Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | জানুয়ারিতেই ই-পাসপোর্ট

জানুয়ারিতেই ই-পাসপোর্ট

8cb8fafd18bace1d5ee0d35321839a30

নিউজ ডেক্স : কাগজের পাসপোর্টের (যন্ত্রে অপাঠযোগ্য) দিন শেষ হয়েছে বেশ আগেই। এদিকে চলমান মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট-এমআরপির (যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের) ধারণাও প্রায় শেষের দিকে। কারণ, যুগ এখন ইলেকট্রনিক বা ই-পাসপোর্টের। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরই মধ্যে চালু হয়ে গেছে ই-পাসপোর্ট। আধুনিক ও তথ্য প্রযুক্তির অবাদ সম্ভাবনায় এই যুগে বাংলাদেশও কেন পিছিয়ে থাকবে!

জানা গেছে, আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ই-পাসপোর্টের যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ই-পাসপোর্ট ব্যবস্থা চালুর জন্য পাসপোর্ট অধিদফতরের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে অনেক আগে থেকেই। দেশের সকল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস গুলোতেও চলছে প্রস্তুতি। তবে সব প্রস্তুতি শেষ হয়ে যাবে চলতি ডিসেম্বরেই। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে মানুষের হাতে পৌঁছে যাবে বহুল প্রত্যাশিত ই-পাসপোর্ট। জানা গেছে, ই-পাসপোর্ট প্রথমে পাবেন ফরেন সার্ভিসের কর্মকর্তারা, এরপর রাজধানীবাসী এবং পরে পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রামসহ বিভাগীয় শহর গুলোতে এটি চালু হবে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা প্রত্যক্ষ করার লক্ষ্যে আজ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক অফিস পরির্দশন করবেন ই-পাসপোর্টের প্রজেক্ট ডিরেক্টর সাইদুর রহমান খান। তিনি সকাল ১১টায় মনসুরাবাদস্থ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস পরির্দশন করবেন বলে জানান আঞ্চলিক চট্টগ্রাম পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মোঃ আবু সাইদ।

এই ব্যাপারে তিনি জানান, দেশে বহুল প্রত্যাশিত ই-পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে জানুয়ারির শুরুতেই। এই লক্ষ্যে ই-পাসপোর্টের প্রজেক্ট ডিরেক্টর আজ আমাদের মনসুরাবাদ আঞ্চলিক কার্যালয় পরির্দশন করবেন। যেহেতু নতুন আঙ্গিকে ই-পাসপোর্ট শুরু হবে সুতরাং এখানে নতুন মেশিন বসানোর জন্য অবকাঠামো দেখবেন, কিভাবে-কি প্ল্যান করা যায়।

আমরা যেটা মনে করি বর্তমানে চলমান মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) যখন চালু হয়েছিল তখন পাসপোর্ট প্রার্থীর ৪ আঙ্গুলের ছাপ নেয়ার জন্য মেশিন বসানো হয়েছিল। এখন ই-পাসপোর্ট ব্যবস্থায় বিদ্যমান বইয়ের সঙ্গে একটি ডিজিটাল পাতা (ডাটা পেজ) জুড়ে দেয়া হবে। ওই ডিজিটাল পাতায় উন্নতমানের মেশিন রিডেবল চিপ বসানো থাকবে। এতে সংরক্ষিত থাকবে পাসপোর্টধারীর সব তথ্য। ডাটা পেজে থাকবে পাসপোর্টধারীর তিন ধরনের ছবি, ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশও। এজন্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে বসানো হবে প্রয়োজনীয় মেশিন, বাড়ানো হবে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও।

পাসপোর্ট অধিদফতর সূত্র জানায়, শুরুতে ২০ লাখ পাসপোর্ট জার্মানি থেকে প্রিন্ট করে সরবরাহ করা হবে। এরপর আরও ২ কোটি ৮০ লাখ পাসপোর্ট বাংলাদেশে প্রিন্ট করা হবে। সে জন্য উত্তরায় কারখানা স্থাপন করা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে ওই কারখানা থেকে ই-পাসপোর্ট ছাপানো অব্যাহত রাখা হবে। এই প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। পুরো টাকাই বাংলাদেশ সরকার বহন করবে।

পাসপোর্ট অধিদফতর সূত্র জানায়, ই-পাসপোর্টে ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা ফিচার থাকবে। বর্তমানে এমআরপি ডেটাবেইসে যেসব তথ্য আছে, তা ই-পাসপোর্টে স্থানান্তর করা হবে। পাসপোর্টের মেয়াদ হবে বয়সভেদে ৫ ও ১০ বছর। ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এমআরপি পাসপোর্ট বাতিল হয়ে যাবে না। তবে কারও পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তাকে এমআরপির বদলে ই-পাসপোর্ট দেয়া হবে।

শুরুতে দুই বছর পাসপোর্ট অধিদফতর দিনে মাত্র ২ হাজার পাসপোর্ট তৈরি করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে সারা দেশের চাহিদা ২০ হাজারের বেশি বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট চালুর বিষয়ে জার্মানির সরকারি প্রতিষ্ঠান ভেরিডোস জেএমবিএইচের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ই-পাসপোর্ট সরবরাহের কথা ছিল। প্রথম দফায় ব্যর্থ হওয়ার পর তারা বলেছিল, জুলাই থেকে সরবরাহ শুরু করা সম্ভব হবে। সেই দফায়ও প্রতিষ্ঠানটি ব্যর্থ হয়েছে। এখন তৃতীয় দফায় আগামী বছরের ১ জানুয়ারি (আরো দুই মাস পর) থেকে সীমিত আকারে ই-পাসপোর্ট চালু করা সম্ভব হবে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। -আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!