী খালেদা আকতারসহ নামে বেনামে ২শ কানি সম্পত্তি, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে ৪টি স্পেশাল বাস, ৩ টি ট্রাকসহ বেশ কয়েকটি প্রাইভেট কার। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের বলেন,ইয়াবা সহ মাদক মামলাগুলো অত্যান্ত স্পর্শকাতর মামলা,এসব মামলাগুলোর ব্যাপারে প্রসাশনের দৃষ্টি থাকে সর্বদা। মামলা থেকে বাদ যাওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়।