- Lohagaranews24 - http://lohagaranews24.com -

নিষেধাজ্ঞা উঠার সাথে সাথে সাগরে জেলেরা

Untitled-8-13

নিউজ ডেক্স : ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে সাগরে মাছ ধরার উপর টানা একুশদিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গতকাল সোমবার থেকে পূনরায় মাছধরা শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গতকাল ভোররাত থেকে শত শত ট্রলার ইলিশ জাল ও বিহিন্দি জাল নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে গেছে। এরমধ্যে ইলিশ জালের বোট মাছধরা শেষে আগামী কয়েকদিন পর উপকূলে ফিরবে। আর বিহিন্দি জালের বোটগুলো উপকূলবর্তী বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরে দিনে দিনেই ফিরে আসে।

গতকাল কক্সবাজার শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারীঘাট, কস্তুরাঘাট ও দরিয়ানগরে গিয়ে দেখা যায়, ট্রলার নিয়ে জেলেরা সারি বেঁধে সাগরে যাচ্ছে। কেউ কেউ সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ কারণে পোতাশ্রয়গুলো জেলেদের আনাগোনায় প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠেছে। কক্সবাজার শহর ও শহরতলীর মতোই একই অবস্থা খুরুশকুল, রেজু, মনখালী, শামলাপুর, কুতুবজোম, গোরকঘাটা, সোনাদিয়া ও কুতুবদিয়ার বিভিন্ন ঘাটে বলে জানান ট্রলার মালিকরা।

কক্সবাজার জেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমদ জানিয়েছেন, কক্সবাজার জেলায় ছোটবড় প্রায় ৫ হাজার যান্ত্রিক ফিশিং বোট রয়েছে। বর্তমানে কক্সবাজারের লাখ খানেক জেলে সাগরে মাছধরা পেশায় নিয়োজিত রয়েছে। যার অধিকাংশই গতকাল সাগরে মাছ ধরতে গেছে। সাগরে ইলিশ ধরা পড়লে বাকী ট্রলারগুলোও আজকালের মধ্যে সাগরে মাছ ধরতে যাবে।

তিনি জানান– বর্তমানে কক্সবাজার উপকূল থেকে ১০ কিলোমিটারের বেশি দূরবর্তী এলাকায় ইলিশ ধরা হয়। আর শহর থেকে উখিয়ার পাটুয়ারটেক পর্যন্ত অঞ্চলের উপকূলবর্তী সাগরে বিহিন্দি জালের বোটগুলো ধরে ‘পাঁচকাড়া’ মাছ।

জেলেরা জানান, কক্সবাজার বঙ্গোপসাগর থেকে আহরিত মাছের মধ্যে বেশির ভাগই ইলিশ। তাই অন্য জাতের মাছগুলোকে ‘পাঁচকাড়া’ মাছ নামে অভিহিত করা হয়। বর্তমানে বিহিন্দি জালে পোপা, ঘুইজ্জা, ফাইস্যা, ছুরি, তাইল্যা, রূপচান্দা, হুন্দুরা, বরা, অলুয়াসহ আরো কয়েক প্রজাতির চিংড়ি ধরা পড়ছে। আর এ ধরনের সুস্বাদু মাছ ধরতে শত শত ট্রলার এখন সাগরে। আর সাগরে মাছ ধরার এ দৃশ্য উপকূল থেকে খালি চোখেই দেখা যাচ্ছে। যা রাতের বেলায় সন্ধ্যাবাতির আলোতে অন্য ধরনের দৃশ্যের অবতারণা করছে।

কক্সবাজার শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারীঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী জুলফিকার আলী জানান– ইলিশ জেলেরা এক সপ্তাহের রসদ নিয়ে সাগরে গেছে। কিন্তু চাহিদামত মাছ ধরা পড়লে সপ্তাহ পেরোনোর আগেই তারা ফিরবে। আর বিহিন্দি জালের জেলেরা সকালে গিয়ে বিকালেই ফিরে।

জানা যায়, বিহিন্দি জালের বোট নিয়ে ককশিটের তৈরী ছোট বোটগুলোও উপকূলে অন্যান্য ট্রলারের পাশাপাশি সাগরে জাল ফেলে মাছ ধরছে। আর প্রতিদিন সাগর থেকে মাছ ধরে মাত্র কয়েক ঘন্টা পরই কূলে ফিরছে। কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগর ঘাটেই এই ধরনের অযান্ত্রিক নৌকা রয়েছে।

কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম কিবরিয়া খান বলেন– সাগরে নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে গত তিন সপ্তাহ পর্যন্ত সামুদ্রিক মাছের স্বাদ নিতে পারেনি পর্যটকরা। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অতিবাহিত হওয়ার পর সোমবার বিকাল থেকেই বাজারে সামুদ্রিক মাছ মিলছে। আর এতে তৃপ্তি নিয়েই সামুদ্রিক মাছের স্বাদ নিচ্ছে পর্যটকরা। -আজাদী