- Lohagaranews24 - http://lohagaranews24.com -

চসিকের গৃহকরের লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেকে নেমে এলো

1507129605_59d4f90585f2e_3

নিউজ ডেক্স : ভবন মালিকদের কাছ থেকে সাড়া না পাওয়া এবং পঞ্চবার্ষিকী কর পুনঃমূল্যায়ন স’গিত হওয়ায় গৃহকর (হোল্ডিং ট্যাক্স) আদায়ের হার কমেছে। এর ফলে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাজেটে উল্লেখিত গৃহকর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কমাতে বাধ্য হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)।

নতুন লক্ষ্যমাত্রায় গৃহকর আদায়ের পূর্বের নিয়ম বহাল রাখা হয়েছে। এছাড়াও দীর্ঘ দিন যে সব হোল্ডিং থেকে গৃহকর আদায় হচ্ছে না; সে সব হোল্ডিংয়ের বিপরীতে মন্দা দাবিও নির্ধারণ করা হয়েছে। চসিকের কর্মকর্তারা বলছেন, রি-অ্যাসেসমেন্ট অনুযায়ী গৃহকর আদায় করা যাচ্ছে না বিধায় নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

রাজস্ব বিভাগ সূত্র জানায়, অর্ধেকে নেমে এসেছে চসিকের গৃহকরের লক্ষ্যমাত্রা। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে গৃহকর আদায়ের নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১১ কোটি ৫৭ লাখ ২২ হাজার ১৯০ টাকা। যা আগে ছিল ৬৮১ কোটি ১১ লাখ ৮৭ হাজার ১২৪ টাকা। ফলে লক্ষ্যমাত্রা কমেছে প্রায় ৩৬৯ কোটি ৫৪ লাখ ৬৪ হাজার ৯৩৪ টাকা। পূর্বের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে গৃহকর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০০ কোটি টাকা। নতুন লক্ষ্যমাত্রায় তা ৩৮০ কোটি ৭৩ লাখ ৪৫ হাজার ৪৬৬ টাকা কমিয়ে ১১৯ কোটি ২৬ লাখ ৫৪ হাজার ৫৩৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে নতুন লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বকেয়া গৃহকর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে। পূর্বের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বকেয়া আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮১ কোটি ১১ লাখ

৮৭ হাজার ১২৪ টাকা। তা ১১ কোটি ১৮ লাখ ৮০ হাজার ৫৩২ টাকা বাড়িয়ে নতুন বকেয়া গৃহকর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯২ কোটি ৩০ হাজার ৩০ লাখ ৬৭ হাজার ৬৫৬ টাকা। এছাড়া দীর্র্ঘ দিন আদায় না হওয়ায় ২৪ কোটি ৭৯ লাখ ৩৬ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা গৃহকর মন্দা দাবি নির্ধারণ করা হয়েছে, যদিও এ পরিমাণ গৃহকর আদায়ের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে চসিক।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের জুলাই হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত গৃহকরের লক্ষ্যমাত্রা ও আদায় পর্যালোচনা করে নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পঞ্চবার্ষিক কর মূল্যায়ন (রি-অ্যাসেসমেন্ট) স’গিত হওয়ায় পূর্বের নিয়মে গৃহকর আদায়ের এ লক্ষ্যমাত্রায় নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত রোববার অনুষ্ঠিত চসিকের সাধারণ সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়।

রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ১১ এপ্রিল বিকালে অনুষ্ঠিত চসিকের ‘অর্থ ও সংস’াপন স’ায়ী’ কমিটির সভায় ২০১৭ সালের জুলাই হতে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত রাজস্ব খাতে দাবি ও আদায় নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। এ সভায় প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা জানান, রাজস্ব বিভাগের হোল্ডিং কর ও রেইট চলতি বাজেটে নতুন অ্যাসেসমেন্ট অনুযায়ী আদায় করা হচ্ছে। পরবর্তীতে সরকারের নির্দেশক্রমে অ্যাসেসমেন্ট স’গিত হওয়ায় সাবেক ধার্য্যকৃত ভ্যালুয়েশনের উপর গৃহকর ও রেইট আদায় করা হচ্ছে। তাই বর্তমানে আদায়কৃত গৃহকর ও রেইট অনুযায়ী চলতি দাবি নির্ধারণ করা হলো এবং দীর্ঘদিন যাবৎ সে সব হোল্ডিং হতে কর আদায় হচ্ছে না; কর বিধি মতে মন্দা দাবি নির্ধারণ করা হলো।

জানতে চাইলে উপ কর কর্মকর্তা নাছির উদ্দিন চৌধুরী গতকাল সোমবার বিকালে তার দপ্তরে বলেন, ‘পঞ্চবার্ষিক কর পুনঃমূল্যায়ন অনুযায়ী বাজেটে ৬৮১ কোটি ১১ লাখ ৮৭ হাজার ১২৪ টাকা গৃহকর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন’ অ্যাসেসমেন্ট স’গিত হওয়ায় সে অনুপারেত গৃহকর আদায় করা যাচ্ছে না। তাই নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।’

২৪ কোটি টাকার মন্দা গৃহকর দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কিছু ভবন মালিকের আর্থিক অবস’া ভালো না। আবার কিছু ভবন মালিক ইচ্ছা করেই গৃহকর দিচ্ছে না। তাই কিছু গৃহকর আদায় করা যাচ্ছে না। তবে আদায় করা প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এবং বিধি সম্মতভাবে ব্যবস’া নেওয়া হবে।

এদিকে অর্থ বছরের জুলাই থেকে গত ২২ এপ্রিল রোববার পর্যন্ত ৬ মাস ২২ দিনে মোট ১০১ কোটি ৪৭ লাখ ৭০ হাজার ৯২৬ টাকা গৃহকর আদায় করতে পেরেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।

সূত্র : দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ