- Lohagaranews24 - http://lohagaranews24.com -

নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি উপেক্ষা করে রাস্তায় ‘স্কুটি’ বাইকে নারীরা

Khagrachhari-scotie-story-pic-1-825x510

নিউজ ডেক্স : নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি উপেক্ষা করে মফস্বল শহর খাগড়াছড়িতে স্কুটি বাইক ব্যবহার করছেন নারীরা। আগে শুধুমাত্র চাকরিজীবী কয়েকজন নারী স্কুটি বাইক ব্যবহার করলেও ইদানিং শিক্ষার্থীসহ অনেকে স্কুটি ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন। গণপরিবহনের চেয়ে ঝামেলা কম, অর্থ ও সময় সাশ্রয়ের কারণে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে স্কুটি বাইক। পেশাজীবী নারী ও শিক্ষার্থীদের কাছে বাহনটি এখন বিলাসিতার চেয়ে প্রয়োজনে পরিণত হয়েছে বেশি। তবে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি ও দুর্গম এলাকায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে কেউ কেউ হয়রানির শিকার

হচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। খাগড়াছড়ি জেলায় শতাধিক নারী স্কুটি বাইকার থাকার তথ্য রয়েছে মোটরসাইকেলের বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতে।

বেসরকারি কলেজ শিক্ষিকা কেমিয়া চাকমা বলেন, স্কুটি বাইক ব্যবহার করে প্রতিদিন তিনি ৪০ কিলোমিটার দূরত্বে কলেজে যাতায়াত করেন। খাগড়াছড়ি-পানছড়ি আঞ্চলিক সড়কের ভাইবোন ছড়া স্টপেজ থেকে তার কলেজ ভেতরের দিকে হওয়ায় আগে প্রায় সময় গাড়ি পাওয়া যেত না। স্কুটি ব্যবহার করায় এখন সময় মতো যাতায়াত করা যাচ্ছে।

খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শ্রাবন্তী ত্রিপুরা বলেন, টমটমের (অটোরিক্সা) জন্য অপেক্ষা করে অনেক সময় ক্লাসে পৌঁছাতে দেরি হয়ে যেত। স্কুটি নিয়ে যাতায়াত করার পর থেকে সময় মতো ক্লাস ও অন্যান্য জায়গা স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করা যাচ্ছে।

ইসরাত আমিন নামে আরেক শিক্ষার্থী জানান, গণপরিবহন (টমটম-অটোরিক্সা) এখনও মেয়েদের জন্য নিরাপদ বাহন হয়ে উঠেনি। খাগড়াছড়িতে টমটম বেড়ে যাওয়ার পর থেকে রিক্সা একদমই কমে গেছে। তাই কলেজে যাতায়াতে টমটমে অপরিচিত লোকজনের সাথে শেয়ার করে বসে যেতে হয়। যেটি খুব বিব্রতকর। বিষয়টি পরিবারকে বুঝিয়ে স্কুটি বাইক নিয়েছি।

আনুচিং মারমা নামে এক নারী উদ্যোক্তা জানান, খাগড়াছড়ি বাজারে আমার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। স্কুটি বাইক ব্যবহার করায় ঠিক সময়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়াসহ অন্যান্য কাজ অনেক সহজে করতে পারছি।

নৃত্য শিল্পী রিয়া চাকমা জানান, আমি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত হওয়ায় বিভিন্ন জায়গায় আসা যাওয়া করতে হয়। এক্ষেত্রে স্কুটি বাইকটি খুবই উপকারে আসে। কিন’ অনেক সময় রাস্তা ঘাটে স্কুটি বাইক চালাতে গিয়ে নানা রকম নেতিবাচক মন্তব্যের সম্মুখীনও হতে হয়।

খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুখপাত্র) এম এম সালাহউদ্দিন বলেন, নারীদের বাদ দিয়ে সামষ্টিক উন্নয়ন আশা করা যায় না। পাহাড়ে নারীরা রাস্তায় স্কুটি বাইক চালাচ্ছে। এটি দেশের উন্নয়নের অগ্রগতির বার্তা। এখনও পর্যন্ত কোন নারী স্কুটি ব্যবহারকারী হয়রানির শিকার হয়েছে বলে পুলিশের কাছে তথ্য নেই। ইভটিজিং ও সামাজিক নেতিবাচক কর্মকাণ্ড রোধে কমিউনিটি পুলিশিং এবং সামাজিক সচেতনতার কার্যক্রম চলমান আছে।

সূত্র : দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ