- Lohagaranews24 - http://lohagaranews24.com -

নাশকতা-অপরাধ ঠেকাতে মহাসড়কে বসছে সিসি ক্যামেরা

cc_camera20171102100316

নিউজ ডেক্স : নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে নাশকতাসহ চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই রোধ এবং দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের অপরাধে জড়িয়ে পড়া ঠেকাতে মহাসড়কে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা পুলিশ।  তিনটি মহাসড়কে জেলা পুলিশের অধীন অংশে এক মাসের মধ্যে ক্যামেরা লাগানো শুরুর প্রস্তুতি নিয়ে এগুচ্ছে পুলিশ।

সূত্রমতে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ থেকে নগরীর সিটি গেইট এলাকা পর্যন্ত অংশে প্রাথমিকভাবে ২৫টি সিসি ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

উত্তরে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কে হাটহাজারী চৌরাস্তা থেকে নগরীর অক্সিজেন পর্যন্ত অংশে লাগানো হবে ২৫টি সিসি ক্যামেরা।

আর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে পটিয়া এ জে চৌধুরী কলেজের সামনে থেকে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি পর্যন্ত স্থাপন করা হবে ৪০টি সিসি ক্যামেরা।

জানতে চাইলে পুলিশ সুপার (এসপি) নূরে আলম মিনা বলেন, সিসি ক্যামেরা লাগানোর জন্য প্রাথমিকভাবে আমরা ২ কোটি টাকা বাজেট করেছি।  সরকারিভাবে এসব ক্যামেরা লাগানো হবে না।  স্থানীয় দানশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে নিয়ে ক্যামেরা লাগাবো।  তবে আমরা কোন টাকা নেব না, উপকরণ নেব।  ডিসেম্বরে কাজ শুরুর প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি।

জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি যানজট, সড়ক অবরোধ, নাশকতা, অপরাধ নির্মূলে কাজ করতে হয় স্থানীয় থানা পুলিশকেও।  এছাড়া প্রায়ই মহাসড়কে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মহাসড়কে গাড়ি থামিয়ে চাঁদাবাজির যে অভিযোগ উঠছে, সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে তারও সুরাহা হবে।

গত ৩১ অক্টোবর সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কের গোলচত্বর এলাকায় ট্রাকচাপায় তারেক (১৩) নামে এক শিশু মারা যায়।  মহাসড়কে দায়িত্বরত পুলিশ ট্রাকটিকে থামানোর সংকেত দেওয়ায় সেটি দ্রুতগতিতে পালাতে গিয়ে তারেককে চাপা দিয়েছে, এমন অভিযোগ উঠে।  এসময় স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে দুই পুলিশ সদস্যকে ধরে পিটুনি দেয়।

মহাসড়কে বিভিন্ন দুর্ঘটনার পর প্রায়ই এর কারণ হিসেবে গাড়িতে পুলিশের চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠছে।  প্রতি ঈদের আগে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতাদের নিয়ে জেলা পুলিশ যে বৈঠক করে, সেখানেও আসে এই অভিযোগ।

এসপি নূরে আলম মিনা  বলেন, ‘সামনে নির্বাচন আসছে।  নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি হতে পারে। অতীতে আমরা দেখেছি রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে মহাসড়কে নাশকতার করা হয়। যেহেতু মহাসড়ক একটি স্পর্শকাতর জায়গা, তাই মহাসড়কে নাশকতা এড়াতে মূলত সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। এর মাধ্যমে আমরা চুরি-ডাকাতি-ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো। এমনকি পুলিশ সদস্যদের অপরাধে জড়িয়ে পড়া ঠেকাতেও এটি আমাদের সাহায্য করবে। ’

তিনি বলেন, মহাসড়কে পুলিশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ প্রায়ই আমাদের বিব্রত করে।  আমরা আর এই দায় আর নিতে চাই না।  সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে আমরা পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করবো।  এছাড়া অন্যান্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণ তো হবেই।

সূত্রমতে, তিন মহাসড়কে স্থাপিত সিসি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণের জন্য জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে একটি মিডিয়া সেন্টার ও কমান্ড কন্ট্রাল রুম করা হবে।  সেখানে স্যামসাং কোম্পানির বড় আকারের এলইডি মনিটর স্থাপন করা হবে।  কন্ট্রোল রুম থেকেই মাঠ পর্যায়ে যাবে বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মশিউদ্দৌলা রেজা  বলেন, প্রাথমিকভাবে শুধু হাটহাজারী পর্যন্ত সিসি ক্যামেরা দিচ্ছি।  রাউজান-রাঙ্গুনিয়ার দিকেও সিসি ক্যামেরা স্থাপনের পরিকল্পনা আমাদের আছে।  মহাসড়কের যেসব পয়েন্টে সাধারণত গাড়িতে তল্লাশি চালানো হয় অথবা যেখানে চুরি-ছিনতাই বেশি হয়, সেসব পয়েন্ট আমরা নির্ধারণ করেছি।

তবে মহাসড়কে প্রত্যেক জনবহুল পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা রাখার কথা জানালেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) একেএম এমরান ভূঁইয়া।

‘আমরা এমনভাবে ক্যামেরাগুলো সব ক্যামেরা সচল থাকে, সেটাও টেকনিক্যাল পার্সনদের বলা হচ্ছে।  অতীতে দক্ষিণে অনেক নাশকতা হয়েছে।  ভবিষ্যতেও খারাপ সময় হয়তো আসছে।  এই ক্যামেরাগুলো সেক্ষেত্রে আমাদের অনেক কাজে আসবে। ’ বলেন এমরান ভূঁইয়া – বাংলানিউজ