নিউজ ডেক্স : ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিএনপি ক্ষমতায় এসে হামলা নির্যাতন করে বহু হিন্দু পরিবারকে দেশ ছাড়া করেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশবাসী সেই দুঃসহ নির্যাতনের কথা ভুলে যায়নি।
শুক্রবার (২০ নভেম্বর) বেলা ১২টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। বাংলানিউজ
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি মহাসচিব বলেছেন—সরকার জনগণের মনের ভাষা বোঝে না। আমি বলতে চাই, জননেত্রী শেখ হাসিনা জনগণের মনের ভাষা চোখের ভাষা বুঝতে পারেন বলেই এত জনপ্রিয়। বিএনপি জনগণের ভাষা তো বুঝতে পারা দূরের কথা, তাদের কর্মীদের মনের কথাই তো বোঝে না।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, দলীয় চেয়ারপার্সনের মুক্তির দাবিতে বিএনপি কোনো বিক্ষোভই দেখাতে পারেনি। তারা নির্বাচন নিয়ে আন্দোলনে ব্যর্থ। তাদের রাজনীতি ঘরে বসার রাজনীতি। আন্দোলনের ডাক দিয়ে বিএনপির নেতারা ঘরে বসে থাকেন, কর্মীদের পাশে দাঁড়ান না—এজন্য কোনো কর্মী আন্দোলনে সাড়া দেয় না। কিন্তু আমরা অনেক নির্যাতন সহ্য করে রাজনীতি করেছি।
তিনি বলেন, যারা গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা বলেন, তারা দেশে রাতের বেলা কারফিউ দিয়ে ’৯৬ সালে প্রহসনের নির্বাচন করেন। অথচ তারা এখন নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সম্প্রতি কয়েকটি উপ-নির্বাচনেও ৫০-৫৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। নির্বাচনে অনীহা থাকলে এত ভোট পড়তো না। শুধুমাত্র ঢাকার একটি আসনের উপ-নির্বাচনে একটু কম ভোট পড়েছে। যারা গণতন্ত্রের নামে স্বৈরাচারী করেন, তারা গণতন্ত্রের ছবক দেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা নির্বাচনের আগের দিন পর্যন্ত হৈচৈ করে। কিন্তু নির্বাচনের দিন বলে, এজেন্টকে বের করে দেওয়া হচ্ছে, পরে নির্বাচন বর্জন করে। কোথায় এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়েছে, পারলে প্রমাণ দিন। দেশে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশন রয়েছে। বিএনপিকে জেতানো যেন নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব।
আওয়ামী লীগ সাধারণ বলেন, বিএনপি আজ আইনের শাসনের কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে। বিচার নাকি পায় না। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যায় সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের। একুশে আগস্ট হামলাও বিএনপি করেছে। এরপরও জননেত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার বাসায় যান তার ছেলের মৃত্যুর পর। কিন্তু তারা কী আচরণ করলো দেশবাসী দেখেছে।
মির্জা ফখরুলের অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্নীতির জন্য আওয়ামী লীগের লোকজনকেও ছাড় দিচ্ছেন না বিচারকরা। দলের অনেকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। বিএনপি আমলে একজনকেও শাস্তি দেয়নি। অপরাধ করে বিএনপি আত্মরক্ষার ঢাল হিসেবে এসব অভিযোগ করে।
সবসময় দলে কিছু আগাছা ঢুকে পড়ে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তবে আমরা এ ব্যাপারে সচেতন। অনুপ্রবেশকারী অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কার্পণ্য করি না। আওয়ামী লীগ সেই সুযোগ দেয় না। অতীতে ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে কঠোর। অপরাধীদের কোনো দল নেই। দল কখনো ঢাল হাল হতে পারে না। আমরা ব্যবস্থা নেই।
সেতুমন্ত্রী জানান, পদ্মা সেতুর ৪০টি স্প্যানের মধ্যে ৩৭টি স্প্যান বসানো হয়েছে। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮২ শতাংশ। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বিজয় দিবসের আগেই পদ্মা সেতু চালু করা হবে।
ঢাকা মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে বিদেশকে হার মানায় মন্তব্য করেন তিনি বলেন, সরকার সড়ক ও মহাসড়ক উন্নয়ন করছে। ৪৫০ কিলোমিটার চার লেন করা হয়েছে। আরও ৫০০ কিলোমিটার চার লেন করার কাজ চলমান। গণপরিবহনে শৃঙ্খলা না ফিরলে সড়কে উন্নয়নের সুফল মিলবে না। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে একটি প্রকল্পের কাজ চলছে।