Home | শিক্ষাঙ্গন | বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক পাচ্ছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক পাচ্ছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

ministry-of-education20170415204325

নিউজ ডেক্স : বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বর্ধিত জনবল সৃষ্টিসহ এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) নীতিমালায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

১২ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সভায় এ সংক্রান্ত নতুন নীতিমালার খসড়া গৃহীত হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যে এটি চূড়ান্ত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে নানা জটিলতা ও জনবল সংকট রয়েছে। এসব সমস্যা দূরীকরণে এমপিও নীতিমালা পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে ২০১৬ সালে একটি মূল ও সাব-কমিটি গঠন করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অর্থ ও প্রশাসন) অরুণা বিশ্বাসকে আহ্বায়ক করে মূল কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিকে সহায়তা করতে মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে নিয়ে একটি সাব-কমিটি গঠন করা হয়।

তথ্য মতে, খসড়া নীতিমালায় ১১ ধরনের প্রতিষ্ঠানের জন্য এমপিও এবং জনবল কাঠামো প্রণয়নের প্রস্তাব রয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে সারাদেশে মোট ২৬ হাজার ৯০টি এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে এক লাখ দুই হাজার ৬৭৪ শিক্ষক-কর্মচারীর নতুন পদ সৃষ্টি হবে। তবে এতে অনার্স-মাস্টার্স কলেজ, অনার্স ও কামিল মাদরাসা, সঙ্গীত কলেজ, শরীর চর্চা কলেজ, চারুকলা কলেজ, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ ও নৈশকালীন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ মোট নয় ধরনের প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, বাংলা, ইংরেজি ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের জন্য নিম্ন মাধ্যমিক স্কুলে একজন করে শিক্ষক নিয়োগ করা যেত। কিন্তু নতুন প্রস্তাবনায় তিনজন শিক্ষক নিয়োগের কথা রয়েছে। আবার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলে বাংলা, ইংরেজি, সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষার জন্য তিনজন শিক্ষক পাওয়া যেত। এখানে আরও একজন বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে বাড়তি এ শিক্ষক হবেন ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ের।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে প্রথমবারের মতো শারীরিক শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং চারু ও কারুকলা বিষয় প্রবর্তন করা হয়েছে। এর মধ্যে ইতোপূর্বে শরীর চর্চা শিক্ষক যারা ছিলেন তারা শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে গণ্য হবেন। আর বাকি দুই বিষয়ের জন্য শিক্ষক দেয়ার প্রস্তাবনা রয়েছে।

নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, এর বাইরে স্কুল ও মাদরাসায় কৃষি এবং গার্হস্থ্য বিষয় অভিন্ন না হলেও একই শিক্ষককে পড়াতে হত। নতুন নীতিমালায় গার্হস্থ্য বিষয়ের জন্য আলাদা শিক্ষকের প্রস্তাবের পাশাপাশি বালিকা বিদ্যালয়গুলোতে এ বিষয় বাধ্যতামূলকভাবে প্রবর্তনের কথা রয়েছে। মাদরাসায় দাখিলে যেখানে কম্পিউটার শিক্ষক নেই, সেখানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের জন্য শিক্ষক দিতে হবে। একই বিষয়ের শিক্ষক দেয়ার প্রস্তাব রয়েছে আলিম স্তরেও।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল এবং দাখিল ও আলিম পর্যায়ে বিজ্ঞানের শিক্ষক ছিলেন একজন। তারাই পদার্থ, রসায়ন, জীববিদ্যা ও উচ্চতর গণিত পড়াতেন। নতুন প্রস্তাবনায় ভৌত বিজ্ঞান এবং জীববিজ্ঞানের জন্য আলাদা শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ওয়াহেদুজ্জান এ প্রসঙ্গে বলেন, এমপিও নীতিমালায় নানা সমস্যা রয়েছে। এক বিষয়ের শিক্ষক একাধিক বিষয় পড়াচ্ছেন। এতে করে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মান বাড়ছে না। এসব বিষয় আমলে নিয়ে বর্তমানে এ নীতিমালা বাস্তবসম্মত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রূহী রহমান বলেন, খসড়া এমপিও নীতিমালায় বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক ও নতুন এমপিও পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। বাড়ানো হচ্ছে বর্ধিত জনবল।

মূল কমিটির কাছে খসড়া জমা দেয়া হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই এটি চূড়ান্ত হতে পারে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!