নিউজ ডেক্স : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, “এই দেশে অনেকেই ক্ষমতায় ছিল, কেউ কিন্তু পাসপোর্টে কিংবা সরকারি ফর্মে তৃতীয় লিঙ্গ লেখার সুযোগ করে দেয় নাই। বঙ্গবন্ধুকন্যার হাত ধরেই তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি এসেছে এবং তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মা হচ্ছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।”
তিনি বলেন, “পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়ার কারণে অন্যান্যবারের তুলনায় এবার ঈদযাত্রা অনেকটা স্বস্তিদায়ক হচ্ছে। এটি আমার কথা নয়, মানুষের বক্তব্য। অথচ অনলাইনে দেখলাম, বিএনপি নেতারা বক্তব্য রাখছেন মানুষের ঈদ যাত্রায় দূর্ভোগ হচ্ছে। আসলে মানুষ ভালো আছে বিধায় তাদের মনটা খারাপ। পবিত্র ঈদুল আযহা হচ্ছে ত্যাগের এবং মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব স্থাপনের শিক্ষা দেয় ঈদ উৎসব। আমি আশা করব ঈদকে সামনে রেখে তারা দেশে মিথ্যাচার এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করার রাজনীতিটা বন্ধ করবেন।”
আজ শনিবার(৯ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ঈদুল আযহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার বিতরণ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলের জন্য মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর ওপর বই হস্তান্তর এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের জন্য ঔষধ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসন কার্যালয় প্রাঙ্গনে জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহাবুবুল আলম, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, জেলা ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার সরওয়ার কামাল, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের সহ-সভাপতি এম এ মোরশেদ হোসেন ও তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি ফাল্গুনি হিজড়া প্রমুখ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশের সব জনগোষ্ঠির উন্নয়নে বিশ^াস করে। গত সাড়ে তের বছর সময়ের মধ্যে অবহেলিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠির যে উন্নয়ন হয়েছে সেটি বাংলাদেশে আগে কখনো হয়নি। উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশেও এভাবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির কথা ভেবে উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়নি।”
তিনি বলেন, “তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের কোনো স্বীকৃতি আগে ছিল না। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের স্বীকৃতি এসেছে। তাদের জন্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে চাকরিতে বিশেষ কোটা রাখা হয়েছে। তাদের জন্য নানাভাবে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। তৃতীয় লিঙ্গ নামে যে একটা লিঙ্গ আছে এই স্বীকৃতি আগে কেউ দেয়নি। অনেক ক্ষেত্রে যেই মানুষদেরকে পরিবার অস্বীকার করে সেই তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের কথা ভেবেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। তার হাত ধরেই স্বীকৃতি এসেছে।”
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আজকে সরকারি অফিসে বড় পদে তৃতীয় লিঙ্গের চাকরি হচ্ছে। তাদের জন্য ব্যাংকে বিশেষ প্রণোদনা দেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের ক্ষেত্রেও তৃতীয় লিঙ্গকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলা আছে। এভাবে সমাজের সকল স্তরের মানুষের উন্নয়নের মাধ্যমে আজকে দেশ উন্নত হয়েছে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।”
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, “আজ থেকে তের-চৌদ্দ বছর আগের কথা ভাবুন, শুধু তৃতীয় লিঙ্গ নয়, যাদের অটিস্টিক শিশু আছে তাদেরকে মা-বাবারা লুকিয়ে রাখত। আর এখন যার অটিস্টিক শিশু আছে তিনি নিজ থেকে প্রকাশ করেন। আমাদের দেশের অটিস্টিক কিশোর-যুবকরা আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে অংশগ্রহণ করে পদক নিয়ে এসেছে। এটি কেউ কখনো ভাবেনি। জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের কারণে এটি সম্ভবপর হয়েছে। অর্থাৎ যে শিশুদের মা-বাবাও লুকিয়ে রাখত সেই শিশুদের কথাও ভেবেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।”
তিনি বলেন, “আমরা যখন ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি তখন দারিদ্রসীমার নিচে বাস করত ৪১ শতাংশ মানুষ। আজকে সেটা ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। অতি দারিদ্রতা নেমে এসেছে ১০ শতাংশে। এটি সম্ভবপর হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমস্ত শ্রেণী-পেশার মানুষের দিকে নজর দিয়েছেন বলে।”
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “আজকে দেশ যে এগিয়ে গেছে সেটা জাতিসংঘের মহাসচিব, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, ভারতের প্রধানমন্ত্রী, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট, বিশ্বব্যাংকসহ সমগ্র পৃথিবী স্বীকার করে। যে বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতু থেকে অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল সেই পদ্মাসেতু হওয়াতে বিশ্বব্যাংকও অভিনন্দন জানিয়েছে, বিএনপি কিন্তু অভিনন্দন জানাতে পারে নাই।”
তিনি বলেন, “পদ্মা সেতু হওয়াতে আজকে মানুষের মধ্যে কি উচ্ছ্বাস। অথচ বিএনপি বলছে হাজারটা পদ্মাসেতু হলেও নাকি কোনো লাভ হবে না। এটি কোনো সুস্থ মানুষের বক্তব্য হতে পারে না। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্য হচ্ছে রোড আইল্যান্ডের উপরে দাঁড়িয়ে যেসব পাগলরা বক্তৃতা করেন ঠিক সেরকম বক্তব্য।”