- Lohagaranews24 - http://lohagaranews24.com -

মাতামুহুরীতে বালু উত্তোলন : ভাঙন আতঙ্কে জনবসতি

Chakaria

নিউজ ডেক্স : চকরিয়ায় প্রশাসনের একাধিক অভিযানের পরও থেমে নেই বালু লুটের মহোৎসব। বর্তমানে উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অনেকটা শ্লথগতি হওয়ার সুযোগে জড়িত বালুখেকোরা উপজেলার মাতামুহুরী নদী ও আভ্যন্তরীণ এলাকার ছড়াখালে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দিব্যি বালু উত্তোলন করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের উত্তর ফুলছড়ি খাসঘোনা এলাকার ছড়াখাল থেকে সরকারি ইজারাদার ও অনুমোদনবিহীন বালুখেকোরা ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে। এ অবস্থার কারণে খুটাখালী ছড়াখালের দুই তীরের বাঁধ ও আশপাশের গ্রামের বিপুল পরিমাণ জনবসতি ভাঙনের মুখে পড়েছে। এলাকার লোকজনের বসতি ভাঙনের কবলে পড়ার কারণে জনগণের মাঝে আতঙ্ক ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন, উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের ৮-১০ জনের একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন যাবত খুটাখালী ছড়াখালে রাবার ড্যামের উপরে ও নিচের অংশে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে। তারা এসব বালু বিক্রি করে প্রতিমাসে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। অপরদিকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে সরকার প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ছড়াখাল থেকে বালু উত্তোলন করার কারণে বর্তমানে ছড়াখালের দুই তীরের বাঁধ ও আবাদি জমি ক্ষতবিক্ষত হয়ে ভেঙে যাচ্ছে। বালুবোঝাই ডাম্পার ট্রাক চলাচলে রাস্তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থার কারণে বিশেষ করে খুটাখালী ইউনিয়নের উত্তর ফুলছড়ি কচিখোলা ও খাসঘোনা এলাকার জনসাধারণ, স্কুল-কলেজ ও মাদ্‌রাসার শিক্ষার্থীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জানান, বালু উত্তোলনের কারণে ছড়াখাল লাগোয়া বসতবাড়ির ইটের সীমান্ত দেয়াল পর্যন্ত খালে বিলীন হয়ে পড়ছে। বালু উত্তোলনে জড়িতরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ও দাপুটে প্রকৃতির হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না।

খুটাখালী ইউনিয়নের উত্তর ফুলছড়ি খাসঘোনা গ্রামের লোকজন অভিযোগ করেছেন, বালু উত্তোলনে জড়িত রয়েছে স্থানীয় ৮-১০ জনের একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। তাদের মধ্যে আছেন স্থানীয় ছাবের আহমদের ছেলে মোহাম্মদ ইদ্রিস, একই গ্রামের মৃত ছৈয়দ নুরের ছেলে মোহাম্মদ জব্বার, জাকের আহমদের ছেলে আলী আহমদ, বশির আহমদ, সাহাব মিয়া ছেলে সোলতান আহমদ, মৃত সামশুল আলমের ছেলে সাহাব মিয়া, ফরিদুল আলমের ছেলে জুনাইদ ও মৃত আব্দুল আলিমের ছেলে ছলিম।

জানতে চাইলে বালু উত্তোলনে জড়িত আলী আহমদ ও সোলতান আহমদ বলেন, তারা বালু উত্তোলনের জন্য সরকারিভাবে কোনো ধরনের ইজারা নেননি। আর যে এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে ওই জায়গা সরকারের নয়। তাঁরা পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, আমরা বালু উত্তোলনে সরকারি অনুমোদন নেয়নি একথা ঠিক, কিন্তু এসব বালু সরকারি উন্নয়ন কাজে বিক্রি করা হচ্ছে। বিশেষ করে আমাদের বালু যাচ্ছে মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের ঠিকাদারের কাছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম বলেন, বালু উত্তোলনে জড়িতরা অবৈধভাবে এ কাজে জড়িত থাকলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো অবস্থায় সরকারি অনুমোদন ছাড়া ছড়াখাল থেকে বালু উত্তোলন করা যাবে না। -সুপ্রভাত