- Lohagaranews24 - http://lohagaranews24.com -

নিউইয়র্কে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রধানমন্ত্রী

1505805555
নিউজ ডেক্স : যুক্তরাষ্ট্রে ১৩ দিনের সফরে আসার পর থেকে নিউইয়র্কে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় সময় রবিবার বিকেলে নিউইয়র্কে পৌঁছার পর সোমবার সকাল থেকে ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তিনি। দিনের কর্মসূচি শুরু হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আয়োজনে জাতিসংঘ সদর দফতরে ‘হাই লেভেল মিটিং অন ইউএন রিফর্ম’ শীর্ষক সভায় যোগদানের মাধ্যমে। সভার ফাঁকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে শেখ হাসিনার অনির্ধারিত একটি সাক্ষাত হয়েছে। এই সাক্ষাতের বিষয়টিই দিনভর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রাম্প-হাসিনার ছবি ভাইরাল হয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে কী আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে ব্যাপক কৌতূহল ছিল যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের মাঝে। সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের প্রেস ব্রিফিংয়ের পর তারা জানতে পারেন আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে। হোটেল গ্র্যান্ড হায়াতের লবিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক জানান, সভার ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সঙ্কটে ‘বাংলাদেশের পাশে থাকার’ আশ্বাস দিয়েছেন।
হাসিনা-ট্রাম্প আলোচনা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক আরো বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, মিয়ানমার ইস্যুতে আমরা তোমাদের সঙ্গে আছি, অ্যান্ড উই সি হাউ ইট ক্যান বি রিজলভড।” তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি কেমন চলছে তাও জানতে চান ট্রাম্প। এসময় শেখ হাসিনা ‘ভাল করছে’ বললে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সন্তোষ প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এবারই প্রথম জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে মিলিত হচ্ছেন বিশ্ব নেতারা।
এদিকে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের পর দুপুরে জাতিসংঘ সদর দফতরে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আলোচনাতেও রোহিঙ্গা সঙ্কট এসেছে। সুষমা স্বরাজ বলেছেন- যে ভারত অবশ্যই বাংলাদেশের সঙ্গে আছে সবসময় এবং এই সঙ্কটের সমাধানে সাহায্য করবে।’
এদিকে সোমবার জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে মিয়ানমার থেকে যারা এসেছে, তাদের বিষয়ে বাংলাদেশকে সাহায্য এবং বাংলাদেশ সফর করার আগ্রহ প্রকাশ করেন ফিলিপ্পি। একইদিন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনের উদ্যোগে আয়োজিত এক বৈঠকে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোগবের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়।
সোমবার আরও দুটি উচ্চপর্যায়ের সেশনে শেখ হাসিনা অংশ নেন। সেগুলো হল ‘হাই লেভেল মিটিং অন দ্য প্রিভেনশন অব সেক্সুয়াল এক্সপ্লয়টেশন অ্যান্ড অ্যাবিউজ’ এবং ‘হাইলেভেল ফলোআপ মিটিং অব গ্লোবাল ডিল ফর ডিসেন্ট ওয়ার্ক অ্যান্ড ইনক্লুসিভ গ্রোথ।’ এদিকে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিউইয়র্কের ব্যস্ততম ম্যানহাটনের টাইম স্কয়ারের ম্যারিয়ট মার্কি হোটেলে এই সংবর্ধনার আয়োজন করেছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ।
এর আগে দুপুরে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে মধ্যাহ্নভোজনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর তিনি যোগ দেন নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ক হাইলেভেল গোলটেবিল বৈঠকে। মায়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম সংখ্যালঘু বিষয়ক ওআইসি কন্ট্যাক্ট গ্রুপের বৈঠক ছাড়াও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের আয়োজনে পরিবেশবিষয়ক এক গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। ২০ সেপ্টেম্বর বুধবারও ব্যস্ত সময় কাটাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন তিনি জাতিসংঘ সদর দফতরে চারটি এবং বাইরে একটি বৈঠকে যোগদান করবেন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের পক্ষে শেখ হাসিনা বাংলায় ভাষণ দেবেন। ওইদিনই তিনি জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। রাত ৮টায় নিউইয়র্কে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন।
২২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক থেকে ভার্জিনিয়ার উদ্দেশে রওয়ানা হবেন। সেখানে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরিবারের সঙ্গে এক সপ্তাহ কাটিয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর দেশের উদ্দেশে রওয়ানা হবেন। ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন। পরিবারের সঙ্গে ঘরোয়া পরিবেশে তিনি দিনটি কাটাবেন বলে জানা গেছে। ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে। -ইত্তেফাক