এলনিউজ২৪ডটকম: চেষ্টা করেও কাগজপত্র ঠিক না থাকায় সন্তানদের মরদেহ দেখতে দেশে আসতে পারেনি প্রবাসী পিতা হাসান পারভেজকে। গত শুক্রবার ওই প্রবাসীর দুই সন্তান ফারিহা জান্নাত তানজুম (৮) ও মো. তানজমুল হোসেন রাফি (৭) ঈদের ছুটিতে নানা বাড়িতে বেড়াতে এসে পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যান।
জানা যায়, হাসান পারভেজ প্রায় ২ বছর আগে সৌদিয়া আরবের আবাহা মাহাইলে গিয়েছিলেন। সেখানে মাহাইল থেকে জেদ্দা লাইনে গাড়ি চালান। তার দুই সন্তান পানিতে ডুবে মারা যাবার খবর শুনে দেশে আসতে মাহাইল থেকে জেদ্দার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। ছুটির জন্য কফিলের (মালিক) কাছে পাঠিয়েছিলেন তার এক খালাতো ভাইকে। কিন্তু কাগজপত্র ঠিক না থাকায় পারভেজকে দেশে আসার জন্য ছুটি দিতে পারেননি। এই নিয়ে কফিলের সাথে পারভেজের খালাতো ভাইয়ের কথা কাটাকাটি হয়েছে বলেও জানা গেছে।

এদিকে, প্রবাসী পিতা আসার খবরে দুই সন্তানকে ফ্রিজিং এম্বুলেন্সে রাখা হয়েছিল। শনিবার (৫ এপ্রিল) সকালে তিনি দেশে পৌঁছলে সন্তানদের দাফন করার কথা ছিল। কিন্তু কাগজপত্রের জটিলতার কারণে দেশে আসা হলো না। তবে ভিডিও কলের মাধ্যমে সেখান থেকে সন্তানদের জানাজার নামাজ ও দাফনের দৃশ্য দেখেছেন। হৃদয় বিদারক এই ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
জেদ্দা প্রবাসী মনছুর আলী জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কফিলের সাথে মনোমালিন্য হওয়ায় প্রবাসী হাসান পারভেজকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি সঠিক নই। তিনি বর্তমানে নিজ বাসায় আছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য এরশাদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, প্রবাসী পিতার শেষ ইচ্ছে ছিলো মৃত দুই সন্তানকে এক নজর দেখে একটু বুকে জড়িয়ে নেয়া। পিতা হাসান পারভেজ আসার অপেক্ষায় তাদের মরদেহও রাখা হয়েছিল ফ্রিজিং এম্বুলেন্সে। কিন্তু কাগজপত্রের জটিলতার কারণে দেশে আসা হলো না। পরে বিষয়টি জানতে পেরে শনিবার (৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মৃত দুই সন্তানকে দাফন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের ৮ নাম্বার ওয়ার্ডের সুখছড়ি সাইরা পাড়ায় নানা বাড়িতে বেড়াতে এসে পুকুরের পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু হয়। তারা একই ইউনিয়নের ৯ নাম্বার ওয়ার্ডের সুখছড়ি কামার দীঘি পাড়স্থ নতুন পাড়ার প্রবাসী হাসান পারভেজের সন্তান।